শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ড. ইউনূসের জামিনের মেয়াদ বাড়লো

0
8

প্রতিদিনের ডেস্ক:
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের করা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের জামিনের মেয়াদ বাড়িয়েছেন শ্রম আপিলের ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে মামলার পরবর্তী শুনানির জন্যে আগামী ১৬ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত। ওইদিন পর্যন্ত চারজনের জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে বলে জানান আইনজীবীরা। অপর তিনজন হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহান। রোববার (৩ মার্চ) শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এম এ আউয়াল এ আদেশ দেন আদালতে আজ ড. ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ ও এস এম মিজানুর রহমান। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দায়িত্বরত চিফ প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী। এ সময় ড. ইউনূসসহ অন্য তিন বিবাদী গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান আদালতে উপস্থিত ছিলেন।ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের জানান, শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ড. ইউনূসসহ ৪ জনের জামিনের মেয়াদ বাড়িয়েছেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। এর আগে বেলা পৌনে ১১টার দিকে গ্রামীণ টেলিকমের মামলায় জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন নিয়ে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে হাজির হন ড. ইউনূস। এ সময় সঙ্গে ছিলেন এই মামলায় ৬ মাসের কারাদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত অপর আাসামি গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসান এবং পরিচালক নূরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান। এরপর সেখান থেকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে দুদকের আরেক মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইতে চলে যান তারা। গত ২৮ জানুয়ারি শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলার রায় বাতিল চেয়ে আপিল করেন গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ মামলার ৪ আসামি। আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। এই মামলায় পরবর্তী শুনানির জন্য ১৬ এপ্রিল দিন ঠিক করেছেন আদালত। এই মামলায় ১ জানুয়ারি ড. ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সাজাপ্রাপ্ত অপর তিনজন হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহান। রায় ঘোষণার পর উচ্চ আদালতে আপিল করার শর্তে ড. ইউনূসসহ চারজনকে এক মাসের অর্ন্তর্বতীকালীন জামিন দিয়েছিলেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত। ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে শ্রম ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করা হয়। গত বছরের ৬ জুন মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। গত বছরের ২২ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়, যা শেষ হয় ৯ নভেম্বর। গত ২৪ ডিসেম্বর যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়। মামলায় অভিযোগ আনা হয়, শ্রম আইন ২০০৬ ও শ্রম বিধিমালা ২০১৫ অনুযায়ী, গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক বা কর্মচারীদের শিক্ষানবিশকাল পার হলেও তাদের নিয়োগ স্থায়ী করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক বা কর্মচারীদের মজুরিসহ বার্ষিক ছুটি, ছুটি নগদায়ন ও ছুটির বিপরীতে নগদ অর্থ দেওয়া হয়নি। গ্রামীণ টেলিকমে শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি। লভ্যাংশের ৫ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন অনুযায়ী গঠিত তহবিলে জমা দেওয়া হয়নি।