সৈকত হোসেন
যশোরের পৌরপার্ক থেকে তুলে নেওয়ার পর দুই যুবককে হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগে সাবেক পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান ও তৎকালীন টিএসআই রফিকুল ইসলামসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। রোববার (২৩ আগস্ট) গুম হওয়া যুবক সাইদুর রহমানের বাবা সদর উপজেলার তরফ নওয়াপাড়া গ্রামের কাজী তৌহিদুর রহমান খোকন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রহমত আলী অভিযোগ আমলে নিয়ে কোতোয়ালি থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী মিলন আহমেদ। মামলার অন্য আসামিরা হলেন, শংকরপুরের আনারকলির ছেলে ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলার গোলাম মোস্তফা, পিরোজপুর সদর উপজেলার কুমারখালী গ্রামের শ্যাম হাওলাদারের ছেলে ফুলু মিয়া, মৃত হাকিম শেখের দুই ছেলে রমিজ শেখ ও নাসির শেখ, মৃত হাই শেখের ছেলে সাইফুল শেখ, জব্বার শেখের ছেলে হারুন অর রশিদ শেখ, মৃত সেলিম শেখের ছেলে জাহিদুল শেখ এবং জাহাঙ্গীর তালুকদারের ছেলে আল আমিন তালুকদার। বাদীর অভিযোগ, জমি-সম্পত্তি দখল নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৭ সালের ৫ এপ্রিল তার ছেলে সাইদুর রহমান সাইদ ও বন্ধু শাওন পৌরপার্কে ঘুরতে গেলে টিএসআই রফিকুল ইসলাম গোলাম মোস্তফাসহ অন্যদের উপস্থিতিতে তাদের মারধর করে আটক করে। এর নির্দেশদাতা ছিলেন পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান। পরে বাদী থানায় যোগাযোগ করলেও কোনো সহায়তা পাননি। আশ্বাস দিয়েও এসপি আনিস যুবকদের আদালতে সোপর্দ করেননি। এদিকে টিএসআই রফিক ও গোলাম মোস্তফা ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করেন, কিন্তু সাইদ ও শাওনকে ফেরত দেননি। এ ঘটনায় বাদীর স্ত্রী হিরা বেগম মামলা করলে তাকে ধরে সাবেক এমপি শাহীন চাকলাদারের বাড়িতে আটকে রাখেন টিএসআই রফিক। মামলা প্রত্যাহারের জন্য বিদ্যুতের শক দিয়ে হুমকি দেওয়া হয়। পরে অসুস্থ হয়ে হিরা বেগম মারা যান। আজও সাইদ ও শাওনের খোঁজ মেলেনি। বাদীর দাবি, তাদের হত্যা করে লাশ গুম করা হয়েছে। সে সময় আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় মুখ খোলার সাহস পাননি তিনি। বর্তমানে পরিস্থিতি অনুকূল হওয়ায় আট বছর পর আদালতে মামলা করেছেন।
যশোরে দুই যুবক হত্যা ও গুম : সাবেক আলোচিত এসপি আনিস ও বিতর্কিত টিএসআই রফিকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
