১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

কেশবপুরে নদীপাড়ের মাটি কেটে রাস্তা নির্মাণ, বাঁধা দেওয়ায় প্রশাসক অবরুদ্ধ

মাসুম বিল্লাহ, কেশবপুর
নদীপাড়ের মাটি কেটে রাস্তা নির্মাণ করার সময় বাঁধা দেওয়ায় ইউনিয়ন প্রশাসককে অবরুদ্ধ করার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার যশোরের কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট ইউনিয়নে ওই রাস্তা নির্মাণ চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলকোট ইউনিয়নের মঙ্গলকোট ব্রিজের মাথা থেকে পূজা মন্ডপ পর্যন্ত সাড়ে চার শ’ ফুট দুই লাখ টাকা ব্যয়ে ইট বিছানো রাস্তার কাজ চলছে। কাজটি করছেন ওই ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম। সোমবার দুপুরের দিকে তিনি ওই রাস্তায় ব্যবহার করার জন্য মঙ্গলকোট ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দিয়ে বয়ে যাওয়া বুড়িভদ্রা নদীর পাড়ের মাটি কেটে পাওয়ার টিলারে করে বহন করছিলেন। মঙ্গলকোট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা প্রশাসক ও উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ কুমার বিশ্বাস নদীর মাটি কাটতে বাঁধা দেন। এ খবর জানতে পেরে ইউপি মেম্বার কামরুল ইসলাম তার লোকজনদের নিয়ে গিয়ে প্রশাসক সুদীপ কুমার বিশ্বাসকে অবরুদ্ধ করে ফেলেন। তখন তাকে হুমকি দেয়া হয় নদীর মাটি কাটতে না দিলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাকে বের হতে দেবে না। পরে প্রায় এক-দেড়শ মানুষ সেখানে সমবেত হয়ে ওই প্রশাসককে অবরুদ্ধ করে ফেলেন। এ পরিস্থিতিতে প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমিকে ঘটনাস্থলে পাঠান। উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি শরীফ নেওয়াজ পুলিশ নিয়ে গিয়ে ইউনিয়ন প্রশাসক সুদীপ কুমার বিশ্বাসকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। সরেজমিনে মঙ্গলবার গিয়ে দেখা যায়, মঙ্গলকোট পূজা মন্ডপের পাশ থেকে ইটের রাস্তা ১০০ ফুট রাস্তা তৈরি হয়েছে। সেখানে রাখা ইট ২ নম্বর বলে দেখা যায়। তাছাড়া ওই রাস্তায় ইটের নিচে কোন বালি ব্যবহার করা হয়নি। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন রাস্তাটি অত্যন্ত নিম্নমানের করে তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়াও বুড়িভদ্রা নদীর পাড়ে গিয়ে দেখা যায় প্রায় ৩০ ফুট এলাকার নদীপাড়ার মাটি কেটে নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে মঙ্গলকোট ইউনিয়নের ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম জানান, রাস্তার কাজের প্রয়োজনে নদীর মাটি নেওয়া হচ্ছে। সেখানে প্রশাসককে অবরুদ্ধ করার কোন ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি দাবি করেন। এই ইউপি সদস্য ওই রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেন। এ ব্যাপারে মঙ্গলকোট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা প্রশাসক ও উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ বিশ্বাস বলেন, ইউপি সদস্য জোরপূর্বক মাটি কেটে নেয়ার বাঁধা দেওয়ায় তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। ইউনিয়ন পরিষদে তালা লাগিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। তিনি এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এ ব্যাপারে কেশবপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেকসোনা খাতুন বলেন, মৎস্য কর্মকর্তার অভিযোগ পেয়ে ওই ইউপি সদস্যকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। তিন কার্য দিবসের ভিতরে জবাব দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব পাওয়া গেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়