১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

উচ্ছেদ অভিযান, শেষ সম্বল হারিয়ে দিশেহারা ক্যান্সার রোগী ছকিনা

উৎপল মণ্ডল, শ্যামনগর
গত বুধবার থেকে শুরু হয়েছে সাতক্ষীরা থেকে ভেটখালী রাস্তার দুই পাশের অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান। এই উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে। গত বুধবার সকালে সড়ক উন্নয়নের লক্ষ্যে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শ্যামনগর উপজেলার ফায়ার সার্ভিস মোড় থেকে ভেটখালী বাজার অভিমুখে সড়কের উভয় পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করেছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ)। ৪ টি এক্সকেভেটর মেশিন দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয় সব অবৈধ স্থাপনা। এতে বাড়িঘর হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ে সড়কের পাশে বসবাস করা শতাধিক পরিবার। চোখের সামনে বাড়িঘর গুড়িয়ে যেতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেকে। শ্যামনগর ফায়ার সার্ভিসের সামনে বসবাস করেন ক্যান্সারে আক্রান্ত ছকিনা খাতুন। তার অসুস্থ স্বামী কোনো কাজ করতে পারেন না। মাথাগোঁজার ঠাঁই টুকু হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ছকিনা খাতুন। বসতঘর হারিয়ে ছকিনা খাতুন বলেন, “আমরা দীর্ঘ ৫০ বছর রাস্তার পাশে বসবাস করে আসছি। কেউ আমাদের উঠিয়ে দেয়নি। আমাদের বসবাসের কোনো জায়গা নেই। এখন আমরা কোথায় যাব? পরিবারের শিশু-বৃদ্ধেদের নিয়ে কোথায় থাকবো?” এদিকে, উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের দাবিতে তাৎক্ষণিক প্লাকার্ড হাতে নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয় কিছু তরুণ। অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া হাফিজুর রহমান ও জান্নাতুল নাঈম বলেন, “উচ্ছেদ হওয়া ভূমিহীনদের মানবিক দৃষ্টিতে অন্যত্র পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি গুচ্ছ গ্রামে তাদের বসবাসের সুযোগ করে দিতে হবে। আমরা অবশ্যই উন্নয়ন চাই। কিন্তু এতগুলো পরিবার যাবে কোথায়? তাদের বাসস্থান নিশ্চিত করার দায়িত্ব অবশ্যই রাষ্ট্রের।” এ বিষয়ে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রনী খাতুন বলেন, “যদি কোনো ভূমিহীন সরকারি খাস জায়গা বন্দোবস্তের জন্য আবেদন করে, আমরা সেটি বিবেচনা করবো। কিন্তু তাৎক্ষণিক ভাবে তাদের পুনর্বাসনের কোনো সুযোগ নেই।”

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়