প্রতিদিনের ডেস্ক॥
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ ও তার স্ত্রী ব্রিজিত গার্সিয়ার সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। বয়সের ব্যবধান, সামাজিক প্রতিবন্ধকতা ও রাজনৈতিক উচ্চতার মধ্যেও টিকে থাকা তাদের প্রেম ও বৈবাহিক সম্পর্ককে অনেকেই দেখেন ব্যতিক্রমী এক ভালোবাসার দৃষ্টান্ত হিসেবে। ম্যাখোঁ যখন অ্যামিয়ঁ শহরের লা প্রোভিদঁস ক্যাথলিক স্কুলের ১৫ বছর বয়সী ছাত্র, তখনই তার পরিচয় হয় ৩৯ বছর বয়সী নাট্যশিক্ষিকা ব্রিজিতের সঙ্গে। ব্রিজিত ছিলেন বিবাহিত এবং তিন সন্তানের মা। ১৫ বছরের সেই কিশোর ম্যাখোঁ তার শিক্ষিকার প্রেমে হাবুডুবু খেতে শুরু করেন। ব্রিজিত ছিলেন এক ব্যাংকারের স্ত্রী, তিন ছেলে-মেয়ে। স্বামী-সন্তান নিয়ে ঘোরতর সংসারী। প্রথম সাক্ষাতের ঠিক দুই বছর পরে প্রস্তাবটা আসে তার কাছ থেকেই। মুগ্ধতা তত দিনে প্রেমে বদলেছে। ম্যাখোঁ রাখঢাক না করেই শিক্ষিকাকে বলেছিলেন, ‘তুমি যা-ই করো না কেন, আমি তোমাকেই বিয়ে করব।’ প্রথমে তেমন আমল না দিলেও ম্যাখোঁর জেদের কাছে শেষমেশ হার মানতে হয়েছিল ব্রিজিতকে। তাদের সম্পর্কের শুরু ১৯৯৪ সালের বসন্তে। তখন মাখোঁর বয়স ছিল ১৬ বছর, আর ব্রিজিতের ৪০। এই সম্পর্ক আমিয়েঁ শহরের ক্যাথলিক মধ্যবিত্ত সমাজ ভালোভাবে নেয়নি। স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে অনেক চিঠি আসে, যেগুলোর বেশির ভাগই ছিল বেনামি এবং তাতে শিক্ষিকা ব্রিজিতের আচরণকে কঠোর ভাষায় নিন্দা করা হয়। এমনকি ব্রিজিতের পরিবারের কাছেও একই ধরনের কটু ও বিরূপ চিঠি পাঠানো হয়েছিল। ম্যাখোঁর মা-বাবাও সরাসরি ব্রিজিতকে বলেন, যেন তিনি তাদের ছেলেকে ছেড়ে দেন। বহু ঘাত-প্রতিঘাত সামলে শিক্ষিকা ও তার ছাত্রের মধ্যে প্রেমের যে বীজ অঙ্কুরিত হয়েছিল তা শেষ পর্যন্ত এক সাহসী বিবাহ-উপসংহারে থিতু হয়েছিল। কারণ ছাত্রকে বিয়ে করে ব্রিজিত যে সাহস দেখিয়েছেন, সেটাই আধুনিক পৃথিবীর রূপকথা।

