প্রতিদিনের ডেস্ক:
গত বছরের ১২ জুন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা এক মামলার শুনানিতে বিশেষ জজ আদালত-৪ এ এসেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেই একই আদালতে আজ (সোমবার) শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা ও তার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আরেক মামলায় রায় ঘোষণা হলো।আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৩০ মে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। সংস্থাটির উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলা করেন।২০২৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার। এ মামলায় আসামি ছিলেন ১৩ জন। পরে চার্জশিটে নতুন একজন আসামির নাম যুক্ত হয়।অথচ, সোমবার (১ ডিসেম্বর) একই আদালতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা ও তার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণা করা হলো। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম এ রায় ঘোষণা করেন।রায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনাকে ৫ বছর কারাদণ্ড, তার বোন শেখ রেহানার ৭ বছর কারাদণ্ড, মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের ২ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।এছাড়াও অন্য ১৪ জন অভিযুক্তদের বিভিন্ন মেয়াদে কারা ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।মামলার অভিযোগপত্র থেকে জানা গেছে, শেখ রেহানার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি মামলাটি দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়।তদন্ত শেষে ১০ মার্চ আরও দুই আসামি যুক্ত হয়ে মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। মামলার অন্যান্য আসামি ছিলেন জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ ও পরবর্তী সময়ে যুক্ত হওয়া দুই আসামি হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ও সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এই মামলায় ৩২ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

