২৯শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

ভারতের সঙ্গে নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে এত আলোচনা কেন?

প্রতিদিনের ডেস্ক
নেপালের প্রথম নারী অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। তার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নিয়ে এরই মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে—একদিকে তার শিক্ষাজীবন ও ব্যক্তিগত বন্ধন, অন্যদিকে স্বামীর অতীত রাজনৈতিক ভূমিকা এই আলোচনাকে আরও উসকে দিয়েছে।১৯৭৫ সালে ভারতের বারাণসীর বানারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় (বিএইচইউ) থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন কার্কি। সেখানেই পরিচয় হয় তার স্বামী দুর্গা প্রসাদ সুবেদীর সঙ্গে, যিনি ছিলেন নেপালি কংগ্রেসের যুবনেতা।
সুবেদী ১৯৭৩ সালে নেপালের ইতিহাসে প্রথম প্লেন ছিনতাইয়ে নেতৃত্ব দেন। সে সময় কাঠমান্ডু অভিমুখী রয়্যাল নেপাল এয়ারলাইনসের একটি প্লেন ভারতীয় সীমান্ত শহর ফরবিসগঞ্জে অবতরণে বাধ্য করা হয়। ছিনতাইকারীরা ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে পালিয়ে যায়, যা পরে রাজতন্ত্রবিরোধী আন্দোলনে ব্যবহৃত হয়। এই অভিযানে ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী গিরিজা প্রসাদ কৈরালা ও সুশীল কৈরালারও সংশ্লিষ্টতা ছিল বলে শোনা যায়।সুবেদী পরবর্তীতে ভারতে আত্মগোপনে যান এবং ১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর গ্রেফতার হয়ে দুই বছর কারাভোগ করেন। এরপর তাকে নেপালের কাছে হস্তান্তর করা হয়।অন্যদিকে সুশীলা কার্কির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক সবসময় ইতিবাচক ছিল। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তিনি নিজেকে ভারতের ‘বন্ধু’ বলে উল্লেখ করেছেন। বিএইচইউতে পড়াশোনার অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমি অনেক ভারতীয় বন্ধুবান্ধব ও শিক্ষককে এখনো মনে করি। ভারত সবসময় নেপালের ভালো চেয়েছে।’ তিনি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সম্পর্কে ‘ভালো ধারণা’ থাকার কথাও বলেছেন।অন্যদিকে, সুশীলা কার্কি নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মোদী। এক্সের এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণের জন্য মাননীয়া সুশীলা কার্কিকে আন্তরিক অভিনন্দন। মোদী লিখেছেন, ভারত নেপালের ভাইবোনদের শান্তি, অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধির প্রতি সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ভারতের শিক্ষাঙ্গনেই কার্কির রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় শুরু হয়েছিল। সেই স্মৃতিচারণ করে বিএইচইউর সাবেক অধ্যাপক দীপক মালিক বলেছেন, বিএইচইউতে পড়ার সময় থেকেই আমাদের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক রয়েছে। তিনি নিরপেক্ষ, সৎ এবং দুর্নীতিবিরোধী একজন নেতা।
এই পটভূমির কারণে ভারতের সঙ্গে সুশীলা কার্কির সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে আলোচনা হচ্ছে। একদিকে ভারতের শিক্ষাজীবন ও বন্ধন তাকে ভারতপন্থি হিসেবে উপস্থাপন করছে, অন্যদিকে স্বামীর অতীত ‘প্লেন ছিনতাইয়ের ইতিহাস’ সেই সম্পর্ককে আরও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এনেছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, সেতোপাতি

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়