১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

ইংল্যান্ডে নারীদের ফুটবলে নিষিদ্ধ হচ্ছেন ট্রান্সজেন্ডার খেলোয়াড়

প্রতিদিনের ডেস্ক॥
ইংল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ঘোষণা করেছে, আগামী ১ জুন ২০২৫ থেকে নারীদের ফুটবলে আর খেলতে পারবেন না ট্রান্সজেন্ডার খেলোয়াড়রা। এই সিদ্ধান্ত এসেছে ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্টের একটি আলোচিত রায়ের পর, যেখানে বলা হয়েছে ‘জন্মগতভাবে নারী’রা ছাড়া অন্য কেউ আইনের চোখে নারী হিসেবে গণ্য হবেন না। এই রায় ট্রান্স সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করলেও ব্রিটিশ সরকার এটিকে ‘আইনি স্পষ্টতা’ বলে স্বাগত জানিয়েছে। স্কটিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনও কয়েক দিন আগে একই ধরনের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে। এফএ জানিয়েছে, ‘জাতীয় খেলার পরিচালনাকারী সংস্থা হিসেবে আমাদের দায়িত্ব যত বেশি সম্ভব মানুষকে ফুটবলের সুযোগ করে দেওয়া। তবে আইন ও আন্তর্জাতিক নীতিমালার ভিতরে থেকেই কাজ করতে হয়। আমাদের বর্তমান নীতিমালায় ট্রান্সজেন্ডার নারীদের নারীদের দলে খেলার সুযোগ ছিল। এটি আইনি পরামর্শের ভিত্তিতে নেওয়া হয়েছিল। তবে বিষয়টি জটিল। আমরা আগেই বলেছিলাম যে, যদি আইন বা বিজ্ঞানে বড় কোনো পরিবর্তন আসে, তাহলে আমরা নীতিমালা পর্যালোচনা করব। ১৬ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী আমরা আমাদের নীতিতে পরিবর্তন আনছি। আমরা বুঝি, এই সিদ্ধান্ত অনেকের জন্য কষ্টের হবে, যারা তাদের নিজের পরিচয়ে প্রিয় খেলাটি খেলতে চায়। বর্তমানে যারা নিবন্ধিত ট্রান্সজেন্ডার নারী খেলোয়াড় আছেন, আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি এবং জানাচ্ছি কীভাবে তারা ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন।’ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের মুখপাত্র বলেন, ‘প্রত্যেক খেলার সংস্থার নিজস্ব নীতি নির্ধারণের অধিকার থাকলেও সেটি অবশ্যই আইনের সীমার মধ্যে থাকতে হবে। আমরা বারবার বলেছি, নারীদের খেলায় জন্মগত পরিচয় গুরুত্বপূর্ণ।’ এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন কিছু নারী অধিকারকর্মী। ‘সেক্স ম্যাটারস’ গ্রুপের ফিওনা ম্যাকএনেনা বলেন, ‘এফএর এই সিদ্ধান্ত অনেক আগেই নেওয়া উচিত ছিল। এতদিন নারী ও মেয়েদের ক্ষতির প্রমাণ ছিল হাতে। টেস্টোস্টেরন কমানোর শর্তই প্রমাণ করে এরা জন্মগতভাবে নারী নন।’ অন্যদিকে, ট্রান্স অধিকারের পক্ষে কাজ করা সংগঠন ‘ফুটবল ভি ট্রান্সফোবিয়া’র সদস্য নাটালি ওয়াশিংটন বলেন, ‘আমার পরিচিত অনেকেই বলছে, এখন ফুটবলকে বিদায় জানাতে হবে। অনেকেই নিরাপত্তা ও স্বস্তির কারণে পুরুষদের দলে খেলার কথা ভাবতে পারছে না।’ বর্তমানে ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ফুটবলে প্রায় ২০ জন ট্রান্সজেন্ডার নারী খেলোয়াড় রয়েছেন। এই ইস্যু যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের অনেক দেশে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ট্রান্সজেন্ডার ক্রীড়াবিদদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করতে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এসব সিদ্ধান্ত আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়