মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বাদল
রপ্তানি খাত দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। বিগত কয়েক দশকে তৈরি পোশাক শিল্পের ওপর নির্ভরশীলতা দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে। দেশ স্বাধীনের পর পাট শিল্পের ওপর নির্ভরশীল একটি দেশ আজ বিশ্বব্যাপী তৈরি পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় অবস্থানে। তবে, বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বৈদেশিক মুদ্রার অস্থিরতা, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা এবং পরিবেশবান্ধব উৎপাদনের চাহিদা আমাদের রপ্তানি খাতে সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে দেশের রপ্তানি খাতের প্রধান বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চশুল্ক হার। দেশটির সঙ্গে উচ্চশুল্ক হার নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বাণিজ্যিক দরকষাকষি করছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে ট্রাম্প প্রশাসনের ধার্য করা শুল্ক কমানোই এর মূল লক্ষ্য। বাংলাদেশের জন্য প্রথমে এ হার ছিল ৩৭ শতাংশ, সর্বশেষ ৩৫ শতাংশ করার কথা বলা হয়েছে। হার কমিয়ে আনার জন্য কয়েক দফা আলোচনা হলেও কার্যত এখনো কোনো চূড়ান্ত সমঝোতা হয়নি। আবারও দেন-দরবারের প্রস্তুতি চলছে।
শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কী কী শর্ত দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হয়নি। অবশ্য প্রকাশ না করার কারণও রয়েছে, এ বিষয়ে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের নন-ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট (প্রকাশ না করার চুক্তি) রয়েছে। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি করতে চাইছে, যেখানে তাদের নিরাপত্তা, কৌশলগত স্বার্থ, অন্য দেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আরও স্পষ্ট করে বললে, যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত হচ্ছে, দেশটি অন্য কোনো দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলে বাংলাদেশকেও তা অনুসরণ করতে হবে। তার মানে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় পড়া দেশের সঙ্গে বাংলাদেশকে ব্যবসা-বাণিজ্য কিংবা বিনিয়োগসংক্রান্ত কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার বিষয় যুক্ত থাকতে পারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, শুল্ক নিয়ে দরকষাকষির নামে হয়তো এমন সব বিষয় আলোচনা হচ্ছে, যেখানে জাতীয় নিরাপত্তা, ভূরাজনীতি, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির মতো স্পর্শকাতর বিষয় সম্পর্কিত।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সামরিক সরঞ্জাম, উড়োজাহাজ, এলএনজি, গম, সয়াবিনসহ বিভিন্ন কৃষি ও ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য আমদানি বৃদ্ধি ও সহজ করার শর্ত দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসছে। এসব ক্ষেত্রে অশুল্ক বাধা দূর করার শর্ত হিসেবে মার্কিন বিভিন্ন মানদণ্ড বাংলাদেশকে বিনা প্রশ্নে মেনে নেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে লক্ষ্য মার্কিন পণ্য অবাধে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে।
বলা যায়, এ চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অর্থনীতি, আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য ও প্রযুক্তি খাতের ওপর প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। একই সঙ্গে চাইছে অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক সীমিত করতে। আমরা মনে করি, এতে বাংলাদেশের সার্বভৌম সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতা, বাণিজ্যিক স্বাধীনতা ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে বড় ধরনের বাধা তৈরি হতে পারে। এক্ষেত্রে সবার আগে দেশের স্বার্থই মুখ্য হওয়া বাঞ্ছনীয়।
শঙ্কিত হওয়ার মতো বিষয়, সদ্য বিদায়ী ২০২৪–২৫ অর্থবছরের জুনে রপ্তানি কমেছে সাড়ে ৭ শতাংশ। এ কারণে সামগ্রিক পণ্য রপ্তানি প্রবৃদ্ধি এক অঙ্কের ঘরে আটকে গেছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) পণ্য রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত জুনে রপ্তানি হয়েছে ৩৩৪ কোটি ডলারের পণ্য। এই রপ্তানি গত বছরের জুনের তুলনায় সাড়ে ৭ শতাংশ কম। এ ধারা অব্যাহত থাকলে সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। তবে যত দূর জানা যায়, বাংলাদেশে বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস এবং রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক নীতিগত ও কাঠামোগত সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে সরকার। শুল্ক সংস্কার, রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশের রপ্তানি সক্ষমতা বাড়ানোর নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।
দুই.
