খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা কর্মচারীদের একাংশের কর্মবিরতি অব্যাহত

0
20

খুলনা প্রতিনিধি
আড়ংঘাটা থানাধীন তেলিগাতী কুয়েট রোডে অবস্থিত খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গত কয়েক মাস ধরে চলছে অস্থিরতা। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশ অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানাবিধ দুর্নীতি অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, প্রশিক্ষণার্থীদের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার, কর্মচারীদের মারধর, সরকারি মালামাল নষ্ট, প্রশিক্ষণার্থীদের কাঁচামালের অর্থ আত্মসাৎ, অধীনস্থ কর্মচারীদের ভয়-ভীতি, হুমকি প্রদর্শন, দীর্ঘদিন প্রশিক্ষকদের সম্মানী ভাতা প্রদান না করাসহ নানাবিধ অভিযোগে তার অপসারণ দাবি করে আসছে। এ লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানের ৪৭ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ গত বছরের ৭ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালকের কাছে প্রেরণ করেন। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার ১০ দিন পর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) কায়সার মোহাম্মদ ফারাবী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশবলে বিএমইটি ঢাকার পরিচালক (প্রশিক্ষণ মান ও পরিকল্পনা) মো. আকরাম আলী ও উপ-পরিচালক মো. রফিকুল ইসলামের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ৭ কার্য দিবসের মধ্যে সরেজমিনে তদন্ত-পূর্বক সুস্পষ্ট মতামত দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন। তদন্ত কমিটির দুই সদস্য গত ২ জানুয়ারি। প্রতিষ্ঠানটিতে সরেজমিনে এসে পৃথকভাবে অভিযোগকারীদের লিখিত ও মৌখিক সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। তদন্তের পর প্রায় ২ মাস অতিবাহিত হলেও আলোর মুখ দেখেনি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট। এমনই অস্থিরতার ভিতর ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানের ইন্সট্রাক্টর মো. মারুফ আহমেদ অজ্ঞাত মোটরসাইকেল আরোহীর হামলার শিকার হন। এ ঘটনার পরের দিন ২০ ফেব্রুয়ারি আবারও প্রতিষ্ঠানটিতে অস্থিরতা এবং উত্তেজনা দেখা দেয়। হামলার ইন্ধনদাতা হিসেবে হামলার শিকার ইন্সট্রাক্টর মারুফ আহমেদ সরাসরি প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামকে দায়ী করে মিডিয়ার কর্মীদের কাছে অভিযোগ করেন। এছাড়া অধ্যক্ষ বিরোধী শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও সরাসরি এ হামলার পরিকল্পনা এবং ইন্ধনদাতা হিসেবে অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামকে দায়ী করছেন। এছাড়াও মামলার এজাহারেও তাকে হামলার ইন্ধনদাতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এমনই অস্থিরতার ভিতর রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের একাংশ প্রতিষ্ঠানের ইন্সট্রাক্টর মো. মারুফ আহমেদের উপর সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার এবং ষড়যন্ত্রকারী অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামের অপসারণের দাবীতে অনির্দিষ্টকালের কর্ম বিরতি শুরু করে, অব্যাহত রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে অস্থিরতার কারণে বিভিন্ন ট্রেডের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলাম শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের একাংশের শিক্ষক,কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি রিপোর্টে ইনশাল্লাহ আমি অভিযুক্ত হব না। প্রতিষ্ঠানের একজন ইন্সট্রাক্টরের উপর হামলার ইন্ধনদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ঘটনার জন্য আমি ব্যথিত হয়েছি। হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সঠিক তথ্য উদঘাটনের আহ্বান জানাচ্ছি।