১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ২রা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

সরকারি খামারকে ‘মীর মুগ্ধ হল’ ঘোষণা করল খুবির শিক্ষার্থীরা

খুলনা প্রতিনিধি॥
খুলনার গল্লামারীতে সরকারি মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারের কার্যালয় দখল করে ‘শহীদ মীর মুগ্ধ হল’ ঘোষণা করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীরা। আজ রবিবার (১০ আগস্ট) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদি চত্বরে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে মৎস্য বীজ খামারের কার্যালয়ে যায়। সেখানে সমাবেশ শেষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১০ মিনিটের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে বের হয়ে যেতে বলে। পরে কর্মকর্তারা চলে গেলে শিক্ষার্থীরা মূল ভবনে ‘শহীদ মীর মুগ্ধ হল’ লেখা ব্যানার টাঙিয়ে দেয়। এ সময় তারা ‘দাবি নয়, অধিকার; মৎস্য ভবন দরকার’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেয়। শিক্ষার্থীরা বিকেল ২টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। খামারের কার্যালয় দখলের বিষয় স্বীকার করেছেন মৎস্য খামারের ব্যবস্থাপক মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, ‘‘৪০০ থেকে ৫০০ শিক্ষার্থী জোর করে আমার অফিসে ঢুকে ১০ মিনিটের মধ্যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বের হয়ে যেতে বলে। এ সময় আমরা বের হতে না চাইলে জোর করে বের করে দেয়ার হুমকি দেয়। এ কারণে আমরা বের হয়ে যায়। বিষয়টি আমি জেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি।’’ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানার ভেতরে অবস্থিত ১০ দশমিক ৩৫ একর আয়তনের সরকারি এ খামার আবাসন সঙ্কট নিরসন, গবেষণাগার সম্প্রসারণ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে বড় বাধা হয়ে আছে। বর্তমানে খুবির শিক্ষার্থী সংখ্যা ৭ হাজারের বেশি হলেও হল রয়েছে মাত্র পাঁচটি। মাত্র ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। জীববিজ্ঞানভিত্তিক ডিসিপ্লিনগুলোর মাঠ গবেষণার ক্ষেত্রেও জমির অভাব তীব্র সমস্যা তৈরি করছে। মৎস্য খামারের সূত্রে জানা গেছে, সেখানে মৎস্য খামারের আওতায় ১৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজসহ দুটি প্রকল্পে আরো ১০ জন কর্মরত রয়েছে। তারা বর্তমানে অফিসের বাইরে অবস্থান করছে। সেখানে চার তলা বিশিষ্ট অফিস ভবন দখল করে নেয়া হয়েছে। খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান জানান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয়ে সরকারি অফিস দখল করা হয়েছে। এ বিষয় মৌখিক এবং লিখিতভাবে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে অবহিত করা হয়েছে। আপাতত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসের বাইরে অবস্থান করছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা কথা বলতে রাজি হয়নি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিমকে ফোন করা হলে তিনিও রিসিভ করেননি। সরকারি এ খামারের জমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হস্তান্তর করার দাবিতে ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে শিক্ষার্থীরা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিবের কাছে স্মারকলিপি দেয় এবং মানববন্ধন, বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি পালন করে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে মৎস্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে জমি হস্তান্তরের অনুরোধ জানায়। চলতি বছরের মার্চ মাসে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার তাদের দাবিকে যৌক্তিক উল্লেখ করে সমাধানের আশ্বাস দিলেও বিষয়টি ঝুলে আছে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়