প্রতিদিনের ডেস্ক॥
ভারত সরকারের সর্বোচ্চ আমলাদের একজন ছিলেন জহর সরকার – দেশের সাবেক সংস্কৃতি সচিব, সাবেক পার্লামেন্টারিয়ানও বটে। নিজের শখ আর আগ্রহে বাঙালির বিভিন্ন খাবারের ইতিহাস নিয়ে চর্চা আর গবেষণাও করছেন দীর্ঘদিন ধরে। বাংলার বিরিয়ানিতে কীভাবে আলু এলো, তা নিয়ে তিনি আবার একটু ভিন্ন ধাঁচের বিবরণে বিশ্বাস করেন। তিনি বলছেন, দেখুন, আমরা সবাই জানি ভারতে আলু এনেছিল পর্তুগিজরা, সপ্তদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে। পশ্চিম ভারতের সুরাটে প্রথম আলু চাষ শুরু হয়, সেখান থেকে যায় গোয়ার দিকে, আর ওখানে কিন্তু আজও আলুকে তার মূল পর্তুগিজ নাম ‘বাটাটা’বলেই ডাকা হয়। বাংলায় আলু চাষ শুরু হতে অবশ্য তখনও অনেক দেরি। ১৭৯৩ সালে ব্রিটিশ পাদ্রী উইলিয়াম কেরি যখন ডেনিশ পাসপোর্ট নিয়ে ডেনমার্কের কলোনি শ্রীরামপুরে থাকতে শুরু করলেন, তিনি ওই এলাকার চাষীদের মধ্যে আলুর বীজ বিলি করে আলু চাষে উতসাহ দিয়েছিলেন বলে জানা যায়। পরে ১৮২০ সালে তিনিই কলকাতার আলিপুরে এগ্রি হর্টিকালচারাল সোসাইটি স্থাপন করলেন, যেখানে মূলত ইউরোপীয়ানদের জন্য এমন কিছু শাকসবজির চাষ শুরু হলো, যেগুলো তারা ভারতে পেতেন না। যেমন, পিজ বা মটর, এবং আলু। কলকাতার বুকে আলু চাষের সেই শুরু, যদিও বাংলার সাধারণ মানুষের পাতে তখনও আলু আসেনি। ওই একই সময় ব্রিটিশরা চীনে ব্যবসা করে মোটা মুনাফা লোটার আশায় বাংলায় ব্যাপকভাবে আফিম চাষ শুরু করল, যে কারণে ইতিহাসবিদ উইলিয়াম ড্যালরিম্পল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে ইতিহাসের প্রথম ‘ড্রাগ ওয়ারলর্ড’বা মাদক মাফিয়া বলে বর্ণনা করেছেন!