আশাশুনিতে টেকসই নদীরক্ষা বাঁধের দাবিতে দীর্ঘ মানববন্ধন

0
9

জগদীশ সানা, আশাশুনি
আশাশুনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের দয়ারঘাট টু বলাবাড়িয়া গ্রামের একমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং খোলপেটুয়া নদীর টেকসই নদীরক্ষা বাঁধের দাবিতে দীর্ঘ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বলাবাড়িয়া গামী অস্থায়ী সড়কে গ্রামবাসীর আয়োজনে এ দীর্ঘ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠিত দীর্ঘ মানববন্ধনে দক্ষিণ বলাবাড়িয়া, উত্তর বলাবাড়িয়া, হাসখালি গ্রামের সর্বস্তরের সাধারন মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
দীর্ঘ ২৯ বছর বলাবাড়িয়া গ্রামের সাথে আশাশুনি সদরের সাথে স্থায়ী যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় দীর্ঘদিন এই এলাকার মানুষ মৎস্য ঘেরের রিং বেড়ীবাঁধ তাদের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন। এতে করে জরুরী সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য মানবতার জীবন যাপন করছিল এ এলাকার সাধারণ মানুষ। প্রতি বছরে বর্ষা মৌসুমে এ এলাকার মানুষের ভাগ্যে নেমে আসে করুণ দশা। নদীর জোয়ারে দেখা দেয় জলোচ্ছ্বাস। সে কারণে চলতি মৌসুমে জলোচ্ছ্বাস রোধকল্পে ও বলাবাড়িয়া গ্রামবাসীর চলাচলের পথ সৃষ্টি করার লক্ষে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের এনডিআর এর মাধ্যমে মাটির বেড়ীবাঁধ রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরু হয়। অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে আশাশুনি সদরের বলাবাড়িয়া গ্রামের শিক্ষার্থী পূরবী রানী মন্ডল বলেন বর্ষার দিনে কাদামাটি মেখে অতি কষ্টে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয় তাদের। একই গ্রামের গৃহবধূ মিতা মন্ডল বলেন দীর্ঘদিন আমাদের গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা (রাস্তা) না থাকায় সুপীয় খাবার পানি, পণ্য পরিবহন, স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে জরুরী অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত ছিলেন তারা। বলাবাড়িয়া গ্রামের সুভাষ চন্দ্র মন্ডল বলেন আশাশুনি সদর ইউপি চেয়ারম্যান এস এম হোসেনুজ্জামানের সার্বিক ব্যবস্থাপন এনডিআর এর মাধ্যমে বলাবাড়িয়া গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখতে স্থানীয় জমি মালিকদের সাথে কথা বলে রেকর্ডিং এর সম্পত্তির উপর দিয়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। এর ফলে বলাবাড়িয়া গ্রামের সাধারণ মানুষের ভোগান্তি লাঘব হবে। স্থানীয় নিমাই চন্দ্র মন্ডল বলেন, ভালো কাজ করতে গেলেই বাঁধাবিঘ্ন থাকবেই। তাই সকল বাঁধাকে উপেক্ষা করে জনগণের স্বার্থে নদীরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা অতি জরুরী। ইউপি চেয়ারম্যান এস এম হোসেনুজ্জামান বলেন দীর্ঘ ২৯ বছর পর পানি উন্নয়ন বোর্ডের এনডিআর ও জরুরী সেবা খাত থেকে রিং বেড়ীবাঁধের স্থলে মাটির বেড়ীবাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে করে খোলপেটুয়া নদীর জোয়ারের পানি থেকে আশাশুনি সদর ইউনিয়নসহ উপজেলাকে প্লাবিত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা যাবে। একই সাথে বলাবাড়িয়া গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করা সম্ভব হবে। তবে আগামীতে জমি অধিগ্রহণ পূর্বক স্থায়ী ভাবে টেকসই নদীরক্ষা বাঁধের দাবি জানান তিনি। এ ব্যাপারে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুর রহমান বলেন, বর্তমানে যে রিং বাঁধ আছে তা সংস্কারের জন্য রক্ষণাবেক্ষণ খাত থেকে আনুমানিক ২৫ লাখ টাকার একটি বাজেট দেওয়া হয়েছে। সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা নিয়মিত তদারকি করে যাচ্ছে। বাঁধা বিঘ্ন বা কোন অভিযোগ থাকলে তিনি সরেজমিন পরিদর্শন করে সে মোতাবেক ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।