রপ্তানি খাত বাংলাদেশের ব্যাংকখাতের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। ব্যাংকখাতে রপ্তানি একটি মৌলিক চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচিত, যা জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও আর্থিক স্থিতিশীলতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ব্যাংকগুলো রপ্তানি-সম্পর্কিত কার্যক্রমে প্রয়োজনীয় অর্থায়ন, বাণিজ্যিক সহায়তা এবং বৈদেশিক লেনদেন পরিচালনায় বিভিন্ন সেবা প্রদান করে, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ জোরদারেও সহায়ক ভূমিকা রাখে। আসলে রপ্তানি খাত শুধু ব্যাংকের লাভজনক কার্যক্রম নয়, জাতীয় অর্থনীতির গতিপ্রবাহে প্রাণসঞ্চারকারী উপাদানও। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, উচ্চ ব্যাংক সুদের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়েছে।
এটি মূলত, ঋণ গ্রহণের খরচ বৃদ্ধি করে, যা ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং নতুন বিনিয়োগে বাধা সৃষ্টি করে। যে কারণে বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম সংকুচিত করতে বাধ্য হচ্ছে। উচ্চ সুদের হার মানে ব্যবসাগুলো ঋণ নেওয়ার জন্য আরও বেশি অর্থ পরিশোধ করতে হবে, যা তাদের লভ্যাংশ কমিয়ে দেয়। ফলে ব্যাংক থেকে বেশি সুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়ে।
দাবি করা হয় বহু ব্যাংক এসএমইর ব্যবসা সহজ ও কম সুদে ঋণ দেওয়াকে অগ্রাধিকার দেয়। কিন্তু বাস্তবে বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে (এসএমই) ব্যাংক ঋণ পেতে বেশি সুদ দিতে হয়। এর সুদহার সাধারণত করপোরেট ঋণের তুলনায় দেড় থেকে আড়াই শতাংশ বেশি থাকে। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর পরিচালন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এসএমই’র ওপর উচ্চ সুদহার আরোপ করা হয়েছে। এমনিতেই ব্যবসায়ীরা ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ বেশি সুদ দিয়ে আসছিল।
নীতি সুদহার বাড়ানোর ফলে সেটা আরও বেড়েছে। এখন নতুন বিনিয়োগ তো দূরের কথা, টিকে থাকার সংগ্রামে লিপ্ত ব্যবসায়ীসমাজ। অনেক সময় দেখা যায়, মাঝপথে যখন ব্যাংকের সুদহার বেড়ে যায় তখন সব হিসাব ওলটপালট হয়ে যায়। কারণ কিস্তির পরিমাণ বেড়ে যায় এবং মুনাফার হার কমে আসে। এতে বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খরচ কমাতে বাধ্য হচ্ছে। উচ্চ সুদের হার এবং মূল্যস্ফীতি দুটোই ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এসব কারণে, ব্যবসা-বাণিজ্য এক ধরনের স্থবিরতার মধ্যে পড়েছে, যা অর্থনীতিকে দুর্বল করে দিতে পারে।
একথা স্বীকার করতেই হবে, ব্যাংক ঋণে সুদের হার বৃদ্ধি পেলে রপ্তানিকারকদের খরচ বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি রপ্তানি প্রতিযোগিতার ধারাবাহিকতা ও পরিমাণ হ্রাস পায়। এমনকি উচ্চ সুদের হার রপ্তানিমুখী শিল্পে বিনিয়োগ কমিয়ে দেয়। মূলধন ব্যয় বেড়ে গেলে ব্যবসা সম্প্রসারণ বাধাগ্রস্ত হবে এটাই তো স্বাভাবিক। উচ্চ সুদের হার বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করলে স্থানীয় মুদ্রার মূল্য বেড়ে যায় এবং রপ্তানি পণ্য আরও দামি হয়ে পড়ে। এই প্রভাব প্রশমিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ভর্তুকিযুক্ত রপ্তানি ঋণ, বিকল্প অর্থায়নের ব্যবস্থা সম্প্রসারণ এবং রপ্তানি প্রবৃদ্ধির জন্য একটি স্থিতিশীল সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করার মতো লক্ষ্যভিত্তিক হস্তক্ষেপ বিবেচনা করতে পারে।
আমরা মনে করি, দেশে রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ করতে হবে। ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, হারবাল পণ্য, কৃষি পণ্য, আইটি এবং পাটজাত পণ্যের মতো খাতে রপ্তানির সম্প্রসারণ ত্বরান্বিত করতে হবে। ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পে বিনিয়োগ-তৈরি পোশাক খাতের কাঁচামাল ও উপকরণ দেশেই উৎপাদনের মাধ্যমে আমদানিনির্ভরতা কমাতে হবে। এছাড়া বাজার সম্প্রসারণসহ আরও নানান পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
তিন.
