যশোরে মানববন্ধন : ‘আমার ভাইকে ওরা তিল তিল করে কষ্ট দিয়ে হত্যা করেছে’

0
89

শামীম হোসেন, কুয়াদা
‘আমার ভাই আমাকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছে। গোটা গ্রামের কেউ আমার ভাইকে নিয়ে একটা বাজে কথা বলতে পারবে না। ও একটা পান- সিগারেটও খেতো না। ওরা আমার ভাইকে তিল তিল করে কষ্ট দিয়ে মেরে ফেলেছে। আমি ওদের ফাঁসি চাই।’ ভাই হত্যার বিচারের দাবিতে গ্রামবাসীর মানববন্ধনে ব্যানার হাতে দাঁড়িয়ে এভাবেই মাইকে কথাগুলো বলছিল মো. ফয়সাল ইসলাম (১১)। শনিবার দিবাগত রাত (রোববার ১১ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে) যশোর সদর উপজেলার সতীঘাটা নামক এলাকায় একটি ওয়ার্কশপে চুরির অপবাদ দিয়ে রাতভর নির্যাতন করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় ইটভাটার শ্রমিক ফয়জুল রহমানকে (২৭)। নিহত ফয়জুল রহমান সতীঘাটা গোলদার পাড়া এলাকার জালাল উদ্দীন গাজীর ছেলে। নিহতের হত্যার প্রতিবাদে এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে যশোর-মনিরামপুর মহাসড়কে মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ মিছিল করে গ্রামবাসী। যদিও পুলিশ এ ঘটনার দিনই জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসে। মহাসড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে রামনগর গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষ অংশ নেয়। এ সময় স্লোগান দিয়ে ফয়জুল হত্যার বিচারের দাবি জানান তারা। মানববন্ধনে ফয়জুল রহমানের বাবা জালাল উদ্দীন গাজী বলেন, ‘আমার ছেলের আয়ে আমাদের সংসার চলতো। আমার ছেলেকে যারা মেরেছে তাদের আমি সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই। এমন শাস্তি হওয়া উচিত যে পরবর্তীতে কোন বাবা মায়ের কোল কেউ খালি করার সাহস না পায়। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই।’ ফয়জুল রহমানের স্ত্রী জেসমিন নাহার বলেন, ‘ঘটনার দিন রাতে আমি ওর জন্য ভাত বাড়ছিলাম। এমন সময় শুনি ফয়জুলকে নাকি চুরির দায়ে ওয়ার্কশপে আটকে রেখেছে। আমি ওই সময়ই ছুটে গিয়ে ওয়ার্কশপ মালিক আব্দুল্লাহ পা জড়িয়ে ধরি, এবং বলি আমার স্বামীকে ছেড়ে দিন। ও যদি কোন অপরাধ করে ওরে পুলিশে দিয়ে দেন, কিন্তু আপনারা ওরে এভাবে মেরেন না। সেদিন সারা রাত আমার স্বামীকে ওরা নির্যাতন করে মেরেই ফেললো। আমার ছোট বাচ্চাটার মুখের দিকেও একবার তাকালো না।’ ফয়জুলের প্রতিবেশী বিল্লাল হোসেন বলেন, আমরা গোটা গ্রামবাসী আজ সড়কে ফয়জুলের হত্যা বিচারের দাবিতে সড়কে নেমেছি। ফয়জুলের সাথে যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি আলোড়ন সৃষ্টি করা একটি হত্যাকান্ড। এই ঘটনার দ্রুত বিচার হওয়া উচিত এবং আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।