প্রতিদিনের ডেস্ক:
টেলিনর গ্রুপের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হেড অব এআই, ইয়েভা মার্টিনকেনাইট ও গ্রামীণফোনের চিফ ইনফরমেশন অফিসার নিরঞ্জন শ্রীনিবাসন
গত ১৫ বছর ধরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে কাজ করছে টেলিনর গ্রুপ। এটি তাদের গ্রাহকসেবা উন্নত করতে, নেটওয়ার্ক পরিচালনা স্বয়ংক্রিয় করতে এবং কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করছে। গ্রামীণফোন, টেলিনরের একটি ব্যবসায়িক ইউনিট। তাদের প্রধান নির্বাহী (সিইও) ইয়াসির আজমানের নেতৃত্বে ‘এআই অ্যান্ড আই’ নামে একটি উদ্যোগ শুরু করেছে কোম্পানিটি। এর মূল লক্ষ্য হলো সকল কর্মীকে এআই ব্যবহারে দক্ষ করে তোলা এবং এর মাধ্যমে গ্রাহক ও সমাজের জন্য কার্যকর পণ্য ও সেবা চালু করা।
অন্যদিকে দায়িত্বশীল এআই ব্যবহারের উপর বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। যার অর্থ হলো এআই অ্যাপ্লিকেশনগুলো অবশ্যই স্বচ্ছ, যাচাইযোগ্য ও ন্যায্য হতে হবে। গ্রামীণফোন নেটওয়ার্ক পরিচালনা, বিদ্যুৎ সাশ্রয় এবং গ্রাহকদের পছন্দ অনুযায়ী পণ্য ও সেবা প্রদানে এআই’য়ের ব্যবহার শুরু করেছে। তারা বাংলাদেশে নিজস্ব ‘এআই ফ্যাক্টরি’ স্থাপন করেছে, যা ভবিষ্যতে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকেও এআই অবকাঠামো ব্যবহারের সুবিধা দেবে।
টেলিনর ও গ্রামীণফোন উভয়ই বিশ্বাস করে যে এআই কর্মসংস্থান কমাবে না। বরং কর্মীদের আরও দক্ষ ও উদ্ভাবনী করে তুলবে। এআই কর্মীদের পুনরাবৃত্তিমূলক কাজ থেকে মুক্তি দিয়ে তাদের মানবিক ও সৃজনশীল কাজে মনোনিবেশ করতে সহায়তা করবে। ‘ডিপফেক’ এর মতো সমস্যা মোকাবেলায় সরকার, গণমাধ্যম ও শিক্ষাবিদসহ বিভিন্ন পক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং জনসচেতনতা অত্যন্ত জরুরি বলে তারা মনে করে।
এসব বিষয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন টেলিনর গ্রুপের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হেড অব এআই, ইয়েভা মার্টিনকেনাইট ও গ্রামীণফোনের চিফ ইনফরমেশন অফিসার নিরঞ্জন শ্রীনিবাসন।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) এই যুগে টেলিনর গ্রুপ ও গ্রামীণফোন তার প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের কিভাবে প্রস্তুত করছে?
ইয়েভা মার্টিনকেনাইট: টেলিনর গ্রুপ-এর পক্ষ থেকে বলতে গেলে, আমরা ১৫ বছর আগে এআই’য়ের যাত্রা শুরু করেছি। আমাদের তখন আলাদা রিসার্চ টিম ছিল। যার মধ্যে পিএইচডি করা মেশিন লার্নিং ইঞ্জিনিয়ার এবং ডেটা সায়েন্টিস্টরা ছিলেন। সেই সময় আমাদের লক্ষ্য ছিল এআই প্রযুক্তির প্রভাব সম্পর্কে পুরো টেলিনর গ্রুপ-কে সচেতন করা। সেই থেকে, আমরা গ্রামীণফোন-এর মতো টেলিনর-এর বিজনেস ইউনিটগুলোকে টপ ম্যানেজমেন্টের তত্ত্বাবধানে এআই প্রোগ্রাম চালু করতে সাহায্য করেছি। গ্রামীণফোন এখন সিইও-এর তত্ত্বাবধানে এবং পুরো টপ ম্যানেজমেন্ট টিমকে নিয়ে ‘এআই অ্যান্ড আই’ প্রোগ্রাম গ্রহণ করায় আমরা খুবই আনন্দিত।
বর্তমানে নরওয়ে বা নর্ডিক্সে ও টেলিনর-এ আমাদের এআই যাত্রাকে ত্বরান্বিত করার এবং ব্যবহারিক ক্ষেত্রে দ্রুত প্রয়োগ করার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। আমরা তিনটি প্রধান ক্ষেত্রে ফোকাস করছি:
১. গ্রাহকদের আরও মানসম্মত সেবা দেওয়া: কন্টাক্ট সেন্টার অটোমেশন এবং পার্সোনালাইজেশন প্রক্রিয়া ব্যবহার করে গ্রাহকদের আরও ভাল সেবা দেয়া। এটি গ্রাহক সন্তুষ্টি এবং নতুন গ্রাহক তৈরির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২. নেটওয়ার্ক: আমাদের কার্যক্রমগুলো স্বয়ংক্রিয় করতে এবং জ্বালানি ব্যবস্থাপনাকে অগ্রাধিকার দিতে আমরা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করছি। স্থায়িত্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এছাড়া নেটওয়ার্কের ত্রুটির আশঙ্কা সনাক্তকরণ এবং সাইবার আক্রমণ প্রতিরোধে এআই ব্যবহার করা হচ্ছে। আমাদের নেটওয়ার্কে এআই ব্যবহার করে সাইবার আক্রমণও বাড়ছে। তাই টেলিনরের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফোকাস এরিয়া।
