১০ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ২৬শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

পদ্মায় মাছ-বালু লুট ও চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৯

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে মাছ ধরা, বালু উত্তোলন ও জেলেদের কাছ থেকে চাঁদা উত্তোলন নিয়ে স্থানীয় দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৯ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ সময় বেশকিছু বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) উপজেলার কয়া ইউনিয়নের বেড় কালোয়া জেলেপাড়া থেকে কালোয়া বাজার পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় অন্তত দেড় ঘণ্টাব্যাপী গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- বের কালোয়া গ্রামের আনারুলের ছেলে আকরাম হোসেন (৩১), দুলাল শেখের ছেলে রাজীব শেখ (৩২), আলম মন্ডলের ছেলে আলামিন মন্ডল (৩৩), বজলু শেখের ছেলে রুহুল আমীন (৫২), কুদ্দুস শেখের ছেলে আশিকুর রহমান (৩২) ও কেরায় শেখের ছেলে তাজিম শেখ (৫০)। বর্তমানে তারা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহত অন্যরা হলেন- একই গ্রামের জেহের শেখের ছেলে কুদ্দুস শেখ (৬৫), মৃত মোশারফের ছেলে দুলাল হোসেন (৪২) ও মহির শেখের ছেলে খুতে শেখ (৩৫)। স্থানীয়রা জানান, ইলিশের প্রজনন মৌসুমে পদ্মায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। তবুও নদীতে অবৈধভাবে মাছ ধরা, বালু উত্তোলন ও জেলেদের কাছ চাঁদা উত্তোলন নিয়ে কয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও ইউপি সদস্য রাশিদুল ইসলাম, তার ভাগনে সালমান এফ রহমান বকুল গ্রুপের সঙ্গে ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য ও সাবেক ইউপি সদস্য বকুল বিশ্বাস এবং জেলেপাড়ার সরদার ইয়ারুল ইসলাম গ্রুপের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বাড়িঘর ও স্থানীয় বিএনপির অফিস ভাঙচুর করা হয়। তবে, এ নিয়ে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছেন। বিএনপি নেতা বকুল বিশ্বাস ও জেলে নেতা ইয়ারুল গ্রুপের অভিযোগ, কয়া ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রাশিদুল ইসলাম ও তার ভাগনে বকুল, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল খালেকের ছেলে রিপন, শিপন, লিটনসহ তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে অতর্কিত গুলিবর্ষণ করেছেন। এতে অন্তত ছয় জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বেশকিছু বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটও চালিয়েছেন তারা। ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা পুলিশের হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন এবং ঘটনার তদন্ত চলছে। তবে বিএনপি নেতা রাশিদুল ইসলাম গ্রুপের অভিযোগ, বিএনপি নেতা বকুল বিশ্বাস, কয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হাজীর ভাই সোহেল রানা, আওয়ামী লীগের সমর্থক ও জেলেদের নেতা ইয়ারুল ইসলামের সঙ্গে মিলেমিশে পদ্মায় মাছ, বালু লুট ও চাঁদাবাজি করার জন্য গুলি চালিয়েছেন। এতে তিন জন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গোলাগুলির ঘটনা নিশ্চিত করে কুমারখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার জিয়াউর রহমান বলেন, ‘‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দেখি হামলাকারীরা কেউ নেই। তবে, এখন পর্যন্ত ৬-৭ জন গুলিবিদ্ধ এবং কিছু বাড়িতে ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’’

 

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়