গর্ভপাতে মৃত শিশুদের স্মরণে জাঁকজমক উৎসব করে তারা

0
35

প্রতিদিনের ডেস্ক
গর্ভপাত কোনো নারীর জন্যই সুখকর বিষয় নয়। তবে অনেক কারণেই এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে। সন্তান হারানোর শোক অত্যন্ত বেদনাদায়ক। দুর্ভাগ্যবশত বহু শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে মারা যায়। যে কোনো মেয়ের কাছেই গর্ভপাত একটা দুঃস্বপ্নের মতো। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই মারা যাওয়া এক অত্যন্ত বেদনাদায়ক বাবা-মায়ের কাছে। তবে এমন এক দেশ আছে যেখানে গর্ভপাতের ফলে মৃত্য়ু হওয়া শিশুদের স্মরণে উৎসব করাই রীতি।
জাপানে ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে যেসব শিশুর মৃত্যু হয়েছে তাদের শোক জ্ঞাপনে ‘মিজুকো কুয়ো কি’ নামে এক উৎসব। জোর করে গর্ভপাত (অ্যাবর্সন), গর্ভপাত (মিসক্যারেজ), জোরপূর্বক গর্ভপাত বা অন্য কারণে যেসব শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে মারা যায় তাদের স্মরণেই মিজুকো কুয়ো নামে এই বৌদ্ধ উৎসব পালনের রেওয়াজ রয়েছে।
‘মিজুকো কুয়ো কি’ এর আক্ষরিক অর্থ হলো ওয়াটার চাইল্ড মেমোরিয়াল সার্ভিস। জাপানের বিভিন্ন মন্দিরে এই উৎসব পালিত হয়। অনেকে বাড়িতেও এই উৎসব পালন করেন।
মূলত তাদের বিশ্বাস যে শিশুরা জন্মের আগেই মারা যায় তাদের স্বর্গলাভ হয় না। কারণ সে কখনো ভালো কর্মের সুযোগই পায়নি। তাই সেইসব শিশুদের উদ্দেশে সানজু নদীর তীরে সাই নো কাওয়ারা নামে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়। সেই মূর্তির কাছে মাথা নত করে পৃথিবীর আলো দেখার আগেই মৃত্যু হওয়া শিশুদের স্মরণ করে জাপানিরা। শোকপ্রকাশ করে তারা। মূর্তিটিকে সাজানো হয় লাল পোশাকে।
জাপানিরা এই মূর্তিকে বোধিসত্ত্ব জিজোর রূপ বলে মনে করেন। আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে প্রসাদ নিবেদন করা হয়। বিশ্বাস বোধিসত্ত্ব জিজো নামের ওই দেবতা ভূমিষ্ট হওয়ার আগেই যেসব শিশুর মৃত্যু হয়েছে তাদের স্বর্গে নিয়ে যান। বোধিসত্ত্ব জিজোকে ওই শিশুদের রক্ষাকর্তা বলে মনে করা হয়।
তারা আরও বিশ্বাস করেন, তিনি ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে মৃত শিশুদের উপর নজর রাখেন এবং প্রেতদের থেকে রক্ষা করেন যাতে তাদের স্বর্গলাভ হয়। তবে জাপান ছাড়াও চীন এবং থাইল্যান্ডেও এই উৎসব পালন করার রীতি আছে।
সূত্র: অ্যামিউজিং প্ল্যানেট