এই শীতে কোন ক্যাম্পাস কোন উৎসবে মেতেছে

0
14

প্রতিদিনের ডেস্ক:
নাম শুনে চট করে মনে হতে পারে, পৌষপার্বণের আইন নিয়ে কিছু বলা হচ্ছে! আদতে তা নয়। ‘আইনে পৌষপার্বণ’ শিরোনামে দারুণ এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ২৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনেক্স প্রাঙ্গণে গান, নাচ, কবিতার আয়োজন ছাড়াও ছিল পিঠাপুলিসহ খাবারের বিভিন্ন স্টল। সার্বিক আয়োজন সম্পর্কে আইন বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী অনিন্দ্য দাস বলেন, ‘আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা যে কী অসম্ভব মেধাবী, সাংস্কৃতিকভাবে বিকশিত, সেটা পৌষপার্বণ না হলে বুঝতাম না। আমরা পৌষপার্বণকে একটি স্বতন্ত্র পার্বণ হিসেবেই প্রতিবছর পালন করতে চাই, যা নির্দিষ্ট কিছু মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। আমরা চাই পৌষপার্বণ হবে আইন বিভাগের প্রতিটি শিক্ষার্থীর পার্বণ। পৌষপার্বণ আয়োজনটির বিশেষত্ব হলো, এখানে একটি থিমভিত্তিক চিত্রকর্মের প্রদর্শনীও হয়। এ বছর চিত্রকর্মের থিম ছিল উত্থান।’ আয়োজন উপলক্ষে সপ্তাহজুড়েই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মহড়া, সাজসজ্জা ও তহবিল সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত ছিলেন শিক্ষার্থীরা।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কুহেলিকা উৎসব
আয়োজনটিকে একটি সাংস্কৃতিক মিলনমেলা বলে দাবি করছে সাংস্কৃতিক ও পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য আয়োজনটিকে একটি সাংস্কৃতিক মিলনমেলা বলে দাবি করছে সাংস্কৃতিক ও পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্যছবি: সংগৃহীত
উৎসবমুখর পরিবেশে ২২ থেকে ২৪ জানুয়ারি কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো কুহেলিকা উৎসব। আয়োজনটিকে একটি সাংস্কৃতিক মিলনমেলা বলে দাবি করছে সাংস্কৃতিক ও পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য। সাংস্কৃতিক এই আয়োজনে বিতর্ক, গান, নাচ, আবৃত্তি, মূকাভিনয় ছাড়াও ছিল বেশ কয়েকটি স্টল। স্টলগুলোকে পাটিসাপটা, চিতই, ভাপা পিঠাসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবার ও পণ্যে সাজিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও কয়েকটি সংগঠনও উৎসবে অংশ নেয়। যেমন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি আয়োজন করে জুটি বিতর্ক, মিউজিক অ্যাসোসিয়েশনের দায়িত্বে ছিল গান। ‘আবৃত্তি আবৃত্তি’ সংগঠনের সদস্যরা কবিতা আবৃত্তির আয়োজন করেছিল। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ড্যান্সিং অ্যাসোসিয়েশন পরিবেশন করে নাচ।অভয়ারণ্যর সভাপতি ইশতিয়াক ফেরদৌস বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরেই উদ্যোক্তাদের একটা জায়গা করে দেব। যেন নিজেদের প্রচার–প্রসার করতে পারেন তাঁরা। সেটিই হয়েছে। দ্বিতীয়ত, বিশ্ববিদ্যালয়ের যে শিক্ষার্থীরা মৌলিক গান, কবিতা ও নাচে দক্ষ—তাঁদের সবার সামনে তুলে ধরা। উৎসবে এত মানুষ দেখে মনে হচ্ছে সবকিছু সার্থক হয়েছে।’
বুটেক্সে হিম উৎসব
হিম উৎসবে মোট ১৫টি স্টল ছিল
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) শিক্ষার্থীদের সাহিত্য চর্চার সংগঠন বুটেক্স সাহিত্য সংসদ। সংগঠনটির কর্মকাণ্ড শুধু সাহিত্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধারণ করে সুষ্ঠু মননের বিকাশেও কাজ করে তাঁরা। হিম উৎসব সেই প্রচেষ্টারই অংশ। সিনে-বায়োস্কোপ, পিঠা বিক্রি, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা, শীতবস্ত্র বিতরণ ছাড়াও ছিল নানা আয়োজন। হিম উৎসবে মোট ১৫টি স্টল ছিল। স্টলগুলোয় ছিল বিভিন্ন পদের পিঠা যেমন নকশি, ভাপা, দুধচিতই, পাটিসাপটা। পাশাপাশি খেজুর রসের পায়েস, হাওয়াই মিঠাই, ফুচকা, আচার, ইত্যাদি নিয়েও বসেছিলেন শিক্ষার্থীরা। ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনে ধারাবাহিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে এগিয়েছে উৎসব। বেলা একটায় বুটেক্স সাহিত্য সংসদের ত্রৈমাসিক পত্রিকা চৈতন্য লিপির রবীন্দ্র সংখ্যার মোড়ক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আয়োজন। এরপরই পিঠাপুলির স্টলগুলো খুলতে শুরু করে। একই সঙ্গে টিএসসিতে শুরু হয় সিনে বায়োস্কোপ। সিনে বায়োস্কোপে প্রদর্শনী হয় আলোচিত দুটি চলচ্চিত্র—মৃণাল সেনের ইন্টারভিউ আর তারেক মাসুদের রানওয়ে। বুটেক্স সাহিত্য সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক নিয়াজুর রহমান বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসেই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন করা হয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে।’ সাংস্কৃতিক আয়োজনে নাচ, গান, পুঁথি পাঠ, কবিতা আবৃত্তি, পুতুলনাচ পরিবেশন করেন শিক্ষার্থীরা। রাত নয়টায় তরুণ সংগীতশিল্পী অর্ঘ্য দেবের পরিবেশনা দিয়ে শেষ হয় উৎসব।