ড. ইউনূসের পক্ষে ড. রেহমান সোবহান : আবেগ বনাম যুক্তি

0
47

মোনায়েম সরকার
গত ২১ জানুয়ারি অধ্যাপক রেহমান সোবহানের একটি লেখা দৈনিক প্রথম আলোতে ছাপা হয়েছে। ‘কার জন্য ঘণ্টা বাজছে’ শিরোনামের লেখাটি পড়ে কারো মনে এ প্রশ্ন উঠতেই পারে যে এটা কি সত্যি কিংবদন্তি অর্থনীতিবিদ, প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী এবং চিন্তার স্বাধীনতার সমর্থক রেহমান সোবহানের লেখা? কর্মজীবনজুড়ে যিনি প্রচলিত অনেক ধ্যানধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন এবং সত্য ও ন্যায়বিচারের অনুসন্ধানে সচেষ্ট থেকেছেন, তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো একজন আত্মস্বার্থ চিন্তায় মগ্ন মানুষের পক্ষে কলম ধরলেন, কোনো সংশয় না রেখে?
আমরা এটা জানি যে, ড. কামাল হোসেন ও হামিদা হোসেনের সহযোগিতায় রেহমান সোবহান ১৯৬৯ সালে সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ‘ফোরাম’র গোড়াপত্তন করেন। এই প্রকাশনা বাঙালির জাতিগত আকাঙক্ষা, সামরিক ও ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রের ধারণার বিরুদ্ধাচরণ এবং সর্বোপরি, পল্লী অঞ্চল ও শ্রমিক সম্প্রদায়ের সদস্যদের নানা বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় রেহমান সোবহান প্রবাসী সরকারের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন এবং বৈশ্বিক সমর্থন ও সহায়তা আদায়ের জন্য নিরলসভাবে কাজ চালিয়ে যান। স্বাধীনতার পর তিনি পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ছিলেন এবং যুদ্ধোত্তর পুনর্গঠন প্রচেষ্টায় অমূল্য অবদান রাখেন। তিনি আমার মতো বাম-গণতান্ত্রিক চিন্তায় বিশ্বাসী অনেক মানুষের শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি।
তিনি যখন ড.ইউনূসের মতো একজন বিতর্কিত আচরণের মানুষের পক্ষে ওকালতি করেন, তখন অবাক না হয়ে পারি না। কোনো মানুষ আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত ও খ্যাতিমান হয়ে উঠলে কি নিজ দেশের আইন আদালতের ঊর্ধ্বে উঠে যান? নিজের বিত্তবৈভব বাড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক খ্যাতি ও সুনাম কাজে লাগিয়ে অন্য মানুষের ঠকিয়ে, বঞ্চিত করে আইনের আওতামুক্ত থাকার লাইসেন্স পেয়ে যান?
ড. ইউনূস বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী, এটা নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। তিনি বিশ্বের অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বন্ধু ও সুহৃদ এটাও ঠিক? এমন বিশ্বজুড়ে খ্যাতির অধিকারী আর কোনো মানুষের নাম কি আমরা জানি যিনি লাভজনক ব্যবসায় জড়িয়ে শ্রমিক-কর্মচারীদের ঠকিয়েছেন? ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চলতি বছরের প্রথম দিন ঢাকার একটি শ্রম আদালত ছয় মাসের কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন। এটা নিশ্চয়ই দুঃখজনক। কিন্তু এই বিচার প্রক্রিয়া এড়িয়ে গেলে সেটা কি ওই বক্তব্যকেই সঠিক প্রমাণ করতো না যে ‘আইন হলো মাকড়সার জাল, যা শুধু দুর্বলদের আটকাতে পারে’! আইনের চোখে খ্যাতিমান আর অখ্যাত সবাই সমান- এটা তো রেহমান সোবহানের কাছেই আমরা শুনেছি, শিখেছি। কিন্তু এখন ড. সোবহানের অবস্থান ভিন্ন হলো কেন?
