সৈকত হোসেন
যশোরে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) যশোর শহরের চাঁচড়া ডাল মিল কার্যালয় রীতিমতো ঘুষ-দুর্নীতির অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির উপপরিচালক প্রকৌশলী আসলাম শেখের নেতৃত্বে চলছে কোটি টাকা মূল্যের ঘুষ বানিজ্য। এতে একদিকে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব, অন্যদিকে ভোগান্তিতে পড়ছেন সেবা প্রত্যাশীরা।বিএসটিআই সূত্র জানায়,যশোর অফিসে যোগদানের পর থেকে আসলাম শেখ ঘুষ গ্রহণকে নিয়মিত চর্চায় পরিণত করেছেন। প্রতিদিন গড়ে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা ঘুষ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে, যা মাসে দাঁড়ায় প্রায় ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকায়। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে ঘুষের অঙ্ক ১ কোটি টাকাও ছাড়িয়ে যায় বলে জানা গেছে। সরকার নির্ধারিত ৩১৫টি পণ্যের রাসায়নিক ও গুণগত মান পরীক্ষার দায়িত্বে রয়েছে বিএসটিআই। এসব পরীক্ষার ছাড়পত্র নিতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের গুনতে হয় মোটা অঙ্কের ঘুষ। সংশ্লিষ্টরা জানান,ঘুষ ছাড়া কোনো পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যায় না। ঘুষ না দিলে রিপোর্ট ঝুলিয়ে রাখা হয় কিংবা নেগেটিভ ফলাফল দেওয়া হয়। বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আসা আমদানি পণ্য, বিশেষত খাদ্যপণ্য ও কেমিক্যাল বিভিন্ন সময়ে যশোর বিএসটিআই অফিসে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। পণ্যপ্রতি পরীক্ষায় ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ২ লাখ টাকার ঘুষ দাবি করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। নাম না প্রকাশের শর্তে কয়েকজন ব্যবসায়ী বলছেন, টাকা না দিলে পণ্যের ছাড়পত্র পাওয়া যায় না, আবার টাকা দিলে মান যাচাইয়ের তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমতো রিপোর্ট দেওয়া হয়। এভাবে পণ্যের প্রকৃত গুণগত মান আড়াল রেখে ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার ফলে কাস্টমস মূল্যায়নে এইচএস কোডে ভিন্নতা দেখা দেয়, যার ফলে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। যশোর বিএসটিআই দপ্তরের এক সহকারী কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘উপপরিচালক আসলাম শেখের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানেন। কিন্তু অজানা কারণে কেউ ব্যবস্থা নিতে সাহস পান না।’ এ বিষয়ে জানতে সোমবার দুপুরে শহরের চাঁচড়া ডালমিল কার্যালয়ে উপ পরিচালক আসলাম শেখের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি সাংবাদিক দেখে বলেন, আমি জরুরী কাজে আছি এখন কথা বলা যাবে না। এই বলে তিনি রুমের মধ্যে চলে যান এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের বলেন সাংবাদিকদের সাথে কোন কথা বলবেন না। এ প্রসঙ্গে অন্যান্য কর্মকর্তারা বলেন, আমরা অফিসিয়াল কাজে ব্যস্ত আছি উপরের পারমিশন ছাড়া কথা বলা যাবে না। আপনারা অন্যদিন আসেন।

