১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ২রা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

যশোরে সরকারি পুকুর ভরাটে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর শহরের ৯নং ওয়ার্ডের পিয়ারি মোহন রোডের সাদেক দারোগার মোড়ে সরকারি একটি পুকুর উন্নয়নের অজুহাতে ভরাট করা হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই পুকুরই ছিলো ওই এলাকার একমাত্র প্রাকৃতিক জলাধার। প্রতিদিনের গৃহস্থালি কাজে, বিশেষ করে গোসল, ধোয়া-মোছা ও পশুপাখির পানির চাহিদা পূরণে এ জলাধারের ভূমিকা অপরিসীম ছিল। একইসাথে পুকুরটি বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি ধারণ করে জলাবদ্ধতা রোধ করত। স্থানীয়রা জানান, পুকুর ভরাটের কোনো পরিকল্পনা আগে প্রকাশ করা হয়নি। হঠাৎ করেই পুকুরপাড়ের গাছ কেটে মাটি ফেলা শুরু হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তাদের দাবি, উন্নয়নের নামে পরিবেশ ধ্বংস করা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, পুকুর ভরাট হলে কয়েকটি গুরুতর পরিবেশগত ক্ষতি হতে পারে। প্রাকৃতিক জলাধার হারিয়ে যাবে, শহরে বৃষ্টির পানি ধারণের সুযোগ কমে গিয়ে জলাবদ্ধতা তীব্র হবে। জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি , মাছ, ব্যাঙ, পোকা মাকড়সহ পুকুরকেন্দ্রিক জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হবে। ভূগর্ভস্থ পানির সংকট-পুকুর মাটির নিচে পানির স্তর ধরে রাখে। এটি হারালে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাবে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি, পানির জায়গা কমে গিয়ে আশেপাশের এলাকায় তাপমাত্রা ও ধুলাবালি বৃদ্ধি পাবে। জনজীবনে প্রভাব, নিম্নআয়ের মানুষ যাঁরা প্রতিদিনের কাজের জন্য এ পুকুরের পানি ব্যবহার করতেন, তাঁরা চরম ভোগান্তিতে পড়বেন। পৌর নাগরিক কমিটির নেতারা বলেন, “আমরা উন্নয়ন চাই। তবে তা যেন পরিবেশ ও প্রতিবেশের উপর আঘাত না হানে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে জনমত যাচাই করা হয়নি, যা আইনগতভাবেও প্রশ্নবিদ্ধ।” পরিবেশ আন্দোলনকারীরা বিষয়টি তদন্তের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। তাদের মতে, সরকারি জলাধার ভরাট করলে শুধু একটি এলাকার নয়, বরং পুরো শহরের পরিবেশ ভারসাম্য নষ্ট হবে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়