দাম নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নিন

0
35

প্রতিবছরই দেখা যায়, রোজার মাসের আগে আগে বাজার অস্থির হয়ে যায়। ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সিন্ডিকেট দাম বাড়ানোর জন্য নানা অপতৎপরতা শুরু করে দেয়। এ বছরেও যে তার ব্যতিক্রম হবে না, বিভিন্ন আলামত থেকে ক্রমেই তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে এখনো দুই মাসের বেশি সময় বাকি। তা সত্ত্বেও চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা সরবরাহ সংকটের ধুয়া তুলে এরই মধ্যে ছোলা ও সাদা মটরের দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছেন। বাজার বিশেষজ্ঞদের ধারণা, অন্যান্য পণ্যের ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটগুলোও শিগগিরই একই পথে পা বাড়াবে। জানা যায়, গত শনিবার খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারের আড়তগুলোতে মানভেদে প্রতি মণ ছোলা বিক্রি হয়েছে তিন হাজার ৫৪৫ থেকে তিন হাজার ৬৫৭ টাকা। প্রতি মণে ৩৭.৩২ কেজি হিসাবে প্রতি কেজির পাইকারি মূল্য ৯৫ থেকে ৯৮ টাকা পড়ছে। অথচ এক মাস আগেও একই মানের ছোলা বিক্রি হয়েছে ৮২-৮৩ টাকা কেজি দরে। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে দাম বেড়েছে কেজিতে ১৩ থেকে ১৫ টাকা। আর সাদা মটরের কেজি এখন ৬০ থেকে ৬২ টাকা। অথচ ১৫ দিন আগেও দাম ছিল ৫০ থেকে ৫২ টাকা। কেজিপ্রতি বেড়েছে ১০ টাকা। হঠাৎ এমন দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পান না বাজার বিশেষজ্ঞরা। কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইনের মতে, রোজার আগে প্রশাসনের চাপে যদি দাম কমাতে হয়, তাহলেও যেন যথেষ্ট লাভ থাকে, সে জন্যই তাঁরা এখন দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। অনেকে এরই মধ্যে মজুদও শুরু করেছেন। তা ছাড়া রোজার আগে এই সময়ে খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারি বাজার থেকে পণ্যটি সংগ্রহ করবেন। তাই অধিক লাভের আশায় আগেভাগেই দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর মতে, এখন বাজারে যে ছোলা আছে তার বেশির ভাগই আগে আমদানি করা। ডলারের বাড়তি দামের অজুহাত এখানে প্রযোজ্য নয়। নিকট অতীতের রমজান-পূর্ববর্তী বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রতিবছর রোজা শুরুর মাসখানেক আগে থেকেই বাজার অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা পুরোদমে শুরু হয়ে যায়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ছোলার দাম বাড়ানোর বিষয়টিকে একটি আগাম সংকেত হিসেবে দেখা যেতে পারে। তাই বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোরও আগেভাগেই তৎপর হওয়া প্রয়োজন। প্রয়োজনে সরকারিভাবে যথেষ্ট পরিমাণ ছোলা আমদানি করে টিসিবির মাধ্যমে বিক্রি শুরু করা যেতে পারে। একই সঙ্গে সিন্ডিকেটবাজি ও মজুদদারির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।