এমনিতেই উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে কমছে সাধারণ মানুষের আয় ও কর্মসংস্থান। এর অন্যতম কারণ ব্যাংকঋণের সুদের হার বৃদ্ধি এবং উৎপাদন হ্রাস। উচ্চ সুদের হারের কারণে আমানতকারীরা কিছুটা লাভবান হলেও ব্যাংক ও ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন করে সংকট তৈরি হয়েছে। একদিকে উচ্চ সুদ দিতে চেয়েও আমানত পাচ্ছে না ব্যাংক, অন্যদিকে ঋণসংকটে পড়ছে বেসরকারি খাত। বেসরকারি খাতে ঋণ বিতরণে ধীরগতি এবং কর্মসংস্থান ঘাটতি দেশের অর্থনৈতিক সংকট বাড়াতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য ব্যাংকঋণের সুদের হার ক্রমাগতভাবে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু ব্যবসায়ীরা বলছেন, মূল্যস্ফীতি কমানোর একমাত্র উপাদান সুদহার বৃদ্ধি নয়; আরও অনেক উপায় রয়েছে। তথ্য-উপাত্ত বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংক মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে নীতি সুদহার বা রেপো রেট আরও ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করায় ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে ব্যাংকঋণের সুদ। এমন পরিস্থিতিতে ঋণের সুদহার বেড়ে যাওয়ায় বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। সুদহার অত্যধিক বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসা সম্প্রসারণ ও নতুন বিনিয়োগের পরিকল্পনা আপাতত তুলে রাখছেন অনেক উদ্যোক্তা।
দেশের কর্মে নিয়োজিত বা শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণকারী মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় বেকারের সংখ্যা বেড়েছে। গত বছরের শুরুতে দেশে বেকারের সংখ্যা কম থাকলেও বছর শেষে ধারাবাহিকভাবে এ সংখ্যা বেড়েছে। মূলত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের প্রভাবে বছরের শেষ সময়ে বেড়েছে বেকারের সংখ্যা। বর্তমানে দেশে মোট বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ৬০ হাজার। ২০২৩ সালের একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল ২৪ লাখ ৯০ হাজার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে দেশে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে এক লাখ ৭০ হাজার, যা রাষ্ট্রের জন্য বাড়তি চিন্তার বিষয়।
চার.
ব্যাংক ঋণ এবং রপ্তানিখাত উভয়ই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে একে অপরের পরিপূরক। ব্যাংকগুলো এই খাতে অর্থায়ন করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সরাসরি অবদান রাখে। ব্যাংক ঋণ রপ্তানি বাড়াতে এবং নতুন বাজার অনুসন্ধানে সাহায্য করে। ব্যাংকগুলো রপ্তানিকারকদের বিভিন্ন ধরনের ঋণ দিয়ে থাকে, যেমন- প্রি-শিপমেন্ট এবং পোস্ট-শিপমেন্ট। এই ঋণগুলো কাঁচামাল কেনা, উৎপাদন এবং পণ্য জাহাজীকরণে সহায়তা করে। তবে ব্যাংক ঋণের সুদের হার রপ্তানি খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রপ্তানি খাত দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। তারপরও ব্যাংকগুলো ঋণ দেওয়ার সময় কিছু ঝুঁকি বিবেচনা করে, যেমন – খেলাপি ঋণ, রাজনৈতিক অস্থিরতা ইত্যাদি। এই ঝুঁকিগুলো ব্যবস্থাপনার জন্য ব্যাংকগুলোকে সতর্ক থাকতে হয়।
আমরা মনে করি, বাংলাদেশ ব্যাংক রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য ভর্তুকিযুক্ত সুদের হার প্রণোদনা দিতে পারে, যা রপ্তানিকারকদের ঋণ খরচ কমিয়ে তাদের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান শক্ত করবে। যেমন-মার্কিন ডলারে ইডিএফ সুবিধা পূর্বের অবস্থায় নিয়ে যাওয়া। বিকল্প অর্থায়নের প্রচার- রপ্তানি ফ্যাক্টরিং, ফোরফাইটিংয়ের মতো বিকল্প অর্থায়ন ব্যবস্থা উৎসাহিত করতে হবে, যা ঐতিহ্যবাহী ব্যাংকঋণের ওপর নির্ভরতা কমাবে।
এছাড়া মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং পূর্বাভাসযোগ্য বিনিময় হার নিশ্চিত করে একটি স্থিতিশীল অর্থনৈতিক পরিবেশ বজায় রাখা জরুরি, যা রপ্তানিকারকদের পরিকল্পনা ও বিনিয়োগে সহায়ক হবে। সর্বোপরি রপ্তানি খাতে সুদের হার ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের প্রভাব নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে মুদ্রানীতিতে প্রয়োজনীয় সমন্বয় করা যেতে পারে। কারণ রপ্তানি বাড়লে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয়, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে। এছাড়া কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়, মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হয় এবং শিল্পের বিকাশ ঘটে। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে রপ্তানি খাত গুরুত্ব দিতে হবে।
লেখক : কলাম লেখক এবং শিল্প-উদ্যোক্তা।

