শেখ জলিল আহমেদ, তালা
সাতক্ষীরার যুবদল নেতা এস এম শামীমকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তাঁর স্ত্রী ফাতেমা আক্তার বৃষ্টি। নিজের কিশোর ফুফাতো ভাইকে ডেকে এনে শামীমকে খুন করান তিনি। আদালতে বৃষ্টির জবানবন্দির বরাতে আজ মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) পুলিশ সুপার টি এম মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের এ কথা জানান। বৃষ্টিকে কারাগারে এবং বয়স কম হওয়ায় তার ফুফাতো ভাইকে যশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার খুলনা এসপি অফিসে সংবাদ সম্মেলনে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার যুবদল নেতা শামীম হোসেন হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা বলেন পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন। তিনি জানান, বৃষ্টির দাবি, প্রায়ই তাঁকে মারধর করতেন শামীম। তাই ক্ষোভে শামীমকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। শামীমকে হত্যার তিন দিন আগে ফুফাতো ভাই ওবায়দুল্লাহ বাদলকে বাড়িতে ডেকে আনেন। হত্যাকাণ্ডের আগের দিন বৃষ্টি তাঁর ফুফাতো ভাইকে স্বামীর হাতে নির্যাতিত হওয়ার কথা জানান। এ জন্য স্বামীকে হত্যা করতে চান তিনি এবং এ কাজে ভাইয়ের সহযোগিতা চান। কিশোর ভাই তাতে রাজি হয়। পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন জানান, হত্যাকাণ্ডের দিন রাতের খাবার খেয়ে শামীম ও তাঁর স্ত্রী তৃতীয় তলার ফাঁকা ফ্ল্যাটে যান। এর কিছুক্ষণ পর বৃষ্টির ভাইও সেখানে যায়। কীভাবে কোপ দিতে হবে, তা বৃষ্টি ইশারায় দেখাতে থাকেন। বোনের ইশারা পেয়ে ছোরা দিয়ে শামীমের ঘাড়ে কোপ দেয় ওই কিশোর। এতে শামীম মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং তাঁর মৃত্যু হয়। হত্যাকাণ্ডের পর বৃষ্টি আর তাঁর ভাই ছাদে যান। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরাটি পাশের জলাশয়ে ফেলে তাঁরা আবার দ্বিতীয়তলায় এসে শামীমের মায়ের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে কথাবার্তা বলেন। পুলিশ সুপার বলেন, হত্যাকাণ্ডটি ক্লুলেস ছিল। তা ছাড়া, নিহত শামীমের মা রশিদা খাতুন এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ডুমুরিয়া থানায় মামলা করেন। হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশের একটি চৌকস দল কাজ করেছে। অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে তাঁদের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতে শামীমের স্ত্রী ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। বৃষ্টির ফুফাতো ভাইয়ের বয়স কম হওয়ায় তাকে যশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ, গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ডুমুরিয়ার আঠারোমাইল এলাকায় নিজ বাড়িতে খুন হন যুবদলের নেতা শামীম হোসেন। তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়। শামীম সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। রোববার বিকেলে তাঁর মা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রশিদা বেগম অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ডুমুরিয়া থানায় মামলা করেন।

