১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সড়কে ভাঙন, ভোগান্তিতে ৪০ গ্রামের মানুষ

সোহেল আহমেদ, কালীগঞ্জ
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বেগবতী নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত সড়ক এখন জনভোগান্তির নতুন কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে এই সড়কটিতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন আশপাশের ৪০ গ্রামের মানুষ। স্থানীয়রা বলছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের ধীরগতির কারণে সেতুর কাজ এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান হয়নি। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি, জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে। জানা যায়, কালীগঞ্জের ছালাভরা-কোলাবাজার জেসি সড়কের বেগবতী নদীর ওপর কোলাবাজার এলাকায় ৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে। সেতুটি নির্মাণে ঝিনাইদহের মেসার্স জাকাউল্লাহ, শামিম অ্যান্ড ব্রাদার্স, মেসার্স মিজানুর রহমান ট্রের্ডাস যৌথভাবে কাজ করছে। সেতুর নির্মাণ কাজ চলতি বছরের অক্টোবরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, বেগবতী নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর দুই পাশের দুটি পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। এর কয়েকশ গজ দূরে কাঠ দিয়ে বিকল্প সড়ক তৈরি করা হয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে বিকল্প সড়কে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ওই সড়কের ওপর পানি উঠে পড়েছে। তার মধ্য দিয়ে মোটরসাইকেলসহ কিছু ছোট ছোট যান ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পানির মধ্য দিয়ে হেঁটে স্কুলে যাচ্ছে। জানা গেছে, কোলাবাজার ঝিনাইদহ জেলার অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার। যেখানে অন্তত দেড় হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট রয়েছে। বাজারের এপার-ওপারে কলেজ, মাধ্যমিক, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদরাসাসহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।
এ ছাড়া ব্যাংক, বীমা, পুলিশ ফাঁড়িসহ বেশকয়েকটি সরকারি-বেসরকারি অফিস রয়েছে ওই বাজারে। ফলে প্রতিনিয়িত মানুষদের এ বাজারে আসতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল ও বাজারে যেতে হয়। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সেতুর বিকল্প সড়কটিতেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। এখন বাইসাইকেল পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যায় না। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে অনেক সময় পানির মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে এমনটা হয়েছে।’ ওমর ফারুক নামের এক কলেজ শিক্ষক বলেন, ‘একে তো সেতুর নির্মাণ কাজ ধীরগতিতে করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেই সঙ্গে নিম্নমানের কাঠ দিয়ে বিকল্প সড়ক তৈরি করেছিল। যার জন্য এমন ঘটনা ঘটেছে। এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী ফুরসন্ধি, ঘোড়শাল, নলডাঙ্গা, জামাল ও কোলা ইউনিয়নের ৪০ গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। তারা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে আনতে পারছেন না।’ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক আব্দুল খালেক বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণে অনেক সময় লেগেছে। ফলে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে। ইতিমধ্যে বিকল্প সড়কটি মেরামতের জন্য আমরা কাজ শুরু করেছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘আশা করছি শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে।’ এ ব্যাপারে জানতে এলজিইডি ঝিনাইদহের নির্বাহী প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেনের ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। এমনকি তার কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়