৩. কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি: গ্রাহক ও নেটওয়ার্কের জন্য এআই’য়ের সুবিধা নিশ্চিত করতে আমাদের দক্ষ কর্মী প্রয়োজন। তাই আমরা প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাড়াচ্ছি। টেলিনর-এ আমাদের একটি এআই ফ্লুয়েন্সি প্রোগ্রাম আছে। আমরা এখন কর্মীদের জন্য চ্যাটজিপিটি, কো-পাইলট এবং অন্যান্য টুল সহজলভ্য করছি।
নিরঞ্জন শ্রীনিবাসন: টেলিনর গ্রুপের এই উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় গ্রামীণফোন-এ আমাদের সিইও ইয়াসির আজমানের নেতৃত্বে শুরু হয়েছে এআই অ্যান্ড আই প্রোগ্রাম । এর মূল উদ্দেশ্য হলো আমাদের সকল কর্মীকে এআই ব্যবহারে সঠিকভাবে দক্ষ ও সক্ষম করে তোলা। তাদের কৌতূহল ও দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে তারা গ্রামীণফোন-এর গ্রাহকদের এবং বৃহত্তর সমাজের জন্য কার্যকর ব্যবহারিক ক্ষেত্র তৈরি করতে পারবেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যে কর্মীদের সঠিক দক্ষতা এবং আপস্কিলিং সম্পন্ন হবে। আমরা সকল কর্মীদের জন্য একটি অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামও চালু করেছি, যা নিয়ে কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
দায়িত্বশীল এআই বলতে কী বোঝায়? এই বিষয়ে বাংলাদেশের কোনো উদাহরণ বা সফল কেস আছে কী?
নিরঞ্জন শ্রীনিবাসন: হ্যাঁ, দায়িত্বশীল এআই-কে সংজ্ঞায়িত করতে হলে বলতে হয়, এআই-এর মাধ্যমে আমরা যা কিছু করি তা স্বচ্ছ, যাচাইযোগ্য ও ন্যায্য হতে হবে। এটিই মূল বিষয়। এআই-এর ক্ষেত্রে একটি নতুন শব্দ আছে যাকে ‘হ্যালুসিনেশন’ বলা হয়। যদি ব্যাকএন্ড এলএলএম (লার্জ লেঙ্গুয়েজ মডেলস)-কে নিয়ন্ত্রণ করা না হয়, তাহলে এলএলএম থেকে যে হ্যালুসিনেশন প্রভাব আসে, তা সমাজের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। সম্প্রতি প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এআই ব্যবহার করে মানুষ এমন সব ছবি তৈরি করেছিল যা বাস্তবতার থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। তাই এটি অবশ্যই যাচাইযোগ্য, ন্যায্য ও স্বচ্ছ হতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, এটির বেপরোয়া ব্যবহার হওয়া উচিত নয়।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এবং বিশেষ করে গ্রামীণফোন ও এর গ্রাহকদের ক্ষেত্রে, আমরা গ্রাহক সেবা, পার্সোনালাইজেশন এবং নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনার উপর গুরুত্ব দিচ্ছি। এআই-এর সুপারিশ বা আউটপুটগুলো যেন যুক্তিযুক্ত হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। যাতে গ্রাহক এবং বৃহত্তর সমাজ সঠিকভাবে উপকৃত হয়। এজন্য একটি সঠিক কাঠামো তৈরি করতে গ্লোবাল পার্টনারশিপ ও জিএসএমএ -এর সাথে সরাসরি কাজ করছে গ্রামীণফোন। যাতে এআই ব্যহার করে আমরা যা করি তার দায় নিতে এবং তা যুক্তিসঙ্গত হিসেবে প্রমাণ করতে পারি। আমরা এই বিষয়ে তাড়াহুড়ো করতে চাই না। অন্য অপারেটর বা সংস্থা হয়তো এআই নিয়ে আগে বা বেশি জোড়ালোভাবে কথা বলতে শুরু করেছে। কিন্তু আমরা মৌলিক বিষয়গুলো শিখতে সময় নিয়েছি এবং নিশ্চিত করতে চেয়েছি যেন আমরা মৌলিক স্তরে ব্যর্থ না হই। এটাই দায়িত্বশীলতা।
আপনারা কি গ্রামীণফোন-এ এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছেন? যেমন- কোনো ব্যবহারিক প্রকল্প?
