নিজস্ব প্রতিবেদক
অভয়নগর যেন থরথর কেঁপে উঠেছিলো ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীর টিপুকে মাটিতে বুকসমান পুঁতে রেখে চার কোটি টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায়। যে কাণ্ড সিনেমার দৃশ্যকেও হার মানায়, তা ঘটিয়েছে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান জনি ও তার বাহিনী। অবশেষে দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকার পর গ্রেপ্তার হয়ে আদালতে হাজির হন জনি। বুধবার (১৯ আগস্ট) যশোরের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট লস্কার সোহেল রানা তার এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। মামলার এজাহারে উঠে এসেছে রোমহর্ষক তথ্য। নওয়াপাড়া বাজারে ব্যবসা করা শাহনেওয়াজ টিপুকে পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করে নির্জন স্থানে নেয়া হয়। সেখানে তাকে মাটিতে বুকসমান পুঁতে অকথ্য নির্যাতন চালায় জনি ও তার সহযোগীরা। তারপর দাবি করা হয় চার কোটি টাকা মুক্তিপণ। শুধু তাই নয়, ঘটনাটির ভিডিও ধারণ করে ভয়ভীতি ছড়ানো হয় ভুক্তভোগীর পরিবারে। জনির বাড়ি অভয়নগরের গুয়াখোলা সুপারিপট্টি। একই মামলায় তার বাবা কামরুজ্জামান মজুমদারও এখন কারাগারে। দুজনের বিরুদ্ধেই তদন্তকারীরা পাচ্ছেন চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের ধারণা, একাধিক ব্যবসায়ী এমনভাবে নির্যাতন ও চাঁদাবাজির শিকার হয়েছেন। ১৩ আগস্ট রাতে খুলনার একটি আবাসিক হোটেল থেকে জনি ও তার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। নাটকীয় এ গ্রেপ্তার অভয়নগরবাসীর মধ্যে স্বস্তি ও আশা ফিরিয়ে আনে। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সালাউদ্দিন খান জনির সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করলেও আদালত এক দিনের অনুমতি দেন। এমন দুঃসাহসী অপহরণ ও নির্যাতনের পেছনে কারা? জনির পেছনে কি রাজনৈতিক ছায়া-আশ্রয় ছিল? ব্যবসায়ী সমাজে আতঙ্ক তৈরি করে চলা এই সিন্ডিকেটের শেকড় কতটা গভীর, সেই উত্তর খুঁজছে পুলিশও।
এলাকাবাসীর একটাই দাবি, অভয়নগরে জনির মতো আর কোনো হায়না যেন জন্ম না নেয়। ব্যবসায়ী মহল বলছে, এই রিমান্ডে প্রকৃত চক্রের চেহারা উন্মোচিত হবে, বেরিয়ে আসবে আরো অজানা ভুক্তভোগীর গল্প।

