ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেয়ারবাজার, আধাঘণ্টায় দুই’শ কোটি টাকার লেনদেন

0
24

প্রতিদিনের ডেস্ক
ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার পর প্রথম কার্যদিবস রোববার শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হলেও দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার লেনদেনের শুরুতেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেয়ারবাজার।
দরপতন থেকে বেরিয়ে এসেছে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান। ফলে সূচকেও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সেই সঙ্গে লেনদেনেও ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক। এতে প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেনে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে প্রায় দুই’শ প্রতিষ্ঠান। ফলে প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ১২ পয়েন্ট। আর লেনদেন দুই’শ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
তবে অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ফলে মূল্যসূচকও ঋণাত্মক অবস্থায় রয়েছে। তবে এ বাজারটিতেও লেনদেনে ভালো গতি দেখা যাচ্ছে।
এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দেশের শেয়ারবাজারে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিলে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে শেয়ারবাজার থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বিএসইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৩৫ প্রতিষ্ঠানে ফ্লোর প্রাইস রেখে বাকি সব প্রতিষ্ঠান থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার থেকে এটি কার্যকর হয়েছে। মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপে রোববার লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ২১৪ পয়েন্ট পড়ে যায়। তবে শেষ দিকে বিক্রির চাপ কমায় প্রধান সূচক ৯৬ পয়েন্ট কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
এ পরিস্থিতিতে সোমবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে ডিএসইর প্রধান সূচক ৪৬ পয়েন্ট কমে যায়। অবশ্য অল্প সময়ের মধ্যেই ঘুরে দাঁড়ায় শেয়ারবাজার।
দরপতনের তালিকা থেকে বেরিয়ে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের প্রথম আধাঘণ্টাজুড়েই এ প্রবণতা অব্যাহত থাকে। ফলে দাম বাড়ার তালিকা বড় হওয়ায় পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১০টা ৪২ মিনিটে ডিএসইতে ১৯৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৪টির। আর ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক বেড়েছে ১৪ পয়েন্ট। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ১৪ পয়েন্ট বেড়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। এ সময় পর্যন্ত ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৭০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১২৩ পয়েন্ট কমেছে। লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৪ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ১১২ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৪৮টির, কমেছে ৫৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৭টির।
শেয়ারবাজারে লাগাতার পতন ঠেকাতে না পেরে, গত চার বছরে কয়েক দফায় শেয়ারে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। প্রথমবার ২০২০ সালে মার্চে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করলেও তুলে নেওয়া হয় ২০২১ সালের জুলাইয়ে
এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ২০২২ সালের জুলাইয়ে আবারও ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে বিএসইসি। এ পর্যায়ে শেয়ার লেনদেন ব্যাপক কমে গেলে সমালোচনায় পড়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সম্প্রতি ফ্লোর প্রাইস নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠলে গত বৃহস্পতিবার ৩৫ প্রতিষ্ঠান বাদে বাকিগুলোর ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয় বিএসইসি।
যে ৩৫ প্রতিষ্ঠানে ফ্লোর প্রাইস রয়েছে
শেয়ারবাজারের স্বার্থে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হলেও ৩৫ প্রতিষ্ঠানে ফ্লোর প্রাইস রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। এই ৩৫ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, বারাকা পাওয়ার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, বেক্সিমকো, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, বিএসআরএম স্টিল, বিএসআরএম লিমিটেড, কনফিডেন্স সিমেন্ট, ডিবিএইচ, ডরিন পাওয়ার, ইনভয় টেক্সটাইল, গ্রামীণফোন, এইচআর টেক্সটাইল, আইডিএলসি, ইনডেক্স এগ্রো, ইসলামী ব্যাংক, কেডিএস লিমিটেড, কেপিসিএল, কেটিএল, মালেক স্পিনিং, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল পলিমার, ওরিয়ন ফার্মা, পদ্মা অয়েল, রেনেটা, রবি, সায়হাম কটন, শাসা ডেনিমস, সোনালী পেপার, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, শাহিনপুকুর সিরামিকস, শাহজিবাজার পাওয়ার, সামিট পাওয়ার এবং ইউনাইটেড পাওয়ার।