নিরঞ্জন শ্রীনিবাসন: এক্ষেত্রে আমরা দুটি বিষয়ের কথা বলতে পারি। প্রথমত, আমরা নেটওয়ার্ক ও আইটি অপারেশনে এআই ব্যাপকভাবে ব্যবহার করি। বিশেষ করে জ্বালানিকে অত্যন্ত কার্যকর ও দায়িত্বশীল উপায়ে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে। কারণ গ্রামীণফোন দেশের বিদ্যুতের অন্যতম বৃহত্তম ভোক্তা, যেহেতু আমরা বৃহত্তম নেটওয়ার্ক পরিচালনা করি। তাই গ্রামীণফোন-এর ইএসজি (পরিবেশগত, সামাজিক ও সুশাসন সম্পর্কিত) উদ্যোগগুলোয় ব্যাপকভাবে এআই মডেল ব্যবহার করা হয়।
দ্বিতীয়ত, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সম্প্রতি আমরা গ্রাহকদের পণ্য দেখানোর ক্ষেত্রে হাইপার-পার্সোনালাইজেশনের উদ্যোগটি অত্যন্ত দায়িত্বশীল উপায়ে শুরু করেছি। এর ফলাফল আপনারা দেশের সবচেয়ে বেশি ডাউনলোড করা অ্যাপ মাইজিপি-তে দেখতে পাবেন। মাইজিপি-তে আপনারা যে পণ্যগুলো দেখেন, সেগুলো আমাদের পরিচালিত এআই মডেলের উপর ভিত্তি করে তৈরি। এই দুটি হলো আমাদের প্রথম কার্যকর ক্ষেত্র।
জ্বালানি সাশ্রয়ে এআই-এর প্রভাব বা পরিমাপযোগ্য কোনো কেস স্টাডি আছে কী? আপনারা কত শতাংশ সাশ্রয় করছেন?
নিরঞ্জন শ্রীনিবাসন: যৌক্তিক কিছু কারণে সুনির্দিষ্ট সংখ্যা বলাটা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ এটি একটি চলমান উদ্যোগ। এতে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ ও মালিকানাধীন প্রযুক্তি সম্মিলতিভাব কাজ করছে । তবে গত বছর আমরা বেশ ভাল সাফল্য পেয়েছি। আমাদের নেটওয়ার্ক আরও বেশি ডেটা-কেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে এবং গ্রাহকরা আরও বেশি ডেটা ব্যবহার করছেন। পাশাপাশি বাড়ছে বিদ্যুৎ খরচ। এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
অন্যান্য অপারেটর বা টেলকোও জ্বালানি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এআই ব্যবহার করছে। তবে আমরা যে ক্ষেত্রে অনন্য তা হলো, জ্বালানি ব্যবস্থাপনায় গ্রাহক সেবার সাথে কোন আপোস করিনা। যখন ডেটার প্রয়োজন বা ডেটার ব্যবহার বাড়ে, বিদ্যুৎ খরচও বাড়ে। আমরা বিদ্যুৎ বিল বাঁচানোর জন্য গ্রাহক সেবা বিঘ্নিত করার পক্ষপাতী না। এটি এআই ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভারসাম্য এবং এক্ষত্রে আমরা সচেতন।
আপনারা ‘এআই ফ্যাক্টরি’ নামে একটি নতুন শব্দ ব্যবহার করেছেন। এই এআই ফ্যাক্টরি সম্পর্কে একটু ব্যাখ্যা করবেন কি?
