রাজধানীতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে রেস্তোরাঁ। অলিগলিতে, যেখানে-সেখানে, যত্রতত্র এসব রেস্তোরাঁ গড়ে উঠেছে। জানা যায়, ছোট-বড় মিলে রাজধানী ঢাকায় এখন রেস্তোরাঁর সংখ্যা ২৫ হাজারের বেশি। দুই সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করছে এ রকম রেস্তোরাঁ রয়েছে ২ হাজার ৮০০-এর বেশি। রুফটপে রেস্তোরাঁ আছে ৮০ থেকে ১০০টির মতো। অধিকাংশ রেস্তোরাঁর নেই কোনো কাগজপত্র, নেই অনুমোদন। উপেক্ষিত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, জরুরি বহির্গমনের মতো বিষয়গুলো। দেখভাল করার যেন কেউ নেই। কোনো অঘটন ঘটলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। বেইলি রোড় ট্র্যাজেডির পর এসব অবৈধ রেস্তোরাঁর বিষয় সামনে আসছে। অভিযানের খবরও আমরা পাচ্ছি। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও পুলিশ একযোগে অভিযানে নেমেছে। এ সময় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ১২টি রেস্তোরাঁ এবং গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে একটি ভবনের রুফটপ রেস্টুরেন্ট। কয়েকজনকে আটকসহ করা হয়েছে জরিমানা। একই সঙ্গে এদিন রাজধানীতে যেভাবে একের পর এক রুফটপ রেস্তোরাঁ গড়ে তোলা হচ্ছে, তাতে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। ঢাকার আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনে অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে কমিটি গঠনসহ ঝুঁকিপূর্ণ বিল্ডিংয়ের বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, তা চার মাসের মধ্যে জানানোর জন্যও বলা হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশ কতটুকু মানবে, সেটা দেখার বিষয়। হোটেল ও রেস্তোরাঁ বিধিমালা ২০১৬ অনুযায়ী হোটেল ও রেস্তোরাঁ নিবন্ধনের শর্তেই বলা আছে, নিবন্ধন পেতে হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ভবন নির্মাণের অনুমোদন ও শর্ত পূরণ করতে হবে। শুধু তাই নয়, ভবনের পূর্ণাঙ্গ কাঠামোগত প্ল্যান জমা দিয়ে নিবন্ধন নিতে হয় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে। এছাড়া সিটি করপোরেশনকে ব্যবসায়িক সনদ বা ট্রেড লাইসেন্স পেতে হলেও ভবন ব্যবহার অকুপেন্সি ও ভবন সরবরাহকৃত সব সেবার নিরাপত্তা-সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন দরকার। কিন্তু রাজধানীর অভিজাত এলাকাগুলোতে ইচ্ছামতো রেস্তোরাঁ ব্যবসা চলছে। প্রশাসন বলছে, অবকাঠামোগত ত্রæটি, ভবন ব্যবহারে অনিয়ম ও যথাযথ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকা ঝুঁকিপূর্ণ রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে সরকার। ঝুঁকিপূর্ণ রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদে ধারাবাহিকভাবে অভিযান চালাবে সরকার। এছাড়া অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ রেস্তোরাঁ তৈরি এবং তাতে নির্বিঘেœ ব্যবসা পরিচালনার প্রশ্রয়দাতা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরও সাজার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিষয়গুলো আমরা ইতিবাচকভাবে দেখছি। ঢাকাবাসী একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে যাবে কোথায়? ওই এক চিলতে রেস্তোরাঁই ভরসা। কিন্তু সেই ভরসারস্থল যদি হয় মৃত্যুকূপ, তাহলে কোথায় যাব? এখনই সময় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা রেস্তোরাঁ চিহ্নিত করা। তাদের শাস্তির আওতায় আনা হোক। সর্বত্র সজাগ হওয়া জরুরি। কোড মেনে ভবন নির্মাণ জরুরি।
অবৈধ রেস্তোরাঁ চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হোক
Previous article
আরো দেখুন
ক্রমেই গভীর হচ্ছে অর্থনৈতিক সংকট
দেশের অর্থনীতি নানামুখী সংকটে জর্জরিত। নতুন বিনিয়োগ প্রায় বন্ধ। প্রতিনিয়ত কর্মক্ষম জনসংখ্যা বাড়ছে, অথচ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না। চালু কলকারখানাও একের পর এক...
নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে ফুলতলায় আলোচনা সভা
এস এম মমিনুর রহমান, ফুলতলা
গতকাল ৩ ডিসেম্বর ১৬ দিনব্যাপী নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ উদযাপন উপলক্ষে ফুলতলা উপজেলার মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সহযোগিতায় এবং বেসরকারি উন্নয়নের...

