সুকুমার দাশ বাচ্চু, কালিগঞ্জ
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভারসাম্যহীন অজ্ঞাত পরিচয়ের এক নারীর কোলে জন্ম নিল একটি নবজাতক। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত আনুমানিক ৯টার দিকে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে শিশুটির জন্ম হয়। সংবাদ পেয়ে জন্মের পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনুজা মণ্ডল। প্রায় এক মাস আগে কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা বাজার এলাকায় ওই মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে অন্তঃসত্ত্ব অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে এলাকাবাসী ও কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা তাকে উদ্ধার করে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।এরপর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদের সার্বিক দিকনির্দেশনায় চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় যত্ন নিতে থাকে স্বাস্থ্যকর্মীরা। দীর্ঘ এক মাসের চিকিৎসা, পরিচর্যা ও পর্যবেক্ষণের পর অবশেষে সুস্থভাবেই ওই নারী নবজাতকের জন্ম দেন। ঘটনা জানাজানি হলে রাতেই হাসপাতালে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মণ্ডল। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) অমিত কুমার বিশ্বাস ও উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ। নবজাতককে কোলে তুলে নেন ইউএনও অনুজা মণ্ডল এবং শিশুটির সুস্থতা ও ভবিষ্যৎ সুরক্ষায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি। স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, শিশুটির নিরাপত্তা ও সঠিক পরিচর্যার জন্য সরকারি উদ্যোগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি অজ্ঞাত এই নারীর দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর গর্ভধারণ এবং সন্তানের জন্ম নিয়ে এলাকায় নানা আলোচনা চলছে। স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন—এই নারীকে কে বা কারা শোষণ করেছে? কারা এমন ঘৃণ্য কাজের সঙ্গে জড়িত? বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, শিশুটির ভবিষ্যৎ যাতে অন্ধকারে না যায়, সে ব্যাপারে সরকারিভাবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কালীগঞ্জে আগেও এ ধরনের ভারসাম্যহীন নারীর গর্ভপাতের ঘটনা ঘটেছে একটি চক্র সন্তানহীন ব্যক্তিদের কাছে সন্তান দত্তকের নামে বিক্রয় করে ফায়দা লুটে। স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার।

