১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

ভূমিসেবা পেতে ভোগান্তি

পুরনো সফটওয়্যারের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বাংলাদেশের সব সহকারী ভূমি অফিসে মিউটেশন, ভূমি উন্নয়ন কর এবং ই-পরচার অনলাইন সেবা মিলছে না। ২৪ নভেম্বর বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তিতে ভূমি মন্ত্রণালয় জানায়, ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে গত ১ ডিসেম্বর সকাল ৯টা পর্যন্ত মিউটেশন, ভূমি উন্নয়ন কর এবং ই-পরচার অনলাইন সেবা বন্ধ থাকবে। গত বুধবার পর্যন্ত এই সেবা বন্ধ ছিল। অনলাইনে আবেদন করতে না পারায় প্রতিদিন নামজারি পরচা পেতে ও খাজনা পরিশোধ করতে নতুন ও পুরনো আবেদনকারী ভূমি মালিকরা অফিসে আসছেন। তারা সফটওয়ারের সমস্যা থাকায় ম্যানুয়ালি এগুলো সমাধান করার দাবি জানাচ্ছেন। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা না থাকায় সেটিও করা যাচ্ছে না। এতে সমস্যায় পড়েন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। জরুরি প্রয়োজনে জমি বিক্রি করতে গিয়েও অনেকে তা করতে পারছেন না। অনেকের বিদেশে যাওয়ার জন্য টাকার দরকার, কিন্তু জমি বিক্রি করতে না পারায় সংশ্লিষ্ট ট্রাভেল এজেন্সিকে টাকা দিতে পারছেন না। অনেকে জরুরি চিকিৎসার ব্যয় নির্বাহের জন্য টাকা জোগাড় করতে জমি বিক্রি করতে পারছেন না। অনলাইনে ভূমির নামজারি, পরচা করা যাচ্ছে না। খাজনার রসিদও কাটা যাচ্ছে না। এই দুটি কাজ করতে না পারায় জমি কেনাবেচাও করা যাচ্ছে না। ঢাকা মহানগরীর ভূমি অফিসগুলোর কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রতিটি সহকারী ভূমি কার্যালয়ে গড়ে এক হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার নামজারি পরচা ও খাজনা পরিশোধের পুরনো আবেদন জমা হয়ে আছে। ২৬ নভেম্বরের আগে করা এসব আবেদন পুরনো সফটওয়্যারের কার্যক্রম বন্ধ করার কারণে মীমাংসা করা যাচ্ছে না। কোন প্রক্রিয়ায় এগুলো মীমাংসা করা হবে, তারও কোনো নির্দেশনা নেই। নতুন সফটওয়্যারেও এগুলো মীমাংসা করার কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৭০ জন পুরনো নামজারি পরচা ও খাজনা পরিশোধের আবেদনকারী অফিসে আসছেন, কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে বিকল্প কোনো পদ্ধতি বা কোন প্রক্রিয়ায় মীমাংসা করা হবে, তার কোনো নির্দেশনা নেই। একই চিত্র পুরো বাংলাদেশের সব সহকারী ভূমি অফিসে। সব অফিসেই নামজারি পরচা ও খাজনা পরিশোধ বন্ধ থাকায় নতুন ভূমি রেজিস্ট্রেশন বন্ধ রয়েছে। অর্থাৎ সারা দেশে জমি কেনাবেচা প্রায় স্থবির। ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেছেন, ‘আগে ভূমিকর, খাজনা, খতিয়ান ও অন্যান্য ভূমিসেবার জন্য পাঁচ ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করা হতো। এখন একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে ভূমিসংক্রান্ত সব সেবা দেওয়া হবে। পাঁচটি সফটওয়্যার একীভূত হওয়ায় সার্ভার জ্যাম হয়ে গিয়েছিল। তবে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। এখনো কিছু সমস্যা হচ্ছে। এর জন্য এক্সপার্ট টিম রয়েছে, যারা সমস্যাগুলো সমাধান করছে।’ আগে ভূমি অফিসের দুর্নীতি, মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে সমালোচনার অন্ত ছিল না। হাতের মুঠোয় ভূমিসেবা নিশ্চিত করতে অনলাইনে খতিয়ান সংগ্রহ, উত্তরাধিকার ক্যালকুলেটর, অনলাইন ডাটাবেইসসহ ভূমিসেবার সর্বক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগ ভূমি অফিসের আমূল বদলে দিয়েছে। অতি দ্রুত ভূমি অফিসের সব সমস্যার সমাধান হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়