শ্রম আদালতে ড. ইউনূসের মামলা দ্রুত গতিতে সম্পন্ন হওয়া পছন্দ হয়নি রেহমান সোবহানের। তিনি লিখেছেন, ‘অন্যায্য একটি সমাজে শ্রম অধিকার লঙ্ঘনের অগুনতি ঘটনা নিয়মিত ঘটছে। এ ধরনের হাজার হাজার মামলা শ্রম আদালতে বিচারের অপেক্ষায় পড়ে আছে। যেখানে মামলার ফাইল চলে শম্বুকগতিতে, রায় হয় কদাচিৎ। আর রায় হলেও কারাদণ্ডের সাজা বিরল। সরকারের অতীত কর্মকাণ্ডের কারণে খুব কম লোকই এ কথা বিশ্বাস করেন যে অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এমন একটি মামলা করেছেন, যে মামলার বৈশ্বিক প্রভাব থাকতে পারে। আর মামলাটি অভূতপূর্ব গতিতে এগিয়েছে, যাতে রেকর্ড কম সময়ের মধ্যে সাজার রায় হয়ে গেছে।’
আমি যদি রেহমান সোবহানের আইডিয়া ধার করেই বলি, এই মামলায় ড. ইউনূসের নাম থাকার কারণেই বিচার-সংশ্লিষ্ট সবাই নড়েচড়ে বসে দ্রুত রায় দিয়েছেন? এই মামলা ঝুলিয়ে রাখলে আলোচনা সমালোচনা হতো না?
রেহমান সোবহান লিখেছেন, ‘ড. ইউনূসের মতো উচ্চ মর্যাদার একজন ব্যক্তিকে নিজেদের মধ্যে পাওয়ার সৌভাগ্য যখন একটি জাতির হয়, তখন আশা করা যেতে পারে, দেশের সেবায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নেতৃত্ব তাঁর কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করবে। আর সরকারের দেশ গঠনের কাজে সহায়তার জন্য এ ধরনের সব ব্যক্তি তাঁদের শক্তি-সামর্থ্য দিয়ে কাজ করবেন।’
আমার প্রশ্ন হলো, ড. ইউনূস যদি বিশাল মাপের মানুষ হয়ে থাকেন, তাহলে তার ক্ষুদ্রতা পরিহার করে চলা উচিত। নেতৃত্ব যদি তার কাছে না পৌঁছানোর ক্ষুদ্রতা দেখিয়ে থাকে, তাহলে তার তো উচিত ছিল দেশের ও দেশের মানুষের বৃহত্তর স্বার্থে নেতৃত্বের কাছে পৌঁছানোর উদারতা দেখানো। তিনি কখনো তা করেছেন?
রেহমান সোবহান লিখেছেন, ‘অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে এই কল্পিত বা বাস্তব মতপার্থক্যের বিষয়ে সমাধান করতে সংলাপ আয়োজনে আমাদের নেতৃত্ব কোনো ধরনের চেষ্টা করেছেন, এমন কিছু আমার জানা নেই। জাতির সম্পদ হিসেবে কীভাবে তাঁকে কাজে লাগানো যায় বা একজন দূত হিসেবে যেসব বিশ্বনেতা, যাঁরা সাধারণত আমাদের মন্ত্রী ও কূটনীতিকদের নাগালের বাইরে থাকেন, তাঁদের কাছে তাঁকে কীভাবে পাঠানো যায়, সেই উপায় খুঁজে বের করতে আমাদের নেতারা কোনো চেষ্টাই করেননি।’
তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেই যে আমাদের নেতারা তার কাছে যাওয়ার কোনো চেষ্টা করেননি। কিন্তু ড. ইউনূস কী সে চেষ্টা করেছেন? তিনি তো মহাজ্ঞানী, মহাজন। তিনি কেন এই নীতি অনুসরণ করলেন না- তুমি অধম, তাই বলিয়া আমি উত্তম হইবো না কেন? কথায় আছে : ‘উত্তম নিশ্চিত চলে অধমের সাথে, তিনিই মধ্যম যিনি চলেন তফাতে’! বিশ্ব নেতাদের সাক্ষাতের সময় তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে দেশের স্বার্থে কোনো বক্তব্য তুলে ধরেছেন?
