কয়রা সংবাদদাতা
খুলনার কয়রায় গ্রামীণ সড়ক উন্নয়নে হেরিং বন্ড (এইচবিবি) প্রকল্পের সড়ক নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিয়ম না মেনে নিম্নমানের ইট ও কাদামাটি যুক্ত বালু ব্যবহার করে ৮৪ লাখ টাকার কাজ দায়সারাভাবে শেষ করার পাঁয়তারা চলছে। এই ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়ক নির্মাণে বক্স কেটে ৬ ইঞ্চি সেন্ট ফিলিংয়ের পর কম্পেকশন করে তার ওপর দুই ধাপে ভালো মানের ইট বসানোর কথা। কিন্তু সেখানে বালু পরিবর্তে পাইপ দিয়ে কাদামাটি যুক্ত বালু দেওয়া হচ্ছে। তার ওপর বসানো প্রথম ধাপের ইট অত্যন্ত নিম্নমানের। ফলে সড়কটির স্থায়িত্ব নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন তারা। কাজের সাইটে সাইনবোর্ড দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি বলেও জানান স্থানীয়রা। উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তার (পিআইও) তথ্যমতে, দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে চলতি অর্থ বছরে ৮৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকা ব্যয়ে গ্রামীণ সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে উপজেলার বেদকাশি ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বতুল বাজার মজিবর ব্রিজ হতে পশুর তলা আদিবাসী পাড়া অভিমুখে ১ হাজার মিটার রাস্তার এইচবিবিকরণ কাজটি করছেন জয়নগর দাকোপের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীরাজ মীরা অ্যান্ড কোং। কাজটি শুরু হয়েছে চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি, চলতি বছরের ১০ এপ্রিল শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা শেষ হয়নি। কাজের বর্তমান অগ্রগতি ৫০ শতাংশ। স্থানীয় ইউপি সদস্য হাসানুজ্জামান বলেন, নিম্নমানের ইট ও বালি দিয়ে রাস্তা কাজ চলছে। পিওর বালির পরিবর্তে দেওয়া হচ্ছে কাদামাটি যুক্ত বালু। যে পরিমাণ বালি দেওয়ার কথা, তার থেকে অনেক কম দেওয়া হচ্ছে। এভাবে রাস্তা নির্মাণ করা হলে, তা বেশিদিন টিকবে না।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মাজেদ ও হরিদাষ মন্ডল বলেন, ইটের মান এতটাই খারাপ যে, শতকরা ২০ ভাগ ইটও ভালো না। কাদামাটি যুক্ত দিচ্ছে, তাও ঠিকমতো দিচ্ছে না। বারবার আপত্তি জানালেও কেউ কর্ণপাত করছে না। কর্মরত শ্রমিকরাও নিম্নমানের ইট ব্যবহারের কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, আমরা যা পাই, তাই দিয়ে কাজ করি। আমাদের করার কিছু নেই। এ বিষয়ে ঠিকাদার মিজানুর রহমান সানা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ইটের মান খারাপ না, কিছু লোক অহেতুক অভিযোগ করছে। কাজ সঠিক নিয়মেই হচ্ছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মামুনর রশিদ জানান, নিম্নমানের ইট ও বালু ব্যবহারের খবর পেয়ে আমি ঠিকাদারকে সতর্ক করেছি। তাকে ভালো মানের ইট ও বালু ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। বর্তমানে নিম্নমানের ইট ও বালু অপসারণ করে ভালো মানের বালু ও ইট দিয়ে কাজ চলমান আছে। তারপরও যদি অনিয়ম হয়, তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

