১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

প্রথমবারের মতো ইউক্রেনের সরকারি ভবনে রাশিয়ার হামলা
প্রতিদিনের ডেস্ক:
প্রথমবারের মতো ইউক্রেনে সরকারি ভবনে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতভর চালানো হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজধানী কিয়েভে অবস্থিত মন্ত্রিপরিষদ ভবন। ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ইউক্রেনের সামরিক প্রশাসনের প্রধান তৈমুর তাকাচেঙ্কো জানান, এই হামলায় প্রথমবারের মতো কিয়েভের পেচেরস্কি জেলার মন্ত্রিপরিষদ ভবনে আগুন লাগে। উদ্ধারকারীরা আগুন নেভাচ্ছেন।ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া সিভিরিদেঙ্কো ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, “শত্রুরা প্রতিদিন সারা দেশে আমাদের জনগণকে আতঙ্কিত করছে। ভোরে রাশিয়ার আক্রমণে কিয়েভের মন্ত্রিপরিষদ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই প্রথমবারের মতো ভবনটিতে আঘাত হানা হয়েছে। রাজধানীর অন্য স্থানে একটি গুদাম, ১৬ তলা আবাসিক ভবন এবং একটি চার তলা ভবনে হামলা হয়েছে। অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা ঘটনাস্থলে কাজ করছেন।”ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনীর দাবি, রাশিয়া এক রাতেই ৮০৫টি ড্রোন ও ১৩টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এর মধ্যে অনেকগুলো প্রতিহত করা হলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নয়টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ৫৬টি ড্রোন ৩৭টি স্থানে আঘাত করেছে।কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো জানান, ড্রোন আক্রমণের পর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছিল। এতে এক নবজাতকসহ অন্তত ৩ জন নিহত ও প্রায় ১৮ জন আহত হয়েছেন।ইউক্রেনের রাজধানীতে রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলার এমন ঘটনা খুবই বিরল। এর প্রধান কারণ শহরে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বেশ জোরালো। কিয়েভের জরুরি প্রশাসন জানিয়েছে, ডারনিটস্কি জেলায় চারতলা একটি আবাসিক ভবনের অর্ধেক অংশ আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে। পশ্চিম কিয়েভের স্বিয়াতোশিনস্কি অঞ্চলের একটি ১৬ তলা ভবনের একাধিক তলা ধসে পড়েছে। ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ পড়ে আরো দুটি বহুতলে আগুন লাগে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, রাতভর আতঙ্কে কাটিয়েছেন তারা।ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে সাধারণ নাগরিক ও আবাসিক এলাকা লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। দক্ষিণ ইউক্রেনের ওডেসায়ও একাধিক বহুতল ভবন ও সাধারণ মানুষের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মধ্যাঞ্চলীয় শহর ক্রেমেনচুকে বিস্ফোরণে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ক্রিভি রিহ শহরে পরিবহন ও শহরের বিভিন্ন ক্ষেত্রে হামলা চালানো হয়েছে বলে জানান স্থানীয় প্রশাসক ওলেক্সান্ডার ভিলকুল।মস্কো এই হামলার বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। তবে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় পক্ষই সাধারণ নাগরিকদের লক্ষ্য করার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।বিশ্লেষকদের মতে, কিয়েভে এই হামলা যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে এবং আন্তর্জাতিক মহলে রাশিয়ার ওপর চাপ আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে। এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের বিমান বাহিনী রাতভর ইউক্রেন থেকে আসা কমপক্ষে ৬৯টি ড্রোন ধ্বংস করেছে।রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, তাদের বাহিনী ক্রাসনোদার ক্রাইয়ে ২১টি, ভোরোনেজ অঞ্চলে ১৩টি ও বেলগোরোড অঞ্চলে ১০টি ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলা প্রতিহত করেছে। বাকি ইউক্রেনীয় ড্রোনগুলো রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে ধ্বংস করা হয়েছে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়