শ্যামনগরে সুদচক্রের কবলে পড়ে বসতবাড়ি হারিয়ে নিখোঁজ মুন্ডা পরিবারের চার সদস্য

0
12

উৎপল মণ্ডল,শ্যামনগর
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে মহাজনের সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় রনজিৎ মুন্ডা নামে এক ব্যক্তির বসতবাড়ি দখলের অভিযোগ উঠেছে।এতে পরিবারের চার সদস্যসহ নিখোঁজ রয়েছেন রনজিৎ। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের কালিঞ্চী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিখোঁজরা হলেন, রনজিৎ মুন্ডা, তার স্ত্রী সেফালী মুন্ডা, তাদের ছেলে সতীষ মুন্ডা, সতীষের মেয়ে স্মৃতি মুন্ডা ও ছেলে অভিজিৎ মুন্ডা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে রনজিৎ মুন্ডা টেংরাখালী গ্রামের আনিছুর রহমানের কাছ থেকে বার্ষিক চার হাজার টাকা সুদে ৭৬ হাজার ৫০০ টাকা ঋণ নেন। টাকা নেওয়ার সময় আনিছুর কৌশলে রনজিতের কাছ থেকে নন জুডিশিয়াল ফাঁকা স্ট্যাম্পে টিপসই নেওয়াসহ জমির দলিল রেখে দেন। পরে রনজিৎ প্রতি বছর আনিছুরকে সুদের চার হাজার টাকা দিয়ে আসছিলেন। তবে রনজিৎ তাকে ১১ কাঠা জমি লিখে দিয়েছেন দাবি করে তার বসতবাড়ি দখলসহ সেখানে পুকুর খনন করতে শুরু করেন আনিছুর।
এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় ইউপি সদস্য আলী আজগর বুলু, সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল গাফ্ফার তরফদারসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সালিশসহ বাড়ির মাপ জরিপ করা হয়। মাপ জরিপ করে রনজিতের ঘরের বারান্দায় খুঁটি বসান আনিছুর। পরে ওইদিন রাত থেকে রনজিতের পরিবারের সবাই নিখোঁজ রয়েছেন। স্থানীয় গ্রাম পুলিশ গোপাল মুন্ডা বলেন, রনজিৎ ও তার পরিবারের সদস্যরা নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে স্থানীয় সুদের ব্যবসায়ি আবুল কালাম, আকবার শেখ, নূরালী মোল্যা, মহরম কাগুচী, আব্দুল আজিজ সুদের টাকার জন্য রনজিতের বাড়িতে আসছেন। স্থানীয় মনোরঞ্জন মুন্ডা ও আবু নুর আলম মোল্যা বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে রনজিৎ ও তার পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তারা বলেন, আনিছুর জোর করে আমাদের বাড়ি দখল করেছেন। পরিবার নিয়ে কোথায় থাকবো? পরদিন সকাল থেকে রনজিৎ ও তার পরিবারের কোন সদস্যের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয় ইউপি সদস্য আলী আজগর বুলু বলেন, চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় আমিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা রনজিৎ-আনিছুরের সালিশে ছিলাম। তবে মাপ জরিপের বিষয়টি রনজিৎ মেনে না নেওয়ায় আবারও সালিশের দিন ধার্য্য করা হয়। এরপর থেকে ওই পরিবার নিখোঁজ রয়েছে বলে শুনেছি। রমজান নগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শেখ আল মামুন বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। আমরা তাদের খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা করেছি।তবে, অভিযুক্ত আনিছুর রহমানের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।