ড. মুহাম্মদ ইউনূস কি বাংলাদেশকে নিজের দেশ বলে মনে করেন? কোনো জাতীয় দিবসে কেন তাকে দেখা যায় না? তিনি শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধে কখনো গিয়েছেন? বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি কখনো শ্রদ্ধা দেখিয়েছেন? আগাগোড়া একজন একরোখা, উদ্ধত চরিত্রের মানুষের প্রতি রেহমান সোবহানের মতো যুক্তিবাদী ব্যক্তির আবেগ আপ্লুত হওয়ার পক্ষে আমি তেমন কোনো যুক্তি খুঁজে পাই না।
ড. ইউনূসের পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে অধ্যাপক রেহমান সোবহান এমন কিছু কথা লিখেছেন যা সরকারবিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের মুখে আমরা শুনে অভ্যস্ত। তিনি লিখেছেন : ‘হাজার হাজার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কারাগারে বন্দী। বিপুলসংখ্যক ভুক্তভোগী জামিন ছাড়াই জেল খাটছেন। কিংবা মাথার ওপর ঝুলে থাকা বিপদ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) বা সাইবার নিরাপত্তা আইনের (সিএসএ) মামলায় অভিযুক্ত হচ্ছেন। যা যথাযথ প্রক্রিয়ায় নাগরিক সুরক্ষাকে অগ্রাহ্য করার মাধ্যমে আমাদের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘনের চিত্র তুলে ধরে। সাদাপোশাকের ব্যক্তিরা কোনো পরোয়ানা ছাড়াই মধ্যরাতে যেকোনো বাড়িতে আসতে পারেন এবং আপনাকে টেনেহিঁচড়ে কোনো অজানা গন্তব্যে নিয়ে তাঁরা আপনার সঙ্গে যা ইচ্ছা তা-ই করতে পারেন।
আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এ ধরনের কাজ এ জন্যই করতে পারে, তারা আইনের সামনে নিজেদের জবাবদিহির ঊর্ধ্বে মনে করে। অন্যদিকে নাগরিকদের মধ্যে এই ভয় কাজ করে যে তাঁরা তাঁদের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় আর আমাদের আদালতের ওপর নির্ভর করতে পারছেন না। টানা কয়েকবার অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন পরিচালনায় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) স্বাধীনতা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
আমাদের দুদককে রাজনৈতিক বিরোধীদের বিচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দলের নেতা, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও পছন্দের ব্যবসায়িক বন্ধুদের বিদ্যমান সুস্পষ্ট দুর্নীতির ব্যাপারে তারা যেন অন্ধ। সংসদে এখন একচেটিয়া ক্ষমতাসীন দলের আধিপত্য। নির্বাহী বিভাগকে জবাবদিহি করার একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে খোদ সংসদ তার দায়িত্ব থেকে পিছু হটেছে। জনগণের কিছু গুরুতর উদ্বেগ চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে এই সংসদের তৎপরতার অভাব প্রকট।’
রেহমান সোবহানের উপরোক্ত বক্তব্য থেকে মনে হয়, বাংলাদেশে বুঝি জঙ্গলের শাসন চলছে। এটা কি সঠিক? সংসদে ক্ষমতাসীন দলের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার নেপথ্য কাহিনী কি রেহমান সোবহানের অজানা? বিএনপির নির্বাচন বর্জনের রাজনীতি কি সমর্থনযোগ্য? ক্ষমতাসীন দল হয়তো সব ক্ষেত্রে যথাযথ গণতান্ত্রিক আচরণ করছে না কিন্তু বিরোধী দল কি গণতান্ত্রিক রীতিনীতি চর্চায় আছে?
আন্দোলনের নামে সহিংসতা, আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা কোনো গণতান্ত্রিক দেশে সম্ভব? সরকারের সমালোচনা করে কথা বলা আমাদের দেশের রাজনৈতিক ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারের ত্রুটি চোখে পড়ে। বিরোধী দলের দায়িত্বশীলতার বিষয়ে কেউ কথা বলেন না। ড. রেহমান সোবহানও সেই সহজ জনপ্রিয়তারপথেই কি হাঁটলেন?
