২৯শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

বেনাপোলের ভাই-ভাই সিন্ডিকেটের হোতা আজিম শুল্ক ফাঁকি দিয়ে গড়ছে আলিশান বাড়ি

সুন্দর সাহা
সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিতে গড়ে ওঠা বেনাপোল বন্দরে কথিত ভাই ভাই সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই দেশে প্রবেশ করছে মিথ্যা ঘোষণার বিভিন্ন ধরনের আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য।অিবৈধ এই শুল্কফাঁকির ব্যবসা করে ভাই-ভাই সিণ্ডিকেটের হোতা চিহ্নিত অস্ত্র ব্যবসায়ী আজিম উদ্দীন যশোর শহরে গড়ছে আলিশান বাড়ি। ভাই-ভাই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশে আনা হচ্ছে অস্ত্র ও নেশা জাতীয় ঔষধের চালান, সাপের বিষ, মোবাইল, মোবাইল ডিসপ্লে, ব্লেড ও উচ্চ শুল্কযুক্ত পণ্যে। তবে ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে এই চক্র। ৫ই আগস্ট পরবর্তীতে এই সিন্ডিকেটের কয়েকটি চালান আটক হলেও অদৃশ্য ছোঁয়াই কোন ব্যবস্থা নেইনি কাস্টমস ও বন্দর কতৃপক্ষ। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে বেনাপোল স্থলবন্দরে কার্গো ইয়ার্ড টার্মিনালে ভারতীয় কাঁচা মরিচবাহী একটি ট্রাক হতে ( সিজি-০৪পিইউ-৫২৮৮) ১টি পিস্তল ও ৯৩ রাউন্ড গুলিসহ ভারতীয় চালক ও হেলপারকে আটক করে ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা। আটককৃতরা হলো-গুরুজীত সালুজা (৩১) ও হেলপার রাম দাস নাওয়াদি (২৪)। যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক ট্রাক হতে অস্ত্র উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেন। বেনাপোল কার্গো শাখা সূত্রে জানা যায়, ভারতীয় রপ্তানী কারক সেন শিপিং লাইন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ রপ্তানীকৃত ১৯৪ বস্তা কাঁচাঝাল (ওজন ১১টন) ভর্তি ট্রাক চালকের হেফাজতে রাখা পিস্তল ও গুলি উদ্ধার পূর্বক গাড়ীর চালক ও হেলপার দুই ভারতীয় নাগরিককে আটক করে বিজিবি। এ বিষয়ে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কার্গো শাখার দায়িত্বে থাকা রাজস্ব কর্মকর্তা আবু তাহের মুঠো ফোনে জানান, বিজিবি কর্তৃক আমদানি পণ্যের ট্রাক হতে অস্ত্র উদ্ধারের কথা শুনেছি, এর বেশী তথ্য আপতত জানা নেই। বন্দর তথ্য সূত্রে জানা যায়, পণ্য চালানটির বাংলাদেশী আমদানি কারক প্রতিষ্ঠান শিমু এন্টারপ্রাইজ ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট বেনাপোলের বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান ওমর এন্ড সন্স। সীমান্তের সূত্রগুলো জানায়, ভাই ভাই সিন্ডিকেটের প্রধান হচ্ছে ১০ অস্ত্রসহ ঢাকা ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে জেল খাটা আসামি দূর্গাপুরের ইয়ান ভাজাওয়ালার ছেলে আজিম উদ্দীন। এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আজিম উদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার হুমকি দেন। বেনাপোল বন্দরে দীর্ঘ সময় ধরে আজিম উদ্দীন ও আব্দুস সামাদ নামের চিহ্নিত শুল্ক ফাঁকিবাজ চক্রের সদস্যরা কথিত ভাই-ভাই সিন্ডিকেট গড়ে তুলে সরকারী রাজস্ব ফাঁকির মাধ্যমে টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছে। ভাই ভাই সিন্ডিকেটের হোতা আজিম উদ্দীনের যশোর শহরে আলিশান বাড়ি দেখলেই বেরিয়ে আসবে তার অপকর্মের সত্যতা। কাস্টমস ও গোয়েন্দা সদস্যদের সুষ্ঠ তদন্তে বেরিয়ে আসবে এসব অভিযোগের সত্যতা। এ ছাড়াও এই চক্রটি বহুদিন ধরেই আমদানি পণ্য চালানের সাথে অবৈধ অস্ত্র-গুলি-ম্যাগজিন ও ভায়াগ্রার মত মাদক এনে তা বন্দর হতে কৌশলে বের করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। শুল্ক ফাঁকি চক্রের গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে বেনাপোল বন্দর দিয়ে সরকার বড় অঙ্কের রাজস্ব হারালেও ফুঁলে ফেঁপে ওঠছে অসাধু এসব ব্যবসায়ী এবং সদ্য বিদায়ী শীর্ষ কাস্টমস কর্তারা। অতিদ্রুত ভাই ভাই সিন্ডিকেটের লাগাম টেনে ধরতে না পারলে বেনাপোল বন্দরের শৃঙ্খলা নষ্টসহ সচ্ছ ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়বে বলে আশংকা করছেন স্বচ্ছ আমদানিকারকরা। কয়েকজন ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, বেনাপোল বন্দরের শেড ইনচার্জ, স্কেলের দায়িত্বে থাকা কাস্টমস কর্মকর্তার সাথে পূর্ব চুক্তি মোতাবেক শুল্ক ফাঁকি দিতে ভারত থেকে এমন পণ্য চালান আমদানি করা হয়। এসব তারই অংশ।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়