২০ দিন ধরে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন নেই যশোর জেনারেল হাসপাতালে

0
32

নিজস্ব প্রতিবেদক
গত ২০ দিন ধরে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেই জলাতঙ্ক রোগের অ্যান্টি র‍্যাবিক্স ভ্যাকসিন (টিকা)। ফলে বাইরের ফার্মেসি থেকে চড়া দামে ভ্যাকসিন কিনে এনে শরীরে প্রয়োগ করতে হচ্ছে রোগীদের। ফলে বিনামূল্যে এ চিকিৎসা সেবা না পেয়ে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে রোগীরা। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এ হাসপাতাল থেকে প্রতিদিন টিকা নেয় প্রায় দেড়শ জন। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে ১৯শ এর অধিক মানুষকে। গোটা বছর জুড়ে ১৯ হাজার ১২৩ জনকে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। ঢাকার মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) থেকে আনতে হয় এই ভ্যাকসিনটি। গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে ২০ দিনে ভ্যাকসিন না পেয়ে এ সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন অন্তত দুই হাজার রোগী। অন্যদিকে হাসপাতালে ভ্যাকসিন না থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে হাসপাতালের কিছু আউটসোর্সিং কর্মচারী নিজেদের ক্রয়কৃত ভ্যাকসিন দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভ্যাকসিন দিতে আসা ভুক্তভোগী শহরের বেজপাড়ার পূর্ণিমা বেগম জানান, আমি ভ্যাকসিন দিতে এসেছিলাম। পরে আলমগীর নামে হাসপাতালের এক কর্মচারী আমার কাছ থেকে ৬০০ টাকা নিয়ে আমাকে ভ্যাকসিন দিয়ে দিয়েছে। আপরদিকে হাসপাতালের আরেক আউটসোর্সিং কর্মচারী খায়রুলের বিরুদ্ধেও টাকা নিয়ে ভ্যাকসিন দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের মেহেদী হাসান সানি জানান, আমাকে গত বুধবার বিড়ালে আঁচড় দিয়েছে। স্থানীয় চিকিৎসক বলেছে ভ্যাকসিন দিতে হবে। এখন ভ্যাকসিন দিতে গিয়ে দেখি হাসপাতালে ভ্যাকসিন সাপ্লাই নেই। বাইরে থেকে কিনে দিতে হবে। এখন ফার্মেসিতে গিয়ে শুনে দেখি ভ্যাকসিনের দাম ৫০০ টাকা। এখন কাছে টাকা না থাকায় বাড়ি ফেরত যাচ্ছি। কাল টাকা নিয়ে এসে ভ্যাকসিন দিয়ে যাব। উপজেলার চুড়ামনকাটি থেকে ভ্যাকসিন দিতে আসা ভ্যানচালক রাজ্জাক গাজি বলেন, বাবা আমি গরিব মানুষ ভ্যান চালিয়ে কোনো মতে সংসার চালাই। আমি এত টাকা দিয়ে কি করে ভ্যাকসিন দেব? আমার বাড়ি পাশে এক কবিরাজ আছে এখন ওনার কাছে যাচ্ছি। শুনেছি ১০০/১৫০ টাকা নেয় অনেকে ভালো হয়েছে। পাঁচ বছরের মেয়েকে ভ্যাকসিন দিতে আসা শহরের নাজির শংঙ্করপুরের লিপি বেগম বলেন, আমি জানতাম না যে ভ্যাকসিন সাপ্লাই নেই হাসপাতালে। সঙ্গে বেশি করে টাকা নিয়েও আসিনি। যে টাকা এনেছি তা হাসপাতালে আসতে ও ব্যবস্থাপত্র নিতেই শেষ।
জলাতঙ্ক রোগের টিকা প্রদানের দায়িত্বে থাকা হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স শারমিন আফরোজ বলেন, আমাদের ২৫ ডিসেম্বর থেকে ভ্যাকসিন শেষ হয়ে গেছে। শেষ হওয়ার এক মাস আগে আমরা চাহিদা জানিয়েছি। এখন যারা আসছে বিষটি তাদের জানাচ্ছি। যারা বাইরে থেকে কিনে এনে দিচ্ছে তাদের আমরা ফ্রিতে প্রয়োগ করে দিচ্ছি। হাসপাতালে সাপ্লাই না থাকায় একটু সমস্যা হচ্ছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. পার্থ প্রতিম চক্রবর্তীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে কিছুদিন ধরে হাসপাতালে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন সাপ্লাই নেই। চাহিদা পাঠানো হয়েছে। সামনের সপ্তাহ থেকে রোগীরা আবার বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পাবেন বলে আশা করছি।