ইয়েভা মার্টিনকেনাইট: আমরা গত বছর নরওয়েতে এআই ফ্যাক্টরি চালু করেছি। এটি দুটি নরওয়েজিয়ান পার্টনারের সাথে আমাদের একটি যৌথ উদ্যোগ। বাজারে আমাদের মূল পণ্য হলো নিজস্ব এবং টেকসই ক্লাউড ও ডেটা সেন্টার। এর অর্থ হলো, আমরা দেখছি যে আমাদের গ্রাহক এবং পার্টনাররা নিজস্ব ক্লাউড চাইছে। তাদের কিছু অত্যন্ত সংবেদনশীল ডেটা আছে যা তারা সুরক্ষিত রাখতে চায় এবং তারা চায় যে সেই ডেটা তাদের নিজস্ব স্থানে সংরক্ষিত থাকুক।
তারা টেলিনর-এর সাথে যোগাযোগ করেছে। কারণ আমরা একটি বিশ্বস্ত টেলিকম সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। আমাদের ১৫০ বছরের বেশি অভিজ্ঞতা আছে এবং আমরা একটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি। তাই তারা আমাদের ওপর আস্থা রাখেন। আমরা এমন একটি ডেটা সেন্টার তৈরি করছি যা সম্পূর্ণ নবায়নযোগ্য হাইড্রোডাওয়ার দিয়ে চলবে। আমরা মনে করি, টেলকোদের জন্য নিরাপদ, সুরক্ষিত, টেকসই ও নিজস্ব এআই অবকাঠামো সরবরাহের ক্ষেত্রে এটি একটি সুযোগ। আমাদের নিজেদের প্রয়োজনেও এটি ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। কারণ আমরা আমাদের নেটওয়ার্ক নিরাপদে ও সুরক্ষিতভাবে পরিচালনা করতে চাই। এছাড়া আমরা সেই গ্রাহকদের কাছে এটি অফার করতে চাই যারা নিজস্ব ডেটা নিজেদের স্থানে এবং টেকসই ও সুরক্ষিতভাবে রাখতে চান।
নিরঞ্জন শ্রীনিবাসন: টেলিনর নরওয়ে ও নর্ডিক্স যা করছে, তার সাথে যোগ করে বলতে চাই, গ্রামীণফোন বাংলাদেশে নিজস্ব এআই ফ্যাক্টরি তৈরি করা প্রথম বা অন্যতম প্রথম সংস্থা। এনভিডিয়া ও সিসকো’র সাথে পার্টনারশিপের ভিত্তিতে বাংলাদেশে এই নিজস্ব এআই ফ্যাক্টরি তৈরি করেছে গ্রামীণফোন। যার নাম জিপিইউ। এর মৌলিক নীতি হলো বাংলাদেশ সরকারের সার্বভৌমত্ব এবং ডেটা গোপনীয়তার নিয়মাবলী মেনে চলা। এছাড়া ভবিষ্যতে বাংলাদেশের মধ্যে যেকোনো উদ্যোগে জিপিইউ’র সহায়তা প্রদান করা হবে। কারণ জিপিইউ খুবই ব্যয়বহুল। আমরা এটিকে আরও সবার জন্য চালু করতে চাই, বৃহত্তর সমাজ এবং বৃহত্তর উদ্যোগে কাজে রাগাতে চাই। যাতে বাংলাদেশের এআই যাত্রা আমাদের নিজস্ব উদ্যোতেই বেগবান হয়। এই এআই ফ্যাক্টরি প্রায় তিন সপ্তাহ আগে চালু হয়েছে। আমরা মাত্র এতে কাজ শুরু করেছি। এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এটি এখন শুধু আমাদের অভ্যন্তরীণ এআই ব্যবহারের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা ধীরে ধীরে এটি উন্মুক্ত করব।
এআই মানুষের কর্মসংস্থান কমিয়ে দেবে নাকি বাড়িয়ে দেবে? গ্রামীণফোন-এ এআই কীভাবে কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করবে?
