বন্ধ করে দেয়া হলো যশোর জনতা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার
প্রতিদিনের কথার রিপোর্টে টনক নড়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের
সুন্দর সাহা
প্রতিদিনের কথার রিপোর্টে টনক নড়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের। তদন্তে যশোর জনতা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের শতভাগ প্রমানিত হওয়ায় অবশেষে গতকালই বন্ধ করে নোটিশ সাটিয়ে দেয়া হলো বেসরকারী হসপিটাল এন্ড ক্লিনিকটি। গতকাল দৈনিক প্রতিদিনের কথায় সংবাদ প্রকাশের পর সরকারী অনুমোদিত লাইসেন্স না থাকায় এবং সর্বত্রই স্বাস্থ্যবিধি লংঘিত হওয়ায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে যশোরের জনতা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল দুপুরে বেসরকারী হসপিটাল এন্ড ক্লিনিক পরিদর্শন টিম সরেজমিনে হসপিটালটি পরিদর্শন করে এই নির্দেশনা প্রদান করে নোটিশ টাঙিয়ে দেন। গতকাল যশোরের সিভিল সার্জন ডাঃ মাসুদ রানা স্বাক্ষরিত সিএসজে/এস-১/২০২৫/২৩০৮ নং স্বারকে এই নির্দেশনা প্রকাশ করেন। পত্রে সিভিল সার্জন উল্লেখ করেছেন, সরকারী বিধি মোতাবেক জনতা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি বর্তমানে স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে অনুপোযুক্ত হওয়ায় হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশনা প্রদান করা হলো। এই আদেশ অমান্য করা হলে হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মে কর্তৃপক্ষকে হুশিয়ারি প্রদান করা হয়েছে।
প্রাপ্ত সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ২৭ জুলাই দৈনিক প্রতিদিনের কথায় যশোর জনতা হসপিটালের অনিয়ম, দূর্নীতি ও চরম অব্যবস্থাপনা বিষয়ে একটি সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত প্রতিবেদনটি স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয়ের উর্ধŸতন কর্মকর্তাবৃন্দসহ যশোরের জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের নজরে আসে। বিষয়টি তাৎক্ষনিক ভাবে গুরুত্ব দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মাসুদ রানাকে সরেজমিন পরিদর্শনের নির্দেশনা প্রদান করা হয়। সেই নির্দেশনার আলোকে বেসরকারী হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শন টিম গতকাল দুপুর ১টায় সরেজমিনে হসপিটালটি পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন টিম সরেজমিনে হসপিটালটি পরিদর্শনের সময় ব্যাপক অনিয়ম, দূর্নীতি ও চরম অব্যবস্থাপনা লক্ষ করেন। পরিদর্শন টিম তাদের পর্যবেক্ষনে একাধিক তথ্য উপস্থাপন করেন। যে গুলো হচ্ছে, ১। জনতা হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স হালনাগাদ নবায়ন নেই। সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে লাইসেন্সটি নবায়ন আছে, ২। প্যাথলজি, এক্স-রে, ইসিজি, আল্ট্রাসনো কক্ষ ধুলাবালি, জরাজীর্ণ, অপরিস্কার এবং পরিবেশ মানসম্মত নয়, ৩। মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট নেই এবং ডিপ্লোমা নার্স পর্যাপ্ত নেই, ৪। প্রতিষ্ঠঅনটির বর্জ ব্যবস্থাপন নেই, যত্রতত্র ময়লা, আসবাবপত্রে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, ৫। ওটির দেওয়ালে প্লাস্টার ড্যাম হয়ে খসে পড়ছে, ৬। হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রম সন্তোষনজক নয়- এমতাবস্থায় হাসপাতালের পরিবেশ অপরিস্কার, অপরিচচ্ছন্ন ও জরাজীর্ণ যাহা ভর্তি রোগীর চিকিৎসায় ঝুঁকিপূর্ণ বিধায় অদ্য ২৭/৭/২০২৫ ইং তারিখ থেকে প্রতিষ্ঠানটির সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হল। এর ব্যত্যয় ঘটলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক লাইসেন্স বাতিলের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।
