১১ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ২৬শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

জলে গেল পান বরজ ও শ্মশান ঘাট!

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মার ভাঙনে বিস্তীর্ণ ফসলি জমিসহ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ব্যবহৃত শ্মশানঘাট নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে ৮০-৯০ জন পান চাষি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ফয়জুল্লাহপুর, হাটখোলাপাড়া ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নের আরকান্দি ও মাধবপুরে গত চারদিন ধরে পদ্মা নদীতে প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ভাঙন কবলিত স্থান থেকে পদ্মা নদী রক্ষা রায়টা-মহিষকুন্ডি বেড়িবাঁধের দূরত্ব ৫০ মিটারেরও কম। হুমকিতে রয়েছে বসতবাড়ীসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা। এই নিয়ে এই অঞ্চলের বসবাসকারী মানুষের আতঙ্কে দিন কাটছে। যেকোনো সময় বড় রকমের বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা। অপরদিকে, মাধবপুরের ভাঙন কবলিত এলাকায় রয়েছে বিস্তীর্ণ প্রান্তিক চাষিদের পান বরজ। গত কয়েক দিনের ভাঙনে ৮০-৯০ জন পান চাষির প্রায় ৩ হাজার সারি পান বরজ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এছাড়া এ অঞ্চলের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ব্যবহৃত একমাত্র শ্মশানঘাটটি নদীতে হারিয়ে গেছে। ওই এলাকার আমিরুল আলী নামের এক কৃষক জানান, তার ভাই আরজেত আলী ও তার ছেলেদের ৭-৮ বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। এখানে প্রায় ৮০০ সারি পানের বরজ ছিল। একমাত্র উপার্জনের জায়গা হারিয়ে তারা এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। মবির পন্ডিত, রেজাউল, জামশেদ, রাব্বি, রহমান, কাশেম, নুরা, নাসির, আনেজ, আজগর, আবু শিহাবরা ১০০ সারি করে পানের বরজ হারিয়েছেন। পানচাষি আবুল হোসেন বলেন, “মাধবপুর এলাকায় গত ২ বছর আগে এসব বরজ আগুনে পুড়ে গিয়েছিল। এবার আবার পদ্মা নদী গিলে খেল। আমরা কৃষকরা খুবই অসহায় হয়ে পড়েছি। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, বাহাদুরপুর ইউনিয়নে ভাঙনের বিষয়টি আমি শুনেছি। শীঘ্রই সেখানে পরিদর্শন করব। আর বসতবাড়ী থাকার কারণে জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ফয়জুল্লাহপুরে নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গেই কাজ শুরু হবে। পরবর্তীতে অন্যান্য অঞ্চলগুলোতে কাজ শুরু হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদা সুলতানা বলেন, পদ্মার ভাঙনে পান চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাদের প্রায় ৩০০ সারি পান বরজ নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থ চাষীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে সাহায্য সহযোগিতা করা হবে। ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদীতে ভাঙনের বিষয়টি আমরা জেনেছি। ক্ষতিগ্রস্থ পান চাষিদের আবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়