নিজস্ব প্রতিবেদক
চার দফা দাবিতে সারা দেশের মতো যশোরেও সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি চলছে। ১ ডিসেম্বর থেকে কর্মবিরতি শুরু হওয়ায় শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে। দুই দিনই শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে এসে ফিরে গেছে। শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে আন্দোলন করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। সময়মতো পরীক্ষা না হওয়ায় বিপাকে পড়েছে কোমলমতি শিশুরা। সোমবার যশোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এক শিফটে বিকল্প ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেওয়া হলেও দ্বিতীয় শিফটে পরীক্ষা হয়নি। আর যশোর জিলা স্কুলে দ্বিতীয় দিনের মতো পরীক্ষা গ্রহণ হয়নি। শিক্ষকরা বলছেন, দীর্ঘদিনের বৈষম্য নিরসনের দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে এ কর্মসূচি নিতে বাধ্য হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া হবে।
যশোর জিলা স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সিয়াম জানায়, পরীক্ষা দিতে স্কুলে এসেছে। এখন শিক্ষকরা বলছেন পরীক্ষা হবে না। পরীক্ষা না দিয়েই তাকে বাড়ি ফিরত হলো। আগে থেকে জানতে পারলে ভালো হতো। আরেক শিক্ষার্থী জানায়, স্কুলের আসার পর জানলাম পরীক্ষা হবে না। স্যারেরা আন্দোলন করছেন এজন্য পরীক্ষা হচ্ছে না। পরীক্ষা কবে হবে এসএমএস করে জানিয়ে দিবেন বলেছে। সালাউদ্দিন শাহীন নামে এক অভিভাবক বলেন, শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে আন্দোলন মেনে নেওয়া যায় না। বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ করে শিক্ষকরা আন্দোলন করছে, এটা খুবই খারাপ কাজ। তাদের দাবির বিষয়ে আলোচনা কিংবা পরীক্ষা শেষে করতে পারত। শিশুরা প্রস্তুতি নিয়ে স্কুলে আসছে আর ফিরে যাচ্ছে। এটা তাদের জন্য ক্ষতিকরও বটে! বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নিক সরকার। শিক্ষকরাও তাদের আন্দোলন শিথিল করুক। যশোর জিলা স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক গাজী আনিছুর রহমান বলেন, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এন্ট্রিপদ ৯ম গ্রেডভিত্তিক (ক্যাডার) পদসোপানসহ চার দফা দাবিতে দেশের ৭ শতাধিক সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি চলছে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি আমরাও পালন করছি। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি হওয়ায় দুঃখপ্রকাশ করছি। দীর্ঘদিনের বৈষম্য নিরসনের জন্য বাধ্য হয়েই তারা কর্মসূচি পালন করছি। সরকার দাবি মেনে নিলে শিক্ষার্থীদের সাময়িক ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করো। শুক্র ও শনিবার হলেও আমরা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা গ্রহণ করব। অভিভাবকদের বলব, আপনারা উদ্বিগ্ন হবেন না। যশোর জিলা স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদিন বলেন, চার দফা দাবিতে শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এমন পরিস্থিতিতে বিকল্প জনবল না থাকায় পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না। আশা করছি দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে। যশোর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম জানান, প্রভাতী শিফটের সহকারী প্রধান শিক্ষক সোহেল উদ্দীসসহ ৭ জন দায়িত্ব নিয়ে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়েছেন। এডিসি শিক্ষাকে হাজারবার কল করেছি তিনি কল ধরছেন না। আমাদের নির্দেশনা দিয়েছে কোনো নোটিশ করা যাবে না পরীক্ষা বন্ধের। এদিকে শিক্ষকরা আন্দোলনরত। আমার একার পক্ষে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব না।

