নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর শহরের চুড়িপট্টির নিজ বাড়ির চারতলার ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত যুবদল নেতা শেখ সাদিকুল ইসলামকে (৪০) বাঁচানো যায়নি। টানা ১০ দিন ঢাকা মেডিকেলে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শেষ পর্যন্ত আজ সোমবার (১১ আগস্ট) ভোর ৪টার দিকে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি দেন (ইন্না….রাজিউন)। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তার মরদেহবাহি এ্যাম্বুলেন্স কিছুক্ষণের মধ্যে যশোরের পৌঁছাবে। চৌরাস্তায় নামাজে জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করা হবে বলে একাধিক সূত্রে জানানো হয়েছে। তবে শোকাবহ এ মুহূর্তে তার স্বজনদের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে সাদেকুল ইসলামের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়েছে। কেন্দ্রীয় যুবদল শোক বিবৃতি দিয়েছে। নিহত শেখ সাদিকুল ইসলাম যশোর নগর যুবদলের ২নং ওয়ার্ডের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা এবং মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন, যশোর জেলা শাখা সভাপতি এম তমাল আহমেদ, সাধারন সম্পাদক আনসারুল হক রানাসহ নেতৃবুন্দ। জানা যায়, গত ৪ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে নিজ বাড়ির ৪তলা ছাদ পরিষ্কার করার সময় পায়ে বৈদ্যুতিক তারের স্পর্শ লেগে ভারসাম্য হারিয়ে নিচেই পড়ে যান যুবদল নেতা সাদিকুল ইসলাম। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডে কিছুক্ষণ নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা হয় কিন্তু ক্রমাগতভাবে তার অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। যেকারণে ওইদিনই তাকে ঢাকা মেডিকেলে রেফার করা হয়। তাকে ঢাকায় নেয়ার আগে হাসপাতালে ছুটে যান বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, যশোর নগর বিএনপির সভাপতি চৌধুরী মোঃ রফিকুল ইসলাম মুল্লুক চাঁন, আহতের আপন চাচাতো ভাই যশোর পৌর কাউন্সিলর অধ্যাপক মোঃ রাশেদ আব্বাস রাজসহ দলীয় নেতাকর্মী। অন্যান্যরা সাদেকুল ইসলামকে হাসপাতালে নিয়ে যান এবং সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। যশোর আড়াইশ বেড হাসপাতালের ডা. রাজীবুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, সাদিকুল ইসলামের কান দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। মাথার ভিতরে রক্তক্ষরণ হয়ে জমে যায়। এ ধরণের চিকিৎসা যশোরে হয় না। অপারেশনের মাধ্যমে তার মাথার ভেতর থেকে রক্ত বের করতে হবে। তাহলে দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবে। এজন্য তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে শেখ সাদিকুল ইসলামকে ঢাকায় নেয়া হয়। সেখানে টানা ১০ দিন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ছিলেন যুবদলের এই নিবেদিত প্রাণ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সবাইকে কাঁদিয়ে সাদিকুল ইসলাম চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

