১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

ভারত হারতেই ক্রিকেটের নিয়ম বদলের দাবি ভারতীয়দের

প্রতিদিনের ডেস্ক
ডাকওয়ার্থ-লুইস বা ডিএল মেথডে ভারতকে ৭ উইকেটে হারিয়ে ওয়ানডে সিরিজ শুরু করেছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ওয়ানডেতে বৃষ্টি আইনে ভারত হারতেই ক্রিকেটের নিয়ম নিয়ে সরব দেশটির সাবেক ক্রিকেটাররা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অন্য নিয়ম চালুর পরামর্শ দিয়েছেন সুনীল গাভাস্কার। অন্যদিকে, আকাশ চোপড়ার মতে, আইসিসির সময় এসেছে নিয়মে কিছু বদল করার। কোন নিয়ম নিয়ে তাদের ক্ষোভ? ভারতের দুই সাবেক ক্রিকেটার সুর চড়িয়েছেন ‘ডাকওয়ার্থ-লুইস’ নিয়মের বিরুদ্ধে। বৃষ্টিবিঘ্নিত ক্রিকেট ম্যাচে যে নিয়মের ওপর নির্ভর করে ঠিক হয়, কত রান তাড়া করতে হবে। এই নিয়ম নিয়ে এবার সরব ভারতীয়রা। পার্থে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম একদিনের ম্যাচে ‘ডাকওয়ার্থ-লুইস’ নিয়মে কমে গেছে ভারতের রান। তাতেই আগুনে ঘি পড়েছে। ‘ডিএলএস মেথড’ বা ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির প্রবর্তক দুই ইংরেজ পরিসংখ্যানবিদ ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থ এবং টনি লুইস। আন্তর্জাতিক একদিন বা টি-টোয়েন্টিতে সাধারণত বৃষ্টি বা অন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিঘ্নিত ম্যাচে এই নিয়ম ব্যবহার করা হয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন করে লক্ষ্য বেধে দেওয়া হয় পরে ব্যাট করা দলের জন্য। এই নিয়ম প্রথম ব্যবহার হয় ১৯৯৬-৯৭ সালে জিম্বাবুয়ে বনাম ইংল্যান্ডের এক দিনের ম্যাচে। ২০০১ সালে আইসিসি এই পদ্ধতি আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্রহণ করে। ডিএলএস নিয়ম অনুযায়ী, কোনো একদিনের ম্যাচের ফল তখনই ঘোষিত হবে যখন উভয় ইনিংসে কমপক্ষে ২০ ওভার করে খেলা হয়ে গিয়েছে। যদি প্রথম ইনিংসের মাঝপথে বিঘ্ন ঘটে এবং প্রথম ইনিংস কম ওভারে শেষ করতে হয়, তখন দ্বিতীয় ইনিংসের লক্ষ্য আবার নতুন করে নির্ধারিত হয়। এ ক্ষেত্রে প্রথম ইনিংসে কত ওভার বাকি ছিল, কত রান হয়েছে আর কত উইকেট ছিল, এই সব কিছুর ওপর ভিত্তি করে হিসাব হয়।সাধারণত এসব ক্ষেত্রে লক্ষ্য দ্বিতীয় ইনিংসে বেড়ে যায়। যুক্তি, প্রথম ইনিংসের কিছুটা অংশ জুড়ে প্রথমে ব্যাট করা দল ভেবেছিল তাদের হাতে আরও সময় আছে। ওভার কমে যাওয়ার কথা আগে জানলে তারা আরও দ্রুত রান নেওয়ার উদ্দেশ্যে ব্যাট করত। তাই লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়। কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে তা হয়নি। ভারত ১৩৬ রান করলেও তা কমিয়ে ১৩০ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা কমে যাওয়ায় অবাক আকাশ। তিনি সেই ম্যাচে ধারাভাষ্যকারের ভূমিকায় ছিলেন। তখনই প্রশ্ন তুলেছিলেন। পরে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে আকাশ বলেন, “ভারত ১৩৬ রান করল। কিন্তু তা কমিয়ে ১৩০ করে দেওয়া হল। এটা অন্যায়। অবিচার। কারণ, ম্যাচের শুরুতে ভারত ভেবেছিল ৫০ ওভারের খেলা।” আকাশ আরও বলেন, “ডিএলএস-এর হিসেব সাধারণত রান বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু অন্য একটা হিসাবও আছে। বেশি উইকেট পড়ে গেলে রান কমে যাবে। ভারতের ৯ উইকেট পড়ে গিয়েছিল। তাই নিয়ম বলে দিল, তুমি ১৩৬ রান করেছ। যদি প্রথম থেকেই জানতে ২৬ ওভারের খেলা, সে ক্ষেত্রে এই রানটাও করতে পারতে না। এটা অদ্ভুত। মেনে নেওয়া যায় না।” ডিএলএস নিয়মে যদি পরে ব্যাট করা দলের রিসোর্স প্রথমে ব্যাট করা দলের রিসোর্সের থেকে বেশি হয়, তাহলে প্রথম দলের রিসোর্সকে দ্বিতীয় দলের রিসোর্স থেকে বাদ দিয়ে দিতে হবে। তারপর তাকে ২২৫ (আইসিসি নির্ধারিত একদিনের ম্যাচের গড় স্কোর) এর শতাংশে ভাগ করতে হবে। শেষে তাকে প্রথমে ব্যাট করা দলের রানের সঙ্গে যোগ করে পরে ব্যাট করা দলকে টার্গেট দিতে হবে। আইসিসিকে নিয়ম বদলের পরামর্শ দিয়েছেন গাভাস্কার। তিনি বলেন, “আমার মনে হয় এই নিয়ম কেউ খুব একটা বোঝে না। তাহলে তো ভিজেডি (ভি জয়দেবন) নিয়ম ব্যবহার করা যায়। ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে এই নিয়ম রয়েছে। এটা অনেক বেশি সরল। হিসাব করা সহজ। ফলে ক্রিকেটারদের সুবিধাই হবে।” গাভাস্কারের পরামর্শ কি মানবে আইসিসি? না ভবিষ্যতে আবার প্রশ্ন উঠবে এই নিয়ম নিয়ে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়