একজন ব্যালটে সিল মারছেন, অপরজন বাক্সে ভরছেন

0
24

প্রতিদিনের ডেস্ক
ভোটকেন্দ্রে প্রকাশ্যে অনবরত সিল মেরে ব্যালট বাক্সে ভরছেন দুই ব্যক্তি। এমন একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি গত রোববার (৭ জানুয়ারি) নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে পটুয়াখালী-১ (সদর, মির্জাগঞ্জ ও দুমকি) আসনের নির্বাচন চলাকালে একটি ভোটকেন্দ্রের বলে জানা গেছে।
ওইদিন বিকেল থেকে ৭ মিনিটের ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দুমকি উপজেলার ২২নং জামলা গাবতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তার সামনে ১ মুড়ি ব্যালট পেপারে সিল মেরে ব্যালট বাক্সে ভরতে দেখা যায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই কেন্দ্রের সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান।
সিল মারায় অভিযুক্ত দুই ব্যক্তি হলেন, মো.জসীম সিকদার, তিনি জাতীয় পার্টির সমর্থক। তবে তিনি মশাল প্রতীকের এজেন্ট হিসেবে ওই কেন্দ্রে ছিলেন। এছাড়া অপরজন মো. আবুল বাশার ডাক্তার। তিনি জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবং ওই আসনে জোটের প্রার্থী এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের লাঙ্গল প্রতীকের ওই কেন্দ্রের এজেন্ট ছিলেন।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, দুমকি উপজেলার ২২নং জামলা গাবতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের একটি কক্ষে চেয়ারে বসে আছেন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হাবিবুর রহমান। আর তার সামনেই মো.জসীম সিকদার (কালো ব্লেজার পরা) ব্যালটের মুড়ি নিয়ে গোপন কক্ষে চলে যান এবং সেখানে বসে অনবরত ব্যালট পেপারে টিপসই দিয়ে আবার চলে এসে ওই পেপারেই সিল মারতে থাকেন। এছাড়া তার সামনেই আবুল বাশার (পাঞ্জাবি পড়া) ব্যালট পেপার ভাঁজ করে বাক্সে ভরছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আবুল বাশার ডাক্তার বলেন, ‘আমি লাঙ্গলের এজেন্ট ছিলাম, কিন্তু জসীম মশালের ছিলেন। আমার কাছে হেল্প চাইছে, পরে আমি গিয়া কয়েকটা পেপার ভাঁজ করে বাক্সে ভরছি। পরে যখন দেখছি এটা বেআইনি তখন আমি চলে আসছি।’
তবে অভিযুক্ত জসিম শিকদার বলেন, ‘আমি শুধু আমার ভোটটা দিয়েছি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ভিডিও, ইডিট করে কীভাবে বসাইছে জানি না।’
ভোট কেন্দ্রের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন,‘আমি তাদের চিনি না। তাদের বাধা দিছিলাম এবং প্রিজাইডিং অফিসারকেও জানাইছিলাম। কিন্তু তার কাছে বলেই ঢুকেছে। দুজনই লাঙ্গলের লোক কিন্তু একটু টেকনিক করে একজন লাঙ্গলের এবং অপরজন অন্যজনের এজেন্ট ছিল। বোঝেনইতো।’
কতটি ব্যালেট পেপারে সিল মেরেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এক বান্ডিলের কম না, বেশিও হতে পারে।’
এ ব্যাপারে ওই ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আ. ছাত্তার বলেন, ‘আমি শুনেছি এরকম ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু আমি তখন নামাজে গিয়েছিলাম।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা নূর কুতুবুল আলম বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানি না এবং আমার কাছে কেউ লিখিত অভিযোগও দেয়নি।’