প্রতিদিনের ডেস্ক
শীতকালে মিষ্টি কমলা খাওয়ার মজাই আলাদা। ভিটামিন সি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এটি অপরিহার্য। কিন্তু অনেক সময় তাড়াহুড়োয় বা অসাবধানতায় দু-একটি বীজ পেটে চলে যায়। সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের মনে প্রশ্ন জেগে ওঠে কমলার বীজ গিলে ফেলা স্বাস্থ্যের জন্য কী মারাত্মক ক্ষতিকর?
চলুন, জেনে নেওয়া যাক, কমলার বীজ গিলে ফেললে ঠিক কী হয় এবং এই বিষয়ে জনশ্রুতিগুলো কতটা সত্য।
অনেকে বলেন, কমলালেবুর বীজ গিলে ফেললে পেটে চারা গাছ হয়। এটা কি সত্যি? এর আসল উত্তর, একেবারেই নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। কমলার বীজ থেকে চারা গাছ গজানোর জন্য যে ধরনের অনুকূল পরিবেশ দরকার, আমাদের পাকস্থলীর অভ্যন্তরে তা মোটেও নেই। আমাদের পাকস্থলীতে থাকা শক্তিশালী অ্যাসিড এবং পাচক এনজাইমগুলো বীজকে দ্রুত ভেঙে ফেলে। তাই দু-একটা কমলার বীজ পেটে চলে গেলে নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন, আপনার পেটে কোনো চারা গাছ গজাবে না।
তবে বেশি কমলার বীজ খেয়ে ফেললে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন– কখনও গলায় আটকে যাওয়া। খুব ছোট শিশু বা বয়স্কদের ক্ষেত্রে বীজটি খাদ্যনালিতে সাময়িকভাবে আটকে যেতে পারে, যদিও এটি খুব বিরল। এছাড়া, পরিমাণে খুব বেশি বীজ (যেমন— একমুঠো) গিলে ফেললে সাময়িক পেটের অস্বস্তি, গ্যাস বা পেট ফাঁপার সমস্যা হতে পারে, কারণ আস্ত বীজ হজম করা কঠিন।কমলার বীজের উপকারিতাও রয়েছে। পরিপাকতন্ত্রের অ্যাসিড এবং এনজাইমগুলো বীজটিকে আংশিকভাবে হজম করতে শুরু করে। কমলার বীজ আসলে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার দিয়ে তৈরি। এই ফাইবার হজম হয় না, বরং এটি হজম প্রক্রিয়াকে সাহায্য করে। আর হজম না হওয়া অংশ, অর্থাৎ বীজের খোসা এবং মূল উপাদানটি, শরীরের অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় বর্জ্যের (মল) সাথে স্বাভাবিকভাবেই শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
স্বাভাবিকভাবে ফল খাওয়ার সময় অসাবধানে দু-একটি বীজ পেটে গেলে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। পরিপাকতন্ত্র নিজেই এর ব্যবস্থা করে নেয়। শুধু মনে রাখবেন, কোনো অবস্থাতেই যেন শিশুরা প্রচুর পরিমাণে বীজ গিলে না ফেলে।

