হাসান ইমতিয়াজের পাঁচটি কবিতা

0
5

প্রতিদিনের ডেস্ক:
দুঃখগাছ
আমাদের বাড়িটি একটি নদীর কোলঘেঁষা যেমন কোলঘেঁষা একটি শিশু তার মায়ের
এখন বর্ষাকাল
অবাক ভাঙাচোরা বাড়িটির হাল
তবুও প্রতিদিন বৃষ্টি আসে
জোয়ার আসে—ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে
থরথর কেঁপে ওঠে বাড়িটির শরীর!
মূলত বাবা একটি দুঃখগাছ
আমরা তাঁর ডালপালা
আর মা তাঁর দাঁড়িয়ে থাকার মাটি।
****
যুগল ফাঁসিকাঠ
কম বয়সী রাস্তায় পড়ে আছে শরীর
ডানা ঝাপটাই তবুও উড়তে পারি না!
উঠে বসতে চাই,
দাঁড়াতে চাই
গজাতে চাই শেকড়!
যিশু যেমন শূন্যে উঠে যায়
পাখির রূপ ধরে;
তারপর—
পাতালের শয়তানেরা তাকে
দেখবে বলে মাথা তুলে
ইচ্ছে জাগে তেমনই উঠে যাই!
পড়ে আছি কম বয়সী রাস্তায়
শূন্যে উঠে যেতে চাই
অথবা—গজাতে চাই মুক্তির শেকড়।
****
গোপন শৈলী
ধরো তুমি আপেল কাটছো ছুরি দিয়ে
টুকরো টুকরো আপেল থেকে
রক্তের ফোয়ারা নামছে;
তুমি কী ভাববে?
তোমার আঙুল কেটে রক্ত বেরোচ্ছে?
না;
আপেলের ভেতর আমার নরম কোমল
হৃদয়টা বিছিয়ে দিয়েছিলাম,
যা তুমি ছুরির আঘাতে টুকরো টুকরো
করে রক্তাক্ত করেছো।
****
ডাকঘরের গল্পটা
তোমার চোখের জলছাপ
ডাকটিকিট হয়ে ফিরে এলো
আমার ঠিকানায়।
আমি পৌষের দিনের মতোই
নিজেকে শুকাতে ব্যস্ত ভীষণ!
আমার হাতে গড়ান খাচ্ছে
আগামীর সূর্য!
বুকপকেটে টুঙ্গিপাড়ার মাটি!
রুপোর জল সেঁকে ভরে নিচ্ছি
জ্বলজ্বলে রোদ্দুর!
এই ডাকঘরের গল্পটা
কলাপাতার নূপুরের মতোই
আমাকে কাছে টানছে—
যেমন টেনেছিল আমার কলা বউ!
****
সিগারেট
সিগারেটের আগুন কি জীবন পোড়াতে পারে?
এটা ভাবতে ভাবতে আজকে সন্ধ্যাবেলা
আস্ত এক প্যাক সিগারেট পুড়িয়ে হাওয়ার মতো ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিলাম আকাশে!
এই যে মানুষ এত এত সিগারেট পোড়ায় সারাদিন খেয়ে না খেয়ে ঘরে বাইরে রাস্তায় কেউ কি কখনো ভাবে—কে কার দুঃখ পোড়াচ্ছে?
মূলত
সিগারেট আপাদমস্তক এক ব্যর্থ পুরুষ, যে কেবল পুড়েই যায় জন্মাবধি…