লেখাটি শেষ করছি সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের একটি লেখা থেকে কিছুটা উদ্ধৃত করে। বিভুরঞ্জন সরকার লিখেছেন : ড. ইউনূস খ্যাতির কাঙাল। ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর ড. ইউনূস রাজনীতির প্রতিও আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন। বিশেষ করে সেনাসমর্থিত ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের নেত্রীকে মাইনাস করে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসতে চেয়েছিলেন। সেই সময় তিনি নাগরিক শক্তি নামে একটি দল গঠনের ঘোষণাও দিয়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা বিশ্বও ওই সময় বাংলাদেশের রাজনীতিতে তৃতীয় ধারা সৃষ্টি করে ইউনূসকে সামনে আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, ২০০৭ সালের ওয়ান-ইলেভেনের অন্যতম কুশীলবও ইউনূস। এ প্রসঙ্গে তৎকালীন সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদ তাঁর ‘শান্তির স্বপ্নে’ গ্রন্থে লিখেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান হিসেবে তাঁদের প্রথম পছন্দ ছিল ড. মুহাম্মদ ইউনূস। কিন্তু ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁদের জানান, স্বল্পকালীন সময়ের জন্য তিনি সরকারপ্রধান হতে রাজি নন, তাঁর ইচ্ছা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতায় থাকা।
ড. ইউনূস রাজনৈতিক দল গঠন করে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতায় থাকার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা পূরণ হয়নি। এই ব্যর্থতার জন্য তিনি আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনাকে দায়ী করেন কি-না, তা জানা না গেলেও বর্তমান সরকারের প্রতি তাঁর বিরূপতা গোপন নয়। ইউনূসের সঙ্গে বর্তমান সরকারের সেই টানাপড়েন তীব্র হয়, যখন তিনি আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ও কার্যক্রমে লবিস্ট হিসেবে কাজ করতে থাকেন। অভিযোগ রয়েছে, কথিত দুর্নীতির আন্তর্জাতিক অপপ্রচারের মাধ্যমে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বাতিলের নেপথ্যেও ছিলেন ড. ইউনূস।
যদি এগুলোকে ‘আওয়ামী প্রপাগান্ডা’ হিসেবে মনে করা হয়, তাহলে প্রশ্ন আসে, ড. ইউনূস তাঁর আন্তর্জাতিক খ্যাতি ও পরিচিতিকে বাংলাদেশের কোন স্বার্থে কাজে লাগিয়েছেন, তার দুয়েকটা দৃষ্টান্ত কি দিতে পারবেন? এই যে এত বড় রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা বাংলাদেশের ওপর চেপে বসেছে, তা নিয়ে কি ড. ইউনূস কখনো কিছু বলেছেন? প্রভাব খাটিয়েছেন কিংবা বিশ্বনেতাদের দিয়ে খোলা চিঠি লিখিয়েছেন?
করোনাকালে মানুষের স্বাস্থ্যসেবা কিংবা টিকা-ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে কি তিনি তাঁর পরিচিতি কাজে লাগিয়েছেন? ড. ইউনূসের মানবিক সেবা কার্যক্রমের কোনো নমুনা কি ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে-পরে সংখ্যালঘুদের ওপর ঘৃণ্য নিপীড়নের সময় দেখা গেছে? দেশে রাজনৈতিক সহিংসতার ব্যাপারে কখনো মুখ খুলেছেন? সাম্প্রদায়িক শক্তির অপতৎপরতা কিংবা জঙ্গিবাদের উত্থান ও বিপদ নিয়েও তো তাঁর ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া নেই। এসব থেকে কি এটা প্রমাণ হয় যে তিনি অতিদরিদ্র ও বিপদাপন্ন মানুষের প্রতি দরদি?
আমার শেষ প্রশ্ন : ড. মুহাম্মদ ইউনূস কি বাংলাদেশকে নিজের দেশ বলে মনে করেন? কোনো জাতীয় দিবসে কেন তাকে দেখা যায় না? তিনি শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধে কখনো গিয়েছেন? বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি কখনো শ্রদ্ধা দেখিয়েছেন? আগাগোড়া একজন একরোখা, উদ্ধত চরিত্রের মানুষের প্রতি রেহমান সোবহানের মতো যুক্তিবাদী ব্যক্তির আবেগ আপ্লুত হওয়ার পক্ষে আমি তেমন কোনো যুক্তি খুঁজে পাই না।
লেখক: রাজনীতিক, লেখক ও চেয়ারম্যান, বিএফডিআর।