১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

ক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প। এর মধ্যেও বেশির ভাগ কারখানায় শ্রমিকদের বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু কিছু কারখানা এখনো বেতন-ভাতা পরিশোধ না করায় শ্রমিক অসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে। সড়ক অবরোধ করা হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে তীব্র যানজট। ঈদে ঘরমুখো হাজার হাজার যাত্রীর ভোগান্তি চরমে উঠছে। বকেয়া বেতন-বোনাসের দাবিতে আন্দোলনকারী শ্রমিকদের সঙ্গে গত মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব ও সচিবালয়ের লিংক রোডের সামনে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ৪০ জন শ্রমিক এবং ১১ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। প্রতিবছরই ঈদের আগে আগে কমবেশি এ ধরনের দৃশ্য আমাদের দেখতে হয়। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, এবারও ১০ শতাংশ কারখানায় এ ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জানা যায়, শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ না করায় ১২টি কারখানার মালিকের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ২৭ মার্চের মধ্যে পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যাঁরা বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পারবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে শ্রম আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে তিন মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস না দিয়ে একটি কারখানার গেটে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার সকালে কারখানায় তালা দেখে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে। এতে ওই মহাসড়কে ব্যাপক যানজট তৈরি হয় এবং যাত্রীরা বিপাকে পড়ে। সাভারে ঈদের ছুটি বৃদ্ধি, বন্ধ কারখানা খুলে দিয়ে শ্রমিকদের ওভারটাইম পরিশোধ এবং দাবি আদায়ে আন্দোলনের ঘটনায় আটক ছয় শ্রমিকের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। মঙ্গলবার সকালে সাভারের হেমায়েতপুর-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় জিন্স ম্যানুফ্যাকচারিং কম্পানি লিমিটেড কারখানার দুই হাজার শ্রমিক। আরো অনেক স্থান থেকেই এ ধরনের অসন্তোষের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
অতীতে এমনও ঘটেছে, বেতন-বোনাস না পেয়ে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঈদের দিন সড়কের ওপর ঈদের নামাজ পড়ে সেখানেই অবস্থান করেছেন। এমন দুঃখজনক ঘটনা যেন আর না ঘটে সে জন্য স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেসব কারখানায় নির্ধারিত সময়ে বেতন-বোনাস পরিশোধ করা হবে না, সেসব কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতেই হবে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়