অভয়নগরে অর্ধেক কাজ করে দরপত্র আহবান

0
18

নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের অভয়নগর উপজেলায় অর্ধেক কাজ করে দরপত্র আহবানের অভিযোগ উঠেছে। দরপত্র(টেন্ডার) হওয়ার আগেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাস ভবনে পার্কিং টাইলস, ছাদের উপরে ইটের গাথুনীসহ বেশকিছু কাজ করা হয়েছে। অর্ধেক কাজ করে ওই কাজের সাথে আরো কাজ দেখিয়ে দরপত্র আহবান করা হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী বলছেন কোটেশন করা যায়নি বলে দরপত্র আহবান করতে হয়েছে। এ নিয়ে ঠিকাদাররা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। একজন ঠিকাদারকে কাজটি পাইয়ে দিতে দরপত্রে অতিরিক্ত শর্ত আরোপ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। ঠিকাদারদের অভিযোগ এর আগেও অতি গোপনে কাজ না করেও অভয়নগর উপজেলা পরিষদ থেকে বিল উত্তোলনের ঘটনা ঘটেছে। উপজেলা পরিষদ সুত্রে জানা গেছে, অভয়নগর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তার বাসার ভিতরে কিছুদিন আগে পার্কিং টাইলস, কিছু ইটের গাথুনী, বাউন্ডারী ওয়ালে কয়েকপিস এঙ্গেল লাগানোসহ বেশ কিছু সংস্কারের কাজ করা হয়েছে। কিন্তু কাজের আগে কোনো টেন্ডার দেয়া হয়নি। কাজের দুইমাস পার হয়ে গেলে শুধুমাত্র ওই কাজের বৈধতা দিতে টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী তার পছন্দের ঠিকাদার মেসার্স মিতু এন্টার প্রাইজকে দিয়ে কাজটি করিয়েছেন। এবং তাকেই কাজটি পাইয়ে দেয়ার জন্য বিভিন্ন শর্ত দিয়ে গত ৯ জানুয়ারী দরপত্র আহবান করেছেন বলে স্থানীয় ঠিকাদাররা অভিযোগ করেছেন। আগামী ২৫ জানুয়ারী দরপত্র দাখিলের দিন। সব মিলিয়ে ২/৩ লাখ টাকার কাজ করা হলেও ১৫ লক্ষ টাকার টেন্ডার করা হয়েছে। কাজ আগে করে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেয়ার ঘটনা জানাজানি হওয়ায় ঠিকাদারদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ঠিকাদাররা দরপত্র বাতিল ও শর্ত প্রত্যাহার করে পুনরায় দরপত্র আহবানের দাবী জানিয়েছেন। জানা গেছে, গত বছরের জুলাই মাসে উপজেলা প্রকৌশলী এস এম ইয়াফি উপজেলার বিভিন্ন ভবনে মেরামতের কাজ না করে তিনটি ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা টাকা উত্তোলন করে তা আত্মসাৎ করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ঠিকাদার কাজী টিটো জানান, উপজেলা পরিষদের প্রকৌশলী সবসময় অনিয়মকে নিয়ম করে চালিয়ে দিতে চায়। চরম দুর্নীতি করে চললেও কোন খুটির জোরে বেঁচে যান জানিনা। তার সম্পদের হিসাব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিলে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। আমরা প্রতিকার না পেলে তার বিরুদ্ধে বৃহত্তর কর্মসুচি গ্রহন করবো। একই কথা জানান অভয়নগরের একাধিক ঠিকাদার। দরপত্রে দর বেধে না দিলে সরকারের অনেক লাভ হতো। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, উপজেলা পরিষদে অনেকবার প্রকৌশলীর অনিয়ম নিয়ে কথা বলেছি কোন লাভ হয়নি। উপজেলা প্রকৌশলী এস এম ইয়াফি বলেন, ‘কাজের ঠিকাদার নিয়োগ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। উপজেলা পরিষদের রেজুলেশনের মাধ্যমে তা করা হয়েছে। আমাকে রেজুলেশন দিয়েছে তাই টেন্ডার করেছি।’ কাজ শেষ করে কেন টেন্ডার করা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ কোটেশনের মাধ্যমে বিল দিতে বলেছিল সেটা আইন সিদ্ধ নয় তাই টেন্ডার করেছি।’ পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য অতিরিক্ত শর্তের ব্যাপারে জানতে চাইলে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। মেসার্স মিতু এন্টার প্রাইজের মালিক ওলিয়ার রহমান বলেন, অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাস ভবনে পার্কিং টাইলস, ছাদের উপরে ইটের গাথুনীসহ প্রায় পাঁচ থেকে ছয় লক্ষ টাকার কাজ আমি করেছি। এখনও টাকা পায়নি। কাজটি টেন্ডারের আগেই করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম আবু নওশাদ বলেন, ‘পিপিআর অনুযায়ী টেন্ডার হচ্ছে। কাউকে কাজ দেয়ার জন্য করা হচ্ছে না। উপজেলা প্রকৌশলীকে নিয়ম অনুযায়ী করতে বলা হয়েছে।’