নিরঞ্জন শ্রীনিবাসন: আপনার প্রশ্নটির মধ্যেই উত্তর নিহিত রয়েছে। আপনি ‘দক্ষতা’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। এআই-কে মানুষ বা কর্মীদের বিকল্প হিসেবে দেখা উচিত নয়। এটি তাদের আরও দক্ষ করে তোলার জন্য। এটাই টেলিনর ও গ্রামীণফোন-এর এআই প্রোগ্রামের মূল নীতি। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা একটি সেবা খাতে কাজ করছি। আমরা মানুষের সেবা করছি, এখানে আমরা ১০০% স্বয়ংক্রিয় বা এজেন্ট-ভিত্তিক পদ্ধতিতে চলতে পারি না। গ্রাহকদের সাথে সংযোগ স্থাপনে এবং সমাজে সেবা প্রদানে মানবিক আবেগ ও শারীরিক উপস্থিতির প্রয়োজন হয়।
আমরা এআই-কে এমনভাবে দেখছি, যাতে এটি আমাদের কর্মীদের আরও দক্ষ করে তোলে। তাদের আট ঘণ্টার কর্মদিবসের মধ্যে আরও বেশি সময় এনে দেয়। এর ফলে তারা রুটিন কাজ বন্ধ করে আরও কার্যকর উপায়ে কাজ করতে পারবে এবং গ্রাহকদের জন্য নতুন পরিষেবা ও অফার চালু করতে পারবে। যাতে তারা গ্রামীণফোন ব্যবহার করে আরও বেশি সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারেন। এটি হেডকাউন্ট কমানো বা মানুষকে চাকরিচ্যুত করার বিষয় নয়। বরং তাদের আরও স্মার্ট, আরও দক্ষ করে তোলা এবং গ্রাহক সেবায় আরও ভালো কিছু করার জন্য এট ব্যবহার করা হবে।
ইয়েভা মার্টিনকেনাইট: এআই-এর ছয়টি নীতির মধ্যে একটি হচ্ছে মানুষ-কেন্দ্রিকতা। এক্ষেত্রে সহানুভূতি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। আমাদের কর্মীরা গ্রাহকদের জটিল সমস্যা সমাধানে সময় দিতে পারবেন। গ্রাহকরা আরো মানসম্মত এবং নতুন নতুন সেবা পাবেন। আমরা আনন্দিত যে, টেলিনর গ্রুপ এটিকে স্বীকৃতি দিচ্ছে। প্রযুক্তি আমাদের কর্মীদের রুটিন কাজ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করছে। আমরা চাই তাদের আরো ক্ষমতায়ন হোক, তারা কৌতূহল ও সহানুভূতির পূর্ণ ব্যবহার করতে পারুক।
নিরঞ্জন শ্রীনিবাসন: বরং আপনার এই দৃষ্টিভঙ্গির বিপরীত চিত্র আছে। কিছু সংস্থা এআই-এর জন্য নির্দিষ্ট প্রয়োজনে লোক নিয়োগ করা শুরু করেছে। উদাহরণস্বরূপ- বোস্টন কনসালটিং গ্রুপ শুধু এআই-এর উপর ফোকাস করার জন্য ৪ থেকে ৫ হাজার লোক নিয়োগ করছে। তাই এটি এমন নয় যে এআই-এর কারণে মানুষ চাকরি হারাচ্ছে বা কর্মী কমে যাচ্ছে। এআই আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে। এমনকি সমস্ত কো-পাইলট এবং চ্যাটজিপিটি-তে এখন একটি নতুন অপশন আছে। যার নাম ‘হিউম্যানেনাইজ দি আউটকাম’ কাজটিকে মানবিক করে তুলুন। তাই আমাদের মানুষ প্রয়োজন। মানুষের সম্পূর্ণ বাদ পড়ার এবং নেটওয়ার্ক নিজে চলার কোনো উপায় নেই। যখন কম্পিউটার প্রথম চালু হয়েছিল, তখন সবাই বলেছিল যে মানুষ চাকরি হারাবে, সবকিছু কম্পিউটার দ্বারা করা হবে। কিন্তু কম্পিউটার বিশ্বব্যাপী ব্যাপক কর্মসংস্থান তৈরি করেছে। এআই-ও একই কাজ করবে।
এআই কি উদ্ভাবনকে সীমাবদ্ধ করছে?
