১৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ২৮শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে

অন্তর্বর্তী সরকারের সাত মাস অতিবাহিত হয়েছে। এরই মধ্যে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। প্রতিদিন মিটিং, মিছিল, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ আরো কিছু রাজনৈতিক দল দ্রুত সাধারণ নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে।
আবার কয়েকটি দল আগে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করার দাবি জানাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে গত ১৭ মার্চ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেই দিয়েছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে খুব বেশি সময় নেই। আমরা এরই মধ্যে সাত মাস পার করে এসেছি। আমরা বলছি, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে।
কাজেই কী কী সংস্কার করতে চাই করে ফেলতে হবে।’
মানুষ দীর্ঘদিন গণতন্ত্রের প্রকৃত স্বাদ থেকে বঞ্চিত হয়েছে, বিশেষ করে আগের তিনটি নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা আছে। দিনের ভোট রাতে হয়েছে, একজনের ভোট আরেকজন দিয়েছে—এমন অনেক অভিযোগ ছিল। কাজেই দেশের মানুষ, বিশেষ করে গত ১৫ বছরে যারা নতুন ভোটার হয়েছে, তারা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের ব্যাপারে উন্মুখ হয়ে আছে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকেও সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, অবাধ ও অংশগ্রহণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের তাগাদা রয়েছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, নির্বাচন যত বিলম্বিত হবে, দেশের পরিস্থিতি তত জটিল হবে। রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়বে। সংঘাত, সংঘর্ষ বাড়বে। অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিরও সৃষ্টি হতে পারে।
কাজেই প্রধান উপদেষ্টা যথার্থই বলেছেন, আমাদের দ্রুত নির্বাচনের দিকে এগোতে হবে।
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনী প্রস্তুতি ও রাষ্ট্রের সংস্কারপ্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে চলেছে। অন্তর্বর্তী সরকার ‘সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজ’ বাস্তবায়নের দিকে যাবে, নাকি ‘বৃহৎ সংস্কার প্যাকেজ’ নিয়ে এগোবে, তা রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ওপরই নির্ভর করছে। তবে সরকারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা, শেষ পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজ বাস্তবায়ন করে দ্রুত নির্বাচনে যেতে পারে সরকার। কারণ রাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে যেসব প্রস্তাব রেখেছে, তাতে ইতিবাচক জবাবের সঙ্গে ভিন্নমতেরও প্রকাশ ঘটছে। সে ক্ষেত্রে সংস্কার প্যাকেজ সংক্ষিপ্ত হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। এদিকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) চলতি বছরের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন করার সময়সীমা অতিক্রম করতে চায় না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। গত ১০ মার্চ ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এই সময়সীমা যাতে পার না হয় সে জন্য ইসি প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে অক্টোবরে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে। নির্বাচনের প্রস্তুতি বিষয়ে জানতে উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতরাও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন।
দেশের মানুষ চায়, দ্রুত গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরে আসুক। আবার অস্থিতিশীলতাও কাম্য নয়। এই অবস্থায় অতি জরুরি সংস্কার সম্পন্ন করে দ্রুত নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়