ভাষার মাস একুশ

0
6

সোনিয়া আফরিন
‘আমার ভাই এর রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ -রক্তে রাঙানো সেই ভাষা আন্দোলনের মাস শুরু হলো । ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক প্রভুত্ব ও শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ। ফেব্রুয়ারি মাস একদিকে শোকাবহ হলেও অন্যদিকে গৌরবোজ্জ্বল । পৃথিবীর একমাত্র জাতি বাঙালি ভাষার জন্য জীবন দিয়েছিল। যা এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবেও স্বীকৃত। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারির সেই আন্দোলনে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিকের রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাতি পায় মাতৃভাষার মর্যাদা এবং আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেরণা। তারই পথ ধরে আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
বায়ান্নর আগুনঝরা সে দিনগুলো বিশ্বের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে, থাকবে। প্রতি বছরের মতো আবারও এল ভাষার মাস। ভাষা শহীদদের স্মৃতিবিজড়িত ফেব্রুয়ারি এই দেশের মানুষের চেতনায় এক অনির্বাণ বাতিঘর। এই আলোর স্পর্শে অন্যায়ের কাছে মাথানত না করার এবং প্রবল দেশাত্মবোধের অন্যরকম এক আবেগ ও উদ্দীপনায় জেগে ওঠে সর্বস্তরের মানুষ। পাকিস্তানিদের সঙ্গে হিসেব-নিকেশের হালখাতার শুরুতেই রক্তের আঁচড় দিয়ে বাঙালি শুরু করে তার অস্তিত্বের লড়াই। পলাশীর আম্রকাননে হারিয়ে যাওয়া সেই সিরাজদ্দৌলা আবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রূপে এ লড়াইয়ে সেনাপতি হিসেবে আবির্ভূত হন। ’৫২ সালে যে আগুন জ্বলেছিল রাজধানী ঢাকা শহরে সে আগুন যেন ক্রমান্বয়ে ছড়িয়ে পড়তে থাকে দেশের আনাচে-কানাচে সবখানে। যে আগুন জ্বলেছিল মোর প্রাণে, সে আগুন ছড়িয়ে গেল সবখানে সবখানে সবখানে। বাঙালির বুকের ভেতর জ্বলে উঠা আগুন যেন সহস্র বাঙালির মধ্যে প্রবাহিত হতে থাকে। যা এসে শেষ হয় একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর চুড়ান্ত বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে। পৃথিবীর মানচিত্রে জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।