ইয়েভা মার্টিনকেনাইট: আমি মনে করি, এআই প্রকৃতপক্ষে উদ্ভাবনের সুযোগকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এটি আমাদের আরও উদ্ভাবনী হতে সাহায্য করছে। যখন এআই কর্মীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়, তখন প্রতিটি কর্মী সেরা টুল ব্যবহার করে উদ্ভাবনে সক্ষম হয়ে উঠে। এটি প্রচুর সৃজনশীলতারে সুযোগ তৈরি করে। আমি একটি উদাহরণ দিতে পারি: নর্ডিক্সে এবং এখন বিশ্বে দ্রুততম বর্ধনশীল স্টার্টআপ কোম্পানি হলো লাভেবল (Lovable)। এটি এমন একটি অ্যাপ যা প্রযুক্তিগত জ্ঞান ছাড়াই অ্যাপ তৈরি করতে সাহায্য করে। আমার ছেলে, যে এখনও ছাত্র, সে বলেছিল, ‘আমি ৩ ঘণ্টার মধ্যে তিনটি অ্যাপ তৈরি করেছি’। এটি ‘ওয়াইপ কোডিং’ ব্যবহার করে তৈরি, যা জেনারেটিভ এআই দ্বারা চালিত এবং গ্রামের বা শহরের যেকোনো ব্যক্তিকে প্রযুক্তিগত জ্ঞান ছাড়াই যেকোনো অ্যাপ তৈরি করতে সক্ষম করে তোলে। এটিই মূল কথা: এআই মানুষের হাতে ক্ষমতা দিচ্ছে, এটি কেবল কোডিং-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
নিরঞ্জন শ্রীনিবাসন: আমি এর সাথে স্থানীয় একটি উদাহরণ যোগ করব। গত বছর যখন আমরা ‘এআই ফার্স্ট’ প্রোগ্রাম চালাচ্ছিলাম, তখন আমরা পুরো কোম্পানিকে বলেছিলাম যে, এআই নিয়ে যার যা আইডিয়া আছে, দয়া করে আমাদের জানান। আপনি বিশ্বাস করবেন না, আমরা এআই ব্যবহার করে তৈরি করা যেতে পারে এমন আইডিয়া এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে তিন অঙ্কের একটি সংখ্যা পেয়েছি। সুতরাং এআই উদ্ভাবনকে সীমাবদ্ধ করছে না বরং এটি উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করছে। যদি আমরা সেই সকল ক্ষেত্রগুলোতে তা কাজে লাগাই। তাহলে আমরা গর্বের সাথে বলতে পারব যে গ্রামীণফোন-এর এআই ব্যবহারের ক্ষেত্রগুলো বিস্তৃত। এটি শুধু প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি সকলের জন্য উন্মুক্ত।
আমাদের দেশে নির্বাচন আসছে। আগের নির্বাচনে ডিপফেক ভিডিও দেখা গেছে নির্বাচনী প্রচারণায়। সরকার কীভাবে ডিপফেক ভিডিওর অপব্যবহার থেকে রক্ষা করতে পারে?
ইয়েভা মার্টিনকেনাইট: আমরা টেলিনর গ্রুপ এআই থেকে যে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা পেয়েছি তা হলো, ডিপফেক একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এটি কেবল বাংলাদেশের সমস্যা নয়, এটি সারা বিশ্বের সমস্যা। সরকারগুলোর জন্য একটি পরামর্শ হলো, সকল পক্ষকে টেবিলে নিয়ে আসা এবং কীভাবে এ সমস্যা মোকাবেলা করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করা। দক্ষতা বৃদ্ধি করা এবং স্বচ্ছ থাকা। গণমাধ্যম হিসেবে আপনাদের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে, কারণ শেষ পর্যন্ত এটি গণমাধ্যমের মাধ্যমেই ছড়িয়ে পড়ে। সুতরাং স্বচ্ছ হওয়া এবং শিল্প, বেসরকারি সংস্থা, শিক্ষাবিদ ও সরকারকে একই টেবিলে নিয়ে আলোচনা করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এটি একটি চলমান সমস্যা এবং সকল সরকারের জন্যই; বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়। নিশ্চিত করা উচিত যে গণমাধ্যম সংস্থাগুলোতে এটি মোকাবেলার জন্য সঠিক সরঞ্জাম রয়েছে। বহুপক্ষীয় ডায়ালগ পরিচালনা করুন, স্বচ্ছ হোন। গণমাধ্যম সংস্থাগুলোকেও এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন করুন এবং