১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

কঠোর নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই পাকিস্তানে বিক্ষোভের ঘোষণা ইমরান সমর্থকদের

প্রতিদিনের ডেস্ক:
ইসলামাবাদ হাইকোর্ট ও রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারের সামনে মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। দলটি জানিয়েছে, পার্টির কারাবন্দি প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খানকে না দেখতে পাওয়ায় ও পরিবারসহ কোনো নেতাকে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে না দেওয়ায় এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।তবে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে এমন সময়ে, যখন দুই শহরেই জনসমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। রাজধানীতে ইসলামাবাদে ১৮ নভেম্বর থেকে দুই মাসের জন্য জনসমাবেশে নিষেধাজ্ঞা চলছে। রাওয়ালপিন্ডি জেলা প্রশাসনও সোমবার (১ ডিসেম্বর) তিন দিনের জন্য একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।পিটিআই নেতা আসাদ কায়সার জানান, জাতীয় সংসদ ও সিনেট- দুই কক্ষের বিরোধী দলীয় এমপিরা প্রথমে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের সামনে বিক্ষোভ করবেন। এরপর সেখান থেকে আদিয়ালা কারাগারের দিকে বিক্ষোভ মিছিল যাবে।আসাদ কায়সার জানান, বিক্ষোভের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কারণ হাইকোর্ট তাদের আদেশ বাস্তবায়ন করাতে ব্যর্থ হয়েছেন ও আদিয়ালা কারাগার কর্তৃপক্ষও আদালতের নির্দেশ মানতে রাজি নয়।গত সপ্তাহে খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী টানা অষ্টমবারের মতো ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে না পেরে কারাগারের সামনে অনশন ও ধর্মঘট করেছিলেন। একইভাবে ইমরান খানের পরিবারও কয়েক সপ্তাহ ধরে তার সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না। এ নিয়ে তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে নানা গুঞ্জন উদ্বেগ তৈরি করলেও সরকার ও পিটিআই উভয় পক্ষই বলেছে, ইমরান খানের শারীরিক অবস্থা ভালো আছে।এক প্রশ্নের উত্তরে আসাদ কায়সার জানান, তিনি পিটিআই নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোটের একজন পদধারী হিসেবে মঙ্গলবার কোয়েটায় একটি জনসমাবেশে উপস্থিত থাকবেন। তবে দলীয় অন্যান্য নেতারা বিক্ষোভে অংশ নেবেন।তিনি আরও জানান, ব্যারিস্টার গোহর আলী খানসহ অন্যান্য নেতারাই ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডিতে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেবেন। এছাড়া সংসদীয় কমিটি ইমরান খানের মুক্তির দাবিও জানিয়েছে। তাদের ভাষায়, পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে না দেওয়াটা মানবাধিকার লঙ্ঘন।গভর্নর রুল নিয়ে সতর্কতা সোমবার (১ ডিসেম্বর) সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে পিটিআই জানায়, খাইবার পাখতুনখোয় গভর্নর রুল জারির গুঞ্জন নিয়ে তারা সতর্ক। দলটি বলছে, এমন কোনো পদক্ষেপ নিলে প্রদেশে আরও অস্থিরতা তৈরি হবে, বিভাজন বাড়বে ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হবে।কমিটি জানায়, এসব উদ্যোগ দেশ বা খাইবার পাখতুনখোয়া- কোনোটিরই স্বার্থে নয়; বরং এটি গুরুতর রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে।আসাদ কায়সার বলেন, কমিটি মনে করে, খাইবার পাখতুনখোয়ার সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত এবং এটিকে অস্থিতিশীল করার যেকোনো প্রচেষ্টা জনগণের ম্যান্ডেটের প্রতি অবমাননা। তিনি অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির কারণে প্রদেশটি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং আইনশৃঙ্খলার অবস্থাও অবনতির দিকে যাচ্ছে।তিনি আরও বলেন, প্রদেশে একটি শান্তি জিরগা অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে সব রাজনৈতিক দল খাইবার পাখতুনখোয়ার বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে একমত হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কোনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। তার ভাষায়, কেন্দ্রের ‘কঠোর’ আচরণের কারণে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এখন অসম্ভব হয়ে পড়েছে।কায়সার বলেন, পাকিস্তান বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখোয়া আর কোনো সংঘাত সহ্য করতে পারবে না। কেন্দ্রের উচিত আফগানিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা।এদিকে, পিটিআইয়ের খাইবার পাখতুনখোয়া শাখা জানিয়েছে, তারা পেশোয়ার-ইসলামাবাদ মোটরওয়ে ইন্টারচেঞ্জে সমাবেশ করবে, যা শেষ হবে সোয়াবি ইন্টারচেঞ্জে গিয়ে। পেশোয়ার পিটিআই সভাপতি ইরফান সেলিম দৈনিক পত্রিকা ডনকে জানান, নওশেরা, চরসাদা, মারদান ও সোয়াবি থেকে আসা বিক্ষোভকারীরা তাদের সঙ্গে যুক্ত হবেন।আরেক পিটিআই নেতা ডনকে বলেন, বিক্ষোভের অংশ হিসেবে তারা হয়তো ইসলামাবাদ-পেশোয়ার মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দিতে পারেন। তিনি আরও জানান, সংসদ সদস্যরা ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডির বিক্ষোভে অংশ নেবেন। অন্যদিকে, দলের বাকি পদাধিকারীরা খাইবার পাখতুনখোয়ার বিক্ষোভে যোগ দেবেন।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়