তরমুজ কেন প্রতি কেজি ৮০ টাকা?

0
26

তরমুজ মোটামুটি সবারই পছন্দের একটি রসালো ফল। পবিত্র মাহে রমজানের ইফতার সূচিতে তরমুজ জুস কমবেশি সবাই রাখতে পছন্দ করেন। বর্তমানে দেশের অনিয়ন্ত্রিত বাজার ব্যবস্থায় মোটামুটি সব রকমের ফলের দাম নাগালের বাইরে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তরমুজ কেন কেজি দরে বিক্রি হবে? বছর তিনেক ধরে দেশের বাজারগুলোতে অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রায়ই ফলমূল কেজি দরে বিক্রির অবৈধ প্রথা চালু করে বসেছে। যা খুবই দুঃখজনক। তরমুজের পাশাপাশি কলা ও আনারসও কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ক’দিন পর হয়তো শোনা যাবে- ডাব, কাঁঠালও কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এখন কথা হচ্ছে কৃষক যেসব ফলমূল উৎপাদন করেন, তারা ব্যবসায়ীদের কাছে তা কেজি দরে বিক্রি করছেন কি? উত্তর অবশ্যই নাহ্। তাহলে অসাধু ব্যবসায়ীরা কেজি দরে বিক্রি করার দুঃসাহস পান কোথা থেকে? তরমুজ ব্যবসায়ীরা কিনছেন শ হিসাবে (প্রতি পিস ১০০ টাকা দরে)। যেখানে তরমুজের প্রতি কেজির রোষানলে দেশের সর্বস্তরের ক্রেতারাই পিষ্ট হচ্ছে নিয়ম করে। পবিত্র মাহে রমজান মাসে দেশের ফলমূলের বাজারগুলোতে রোজাদার ক্রেতারা ভিড় জমিয়েছে। এদিকে ধর্মপ্রাণ মানুষের সেই আবেগের সুযোগ লুফে নিচ্ছে দেশের অসাধু ব্যবসায়ী শ্রেণি। তরমুজ প্রতি কেজি ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক দাম ৮০ টাকা প্রতি কেজি, কোনো নড়চড় নেই। এ নিয়ে দেশের বাজারগুলোতে ক্রেতা, বিক্রেতা এবং আড়তদার বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছে। প্রতি কেজি ৮০ টাকা দরে, ১ পিস তরমুজ কিনতে ৬০০-৮০০ টাকা গুনতে হচ্ছে। দেশের ক্রেতা-সাধারণের অভিযোগ সর্বোচ্চ ২০০ টাকা দামের তরমুজ ৮০০ টাকায় বিক্রির কোনো মানে হয় না। যেখানে তরমুজ চাষি প্রতি পিসে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা পাচ্ছেন। অসাধু ব্যবসায়ীরা কেজি দরে বিক্রি করতে পারলে, চাষিরা কেন প্রতি কেজির দাম পাবেন না? বাজারের এমন বেহাল দশায় হতাশ ক্রেতা সাধারণ। অনেক ছোট বেলায় শুনছিলাম, ফেরাউন যে ছিলেন একজন, তিনি পেশায় তরমুজ ব্যবসায়ী ছিলেন। সে নাকি এরকম ওজন দিয়ে তরমুজ বিক্রি করত। বর্তমানে আমাদের দেশের তরমুজ ব্যবসায়ীরাও কিন্তু ফেরাউনের মতো ওজন দিয়ে বিক্রি করছে! তরমুজের কেজি ৮০ টাকা। তাই দেশের ৮০ ভাগ মানুষের ভাগ্যে তরমুজের শরবত মিলবে না, এটা সবাই স্বীকার করি এবং মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। ওই ৮০ ভাগ মানুষেরও তো শরবত খাওয়ার অধিকার আছে। তারা লেবুর শরবত খেতে চান। কিন্তু লেবুর শরবত খেতেও যে দেশের ৮০ ভাগ মানুষের কপাল পুড়ছে। এদিকে লেবুর হালি কিনতে ৬০ থেকে ৮০ টাকা গুনতে হচ্ছে। যা ক’দিন আগেও ছিল হালি ২০ টাকা। অন্যদিকে শসা-খিরা কেজি ১০০ টাকা, পাকা পেঁপে কেজি ২০০ টাকা। আপেল-আঙ্গুর বাদই দিলাম। কিন্তু আমার ইফতারের প্লেট সাজাতে বরই চাই। চাই লেবু শরবত ও খিরা-শসা। পরামর্শদাতা মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে বিনীত আবেদন অন্তত বরই, লেবু ও খিরা-শসা দিয়ে ইফতারের প্লেট সাজানোর সুযোগ করে দিলে এদেশের ৮০ ভাগ মানুষ আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে। সর্বোপরি দেশের বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সরকারি সংস্থাগুলোর যথাযথ নজরদারি নিশ্চিত করা সম্ভব হলে পরে দেশের সাধারণ মানুষ স্বস্তি ফিরবে। দেশের সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রী দেশের নিত্যপণ্যের বাজারগুলোতে স্বস্তি ফেরাতে অচিরেই কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করবেন।