দায়িত্বশীল এআই কাঠামো তৈরি করুন। সরকারগুলোকেও তাদের কার্যক্রম এবং গণমাধ্যম সংস্থাগুলোতে এই কাঠামো স্থাপন করতে হবে। ফিনল্যান্ড সরকারের একটি উদাহরণ হলো, তারা শিক্ষামূলক কর্মসূচিতে বিনিয়োগ করছে, কৌতূহল ও সৃজনশীলতার উপর জোর দিচ্ছে এবং শিশুদের তথ্যের উৎস চিনতে শেখাচ্ছে। এক্ষেত্রে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং স্কুল পর্যায় থেকে শিক্ষা প্রদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নিরঞ্জন শ্রীনিবাসন: আমি আপনার বক্তব্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ যোগ করতে চাই: সচেতনতা। বৃহত্তর সমাজের মানুষের সচেতন হতে হবে যে, এআই আরও সাধারণ হচ্ছে এবং এর সম্ভাব্য খারাপ দিকও রয়েছে; যেমন প্রতিটি মুদ্রার দুটি দিক থাকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বা যেকোনো মিডিয়া চ্যানেলে তারা যা দেখছে সে সম্পর্কে মানুষের সচেতন এবং সতর্ক থাকা প্রয়োজন। আমরা মিডিয়াকেও পাশে চাই, কারণ একটি নতুন প্রজন্মকে, বয়স নির্বিশেষে, ‘এআই সিটিজেন’ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। একটি সংস্কৃতি গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ। মিডিয়া সচেতনতা বাড়াতে এবং কৌতূহল তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নরওয়ের মিডিয়া হাউসগুলোতে স্বাধীন নৈতিক বোর্ড রয়েছে, যা তাদের কর্ম প্রক্রিয়া ও আউটলেটগুলোর নিরপেক্ষ পর্যালোচনায় সহায়ক। এছাড়া শিক্ষাবিদরাও এই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মানুষকে জবাবদিহি করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
টেলিনর গ্রুপ এবং গ্রামীণফোন এআই-এ কী ধরনের বিনিয়োগ করছে?
ইয়েভা মার্টিনকেনাইট: বিনিয়োগ সব ক্ষেত্রেই হচ্ছে। কম্পিউটিং সক্ষমতা, প্রতিভা ও দক্ষতা উন্নয়নে এবং এআই মডেলে বিনিয়োগ হচ্ছে। এটি এটি দীর্ঘ যাত্রা যার শুরু হয়েছে।
নিরঞ্জন শ্রীনিবাসন: এই মুহূর্তে আমরা কী ধরনের বিনিয়োগ করছি এবং কী ধরনের সাশ্রয় করেছি তা পরিমাপ করা কিছুটা কঠিন। দুটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ আছে। প্রথমত, ইয়েভা যেমন উল্লেখ করেছেন, জেনে হোক বা না জেনে হোক, আমরা গত ১৫ বছর ধরে এই যাত্রায় আছি, যা আমাদের একটি বড় শক্তি। দ্বিতীয়ত, এআই বা এআই-এর ক্ষেত্রে দ্রুত উন্নয়ন ঘটছে। তাই আমাদের অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়।
প্রথম যে বিনিয়োগের কথা আমরা অবশ্যই বলতে চাই, তা হলো আমাদের কর্মীদের উপর বিনিয়োগ, যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশের বাজার বিবেচনা করে, এআই-চালিত ব্যবসা এবং সেবার জন্য আপনারা কতটুকু সুযোগ দেখছেন?
নিরঞ্জন শ্রীনিবাসন: এক্ষত্রে অন্যান্য দেশ এবং টেলকোর সাথে খুব বেশি ভিন্নতা নেই। কারণ আমরা তিনটি প্রধান ক্ষেত্র নিয়ে কথা বলেছি:
• কন্টাক্ট সেন্টার বা গ্রাহক সেবা।
• গ্রাহকের চাহিদা ও পছন্দ অনুযায়ী অফার প্রদান।
• নেটওয়ার্ক পরিচালনা।
বর্তমানে, আমরা কীভাবে আমাদের নেটওয়ার্ক ডিজাইন করি এবং ভবিষ্যতের ব্যবহারের জন্য নেটওয়ার্ককে কীভাবে প্রস্তুত করি, তার জন্য ব্যাপকভাবে এআই’য়ের সহায়তা নেয়া হচ্ছে। এছাড়া গ্রাহকদের সেবা প্রদান এবং তাদের পছন্দ অনুযায়ী পণ্য ও সেবা অফার করতে পারছি আমরা।
আপনাদের কি আর কিছু যোগ করার আছে?
