ব্যাংক কর্মকর্তা দীপান্বিতার মৃত্যু ফুটপাতে জনসাধারণের চলাচলে নিরাপত্তায় ব্যর্থতা নিয়ে রুল

0
23

প্রতিদিনের ডেস্ক
রাজধানীর মৌচাক এলাকায় ভবন থেকে ইটের ব্লক মাথায় পড়ে ব্যাংক কর্মকর্তা দীপান্বিতা বিশ্বাসের মৃত্যুর ঘটনায় ফুটপাতে সাধারণ মানুষের চলাচলে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।সোমবার (২৯ জানুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি আতাবুল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোস্তাফা মোশাররফ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ ও আনিছ উল মাওয়া আরজু।
মৌচাক এলাকায় ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ভবন থেকে ইটের ব্লক মাথায় পড়ে ওই নারী ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত কমিটি গঠন ও ভুক্তভোগীর পরিবারকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করা হয়েছে। গত বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোস্তাফা মোশাররফ হোসেন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করেন।
রিটে সড়ক পরিবহন এবং সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান, ঢাকার জেলা প্রশাসক ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে বিবাদী করা হয়।
ব্যাংক কর্মকর্তা দীপান্বিতার মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি নিশ্চিতে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন অনুসন্ধান কমিটি গঠনের অন্তর্বর্তী নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। অনুসন্ধান কমিটিতে অন্তত একজন বিচারিক কর্মকর্তাকে রাখতেও আর্জি জানানো হয়েছে।
এ নির্দেশনা চাওয়ার পাশাপাশি ঢাকা শহরের সাধারণ নাগরিকদের জন্য নিরাপদ ও সুরক্ষিত ফুটপাত নিশ্চিত করতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে রিটে রুল জারির আর্জি জানানো হয়। একই সঙ্গে দীপান্বিতার পরিবারকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে প্রশ্নেও রুল চাওয়া হয় রিটে।
আদালত রুল জারি করলে, সেই রুল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় দীপান্বিতার পরিবারকে ৫০ লাখ টাকার কম নয়- এমন উল্লেখযোগ্য পরিমাণ টাকার অন্তর্বর্তীকালীন ক্ষতিপূরণ দিতেও রিটে আর্জি জানানো হয়েছে।
রিটটি গত বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করা হলে শুনানির জন্য রাখা হয়।
খুলনার মেয়ে দীপান্বিতা বিশ্বাস বাংলাদেশ ব্যাংকের সদরঘাট শাখার সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ১০ জানুয়ারি কর্মস্থল থেকে অফিসের বাসে রওনা দিয়ে শান্তিনগরে নামেন তিনি। এরপর হেঁটে মগবাজারের গাবতলার বাসায় ফিরছিলেন। মৌচাক ফ্লাইওভারের নিচের ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ফখরুদ্দীন রেস্টুরেন্টের পাশের একটি ভবন থেকে তার মাথায় ইটের ব্লক পড়লে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় ১১ জানুয়ারি তার স্বামী তরুণ বিশ্বাস রমনা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি রমনা থানার পাশাপাশি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) ছায়া তদন্ত করছে।
তবে কোথা থেকে এবং কীভাবে ইট বা কংক্রিটের ব্লকটি দীপান্বিতার মাথায় পড়েছে, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।