১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ শিবসা নদীর খনন কাজ

মাজহারুল ইসলাম মিথুন, পাইকগাছা
নদীটি ছিল খরস্রোতা। চলতো বিভিন্ন ধরনের নৌযান। ছিল খেয়াঘাটও। তবে পলিতে নদীর তলদেশ ভরে এখন গোচারণভূমিতে পরিণত হয়েছে নদীটি। পাশাপাশি রয়েছে দখলদারিত্বও। নদীটির বিভিন্ন অংশে বাঁধ দিয়ে করা হচ্ছে মাছ চাষও। ঘটনাটি খুলনার পাইকগাছা দিয়ে বয়ে যাওয়া শিবসা নদীর। পাইকাগাছা উপজেলার শিববাটি থেকে সোলাদানা পর্যন্ত শিবসা নদী ভরাট হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে এক কালের খরস্রোতা নদীটির স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে ও নদী খননের দাবি জানিয়ে আসছে সংশ্লিষ্টরা। তবে আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ থেকে গেছে নদীটির খনন কাজ। জানা যায়, খুলনার নদ-নদীগুলোর মধ্যে অন্যতম শিবসা নদী। কপোতাক্ষের শেষ প্রান্ত থেকে শুরু হয়েছে শিবসা। যা বহমান আকারে মিশেছে সুন্দরবনে। উপজেলার অন্যান্য নদ-নদীগুলোর সংযোগ রয়েছে শিবসার সঙ্গে। যার কারণে বৃহৎ এলাকার পানি সরবরাহের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে শিবসা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন- উপজেলা পানি কমিটি, নদী বাঁচাও আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শিবসা নদী খননের দাবি জানানো হয়ে আসছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অসংখ্য বার করা হয়েছে লিখিত আবেদন। কিন্তু শুধু আশ্বাস মিলেছে। ২৭ থেকে ২৮ বছরেও খনন কাজ করেনি সরকার। বরং সবশেষ কয়েক বছরের মধ্যে নদীর বিশাল অংশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় তা পরিণত হয়েছে গোচারণভূমিতে। দখল হয়ে গেছে শত শত বিঘা জায়গা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা সদরের শিববাটী ব্রিজ হতে হাড়িয়া পর্যন্ত নদীর প্রায় ১৫ কিলোমিটার ভরাট হয়ে গেছে। নদীর জায়গা ইচ্ছামতো দখল করে নিচ্ছে ভূমিদস্যুরা। এক সময় প্রবল জোয়ার-ভাটার স্রোত থাকা নদী এখন শান্ত। কিছু কিছু স্থানে নদীতে বাঁধ দিয়ে করা হচ্ছে মাছ চাষ। স্থানীয়র বলেন, এক সময় এ নদীতে লঞ্চ-স্টিমার থেকে শুরু করে নৌকা ও স্পিডবোর্ড চলতো। ছিল খেয়াঘাটও। নদী ভরাট হওয়ার কারণে এসব এখন শুধুই স্মৃতি। সেখানে এখন চরে গবাদি পশু। প্রশাসনের নীরবতার কারণে দখলের প্রবতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি করছে স্থানীয়রা। উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক শাখা কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দীন বলেন, ‘আমি পাইকগাছায় থাকাকালীন সময়ে বিষয়টি খুবই গুরুত্ব দিয়ে কর্তৃপক্ষকে বার বার লিখেছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়েনি।’ বর্তমান কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন বলেন, ‘পাইকগাছাবাসীর জন্য শিবসা নদী খনন খুবই জরুরি। এটা না হলে পাইকাগাছা বার বার জলাবদ্ধতার শিকার হবে।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহের নাজনীন বলেন, ‘শিবসা খননটা হলে জলাবদ্ধতার হাত থেকে পাইকগাছাবাসী রক্ষা পাবে। দখলবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে।’

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়