নিরঞ্জন শ্রীনিবাসন: গ্রামীণফোনে এআই এখন কোম্পানির পরবর্তী ২৭-২৮ বছরের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ বা মৌলিক ভিত্তি। গত ২৭ বছর ধরে আমরা মানুষকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সাথে সংযুক্ত করার উপর ফোকাস করেছি। একই নীতি ধরে রেখে, আমি মনে করি, দেশের মানুষের জন্য, আমাদের ৮৬ মিলিয়ন গ্রাহকের জন্য এখন যা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হলো কোনো না কোনো এআই-এর সাথে সংযুক্ত করা, যাতে তাদের জীবন আরও উন্নত হয় এবং একটি স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে যাত্রা ত্বরান্বিত হয়।
এই প্রেক্ষাপটে আমরা খুব পদ্ধতিগত ও কাঠামোগত উপায়ে এগোচ্ছি। প্রথমে আমরা আমাদের কর্মীদের সঠিক দক্ষতা এবং সঠিক সরঞ্জাম দিয়ে সক্ষম করতে চাই। তারপর তাদের আরও দক্ষ ও উদ্ভাবনী করে তুলতে চাই, যাতে আমাদের গ্রাহকদের আরও ভালোভাবে সেবা দেওয়া যায়। এই পুরো যাত্রায় আমরা ডেটার গোপনীয়তা, নিরাপত্তা ও এআই-এর দায়িত্বশীল ব্যবহার নিয়ে কোন আপোস করব না। আমরা নিশ্চিত করতে চাই মানুষ যেন নিরাপদে সর্বোচ্চ সুবিধাটা পায়, যাতে তাদের জীবন আরও সহজ হয়।
আরেকটি ব্যাপার- বিশ্বের অনলাইন সফটওয়্যার মার্কেটে প্রতিভার দিক দিয়ে দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। একটি দেশ যেখানে ৬৫% জনসংখ্যা ৩৫ বছরের কম বয়সী, তারা এআই-এর শক্তি ব্যবহার করে নিজেদের জীবনকে উন্নত করতে এবং এর মাধ্যমে একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সঠিক পথেই রয়েছে। গ্রামীণফোন, পছন্দের কানেক্টিভিটি পার্টনার হিসেবে, নিশ্চিত করতে চায় যে এআই সকলের জন্য দায়িত্বশীল উপায়ে সহজলভ্য হোক। বাংলাদেশ, গ্রামীণফোন ও এআই – একটি শক্তিশালী সমীকরণ, যা অন্য কোনো অপারেটর বা সংস্থা দাবি করতে পারবে না। আমরা এআই যাত্রায় সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করছি।
ইয়েভা মার্টিনকেনাইট: আপনি যা বলেছেন তার সাথে যোগ করতে চাই, বাংলাদেশে সকলের হাতে এআই পৌঁছে দিতে গ্রামীণফোন-এর প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানায় টেলিনর গ্রুপ। আমরা দেখেছি এর বাস্তবায়ন হচ্ছে এবং সমস্ত অপারেশনে এই ইকোসিস্টেমগুলো কাজে লাগাতে সহায়তা করছি আমরা। বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে উদ্ভাবনী উদ্যোগের নেতৃত্ব দিচ্ছে টেলিনর গ্রুপ; যা আমরা বাংলাদেশেও আনতে পেরে এবং স্থানীয় টিমের মাধ্যমে গ্রাহকদের হাতে দায়িত্বশীলভাবে পৌঁছে দিতে পেরে আনন্দিত।
টেলিনর গ্রুপ বিশ্বব্যাপী এআই-এর ঝুঁকিও স্বীকার করে। আমরা এটিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখি যে, আমাদের কোম্পানিগুলো কীভাবে তাদের কার্যক্রমে এবং গ্রাহকদের জন্য এআই তৈরি, ব্যবহার ও প্রয়োগ করছে। আমরা মাইক্রোসফ্ট, ওপেনএআই এবং অন্যান্য পার্টনারদের সাথে এটা নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করছি, যা নিয়ে আমরা গর্বিত। এ ব্যাপারটি গুরুত্বপূর্ণ যে, গ্রামীণফোন তার কর্মীদের সামনে রাখছে। গ্রামীণফোনের কার্যক্রম এবং বৃহত্তর সম্প্রদায়ের জন্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে। দেশগুলোকে উন্নতি করতে সাহায্য করবে এআই এবং আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রামীণফোন এক্ষেত্রে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।

